স্টাফ রিপোর্টার ॥ আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি গানের সুরস্রষ্টা শহীদ আলতাফ মাহমুদের অন্তর্ধান দিবস ছিল বুধবার। দিনটিতে শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় স্মরণ করা হলো দেশের স্বাধীনতার এই সূর্য সৈনিককে। আর তার নামাঙ্কিত সম্মাননায় ভূষিত করা হয় নাট্যজন আলী যাকের ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মফিদুল হককে। দুই গুণীজনকে প্রদান করা হয় শহীদ আলতাফ মাহমুদ পদক ২০১৭। পুরস্কার হিসেবে উভয় গুণীকে উত্তরীয় পরিয়ে দেয়ার পাশাপাশি প্রদান করা হয় পদক ও দশ হাজার টাকা মূল্যমানের আর্থিক সম্মাননা।
শরত সন্ধ্যায় জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শহীদ আলতাফ মাহমুদ ফাউন্ডেশন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। উপস্থিত ছিলেন আলতাফ মাহমুদের সহধর্মিণী সারা আরা মাহমুদ, মেয়ে শাওন মাহমুদ, অভিনয়শিল্পী শিমুল ইউসুফ, নাট্যজন নাসির উদ্দীন ইউসুফ প্রমুখ।
অনুভূতি প্রকাশ করে আলী যাকের বলেন, আমি একুশে পদক পেয়েছি ১৯৯৯ সালে। কিন্তু একুশ যার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত সেই আলতাফ মাহমুদের নামাঙ্কিত এ পুরস্কার না পাওয়ার অতৃপ্তি ছিল। আজ এ পুরস্কার পাওয়ায় আমি পরিপূর্ণ হলাম। আমি আলতাফ মাহমুদ থেকে অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত। যতদিন বেঁচে আছি, তার দেখানো পথেই পথ চলবো।
মফিদুল হক বলেন, আমি নেপথ্যকর্মী হিসেবে জীবনকে দেখেছি, চলার চেষ্টা করেছি। জীবন নানা সম্পদে আমাকে সমৃদ্ধ করেছে। আজকের এ পুরস্কারপ্রাপ্তির যোগ্যতা আমার নেই। নেপথ্যচারী জীবনে এ অর্জন আমার কাছে অনেক বড় প্রাপ্তি।
আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মদানে অর্জিত এ দেশ। তবে এটাকে শুধু পরিসংখ্যানের হিসেবে বিশ্লেষণ করলে হবে না। কারণ এর পেছনে কত আত্মত্যাগ রয়েছে তা অজানা থেকে যায়। তেমনই এক আত্মত্যাগী মানুষ ছিলেন আলতাফ মাহমুদ। পুরস্কার প্রদান শেষে সাংবাদিক আবদুল গাফ্্ফার চৌধুরীর ওপর নাসির উদ্দীন ইউসুফ নির্মিত প্রামাণ্যচিত্রের অংশবিশেষ দেখানো হয়। এরপর কবিতাপাঠ করেন কৃষ্ণেন্দু। সঙ্গীত পরিবেশন করেন জয়িতা। মনিকা পাঠ করেন বাবাকে নিয়ে শাওন মাহমুদের একটি লেখার অংশবিশেষ। ২০০৫ সাল থেকে প্রতিবছর আলতাফ মাহমুদের অন্তর্ধান প্রতবিছর আলতাফ মাহমুদরে অর্ন্তধান দিবস ৩০ আগস্টে নিয়মিত এই পদক প্রদানে আয়োজন করে আসছে আলতাফ মাহমুদ ফাউন্ডেশন। এ পর্যন্ত দেশের ১৭ গুণীজনকে পদক প্রদানের মাধ্যমে সম্মাননা জানিয়েছে শহীদ আলতাফ মাহমুদের পরিবারের সদস্য এবং ক্র্যাক প্লাটুনের গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে পরিচালিত এই ফাউন্ডেশন।
আলিয়ঁসে দুই শিল্পীর চিত্রকর্ম প্রদর্শনীর সমাপ্তি
চিত্র প্রদর্শনীটির পুরোটাই যেন এক অভিযাত্রা। সেই অভিযাত্রার ছবিগুলো এঁকেছেন দুই তরুণ শিল্পী সৈয়দ ফিদা হোসেন ও সুলতান ইশতিয়াক। ক্যানভাসে মেলে ধরেছেন নাগরিক জীবনের স্বপ্ন, স্মৃতি, চৈতন্য ও অনুভব। এমন ভাবনাতাড়িত ২৩টি চিত্রকর্মে সজ্জিত প্রদর্শনীটির শিরোনাম ‘অবসেশন’। ধানম-ির আলিয়ঁস ফ্রঁসেস দ্য ঢাকার লা গ্যালারিতে চলমান দুই সপ্তাহব্যাপী এ প্রদর্শনীর শেষ দিন ছিল বুধবার।
ফিদা হোসেন তার চিত্রকর্মে পোট্রেট সিরিজের মাধ্যমে বিষয়বস্তুর নাজুক ভঙ্গুরতাকে শৈল্পিক বাস্তবতায় তুলে ধরেছেন। এই প্রদর্শনীর জন্য ফিদা হোসেন এগিয়েছেন স্বতন্ত্র ধারার অঙ্কনে। সে ধারায় বিষয়বস্তুর তিমিরাবৃত মননের পাশাপাশি উঠে এসছে চতুর্পাশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ। অন্যদিকে ইশতিয়াকের ক্যানভাসের বৈশিষ্ট্য তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনিন্দ্য বৈভব। তার শিল্পের অভিমুখ বিবর্তিত হয়েছে সেই প্রকৃতিতে বাস করা ব্যক্তির অবধারিত উপস্থিতির মধ্য দিয়ে, তাদের স্বপ্ন তাদের জীবনযুদ্ধ তুলে আনার মাধ্যমে। সেই সুবাদে চিত্রিত হয়েছে জাহাজঘাটার কর্মজীবীদের প্রতি তার অনুভূতি। যেসব শ্রমজীবীরে কাজ করতে হয় সার্বক্ষণিক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, অপরিযতেœ এবং বিপজ্জনক অবহেলায়।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: