ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মন্ত্রণালয় থকেে আইন শৃঙ্খলা বাহনিীকে সর্তক থাকার নর্দিশে

কোরবানরি ঈদে জঙ্গী হামলার আশঙ্কায় নজরদারি বৃদ্ধি

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ৩১ আগস্ট ২০১৭

কোরবানরি ঈদে জঙ্গী হামলার আশঙ্কায় নজরদারি বৃদ্ধি

শংকর কুমার দে ॥ পবত্রি ঈদ-উল আযহার সময়ে আত্মঘাতী জঙ্গী হামলার আশঙ্কায় গোয়ন্দো নজরদারি ও সর্তক অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহনিী। মাত্র ১২ দনিরে ব্যবধানে রাজধানীর পান্থপথে ও ময়মনসংহিরে ভালুকায় দুটি জঙ্গীবরিোধী অভযিানরে ঘটনাকে জঙ্গীগোষ্ঠীর আত্মঘাতী হামলার প্রস্তুতরি ইঙ্গতি বলে মনে করছনে গোয়ন্দো সংস্থা। হযিরত করার উদ্দশ্যেে বাড়ি থকেে নখিােঁজ অধরা জঙ্গীরাই আত্মঘাতী হামলা করতে পারে বলে গোয়ন্দো সংস্থার র্কমর্কতাদরে দাব। গোয়ন্দো র্কমর্কতারা মনে করনে, জঙ্গীরা কোন রমজান, ঈদ বা র্ধমীয় গুরুত্বর্পূণ দনিগুলোকে মানে না বলইে গত বছর রমজান মাসে গুলশানরে হলি র্আটজিানে ও ঈদরে নামাজরে দনি কশিোরগঞ্জরে শোলাকয়িার ঈদগাহ মাঠে হামলা করছে। জঙ্গী গোষ্ঠী বশিষে করে নব্য জএেমবরি এ ধরনরে জঙ্গী তৎপরতা কঠোর হস্তে মোকাবলো করার জন্য জঙ্গীবরিোধী অভযিান অব্যাহত রাখতে গোয়ন্দো নজরদাররি পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহনিীকে সর্তক থাকার নর্দিশে দয়ো হয়ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ আগস্ট শোক দবিসে জঙ্গী হামলার প্রস্তুতি নচ্ছিে এমন গোপন খবররে ভত্তিতিে আগরে দনি ১৪ আগস্ট রাজধানীর পান্থপথে হোটলে ওলওি ইন্টারন্যাশনালে অভযিান পরচিালনা করনে আইনশৃঙ্খলা বাহনিী। জঙ্গীবরিোধী অভযিানরে সময়ে নব্য জেএমবির সাইফুল ইসলাম আত্মঘাতী হয়ে নিজেকে উড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি হোটেলের কক্ষ ও দেয়ালও উড়িয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনার মাত্র ১২ দিনের ব্যবধানে ঢাকার অদূরে ময়মনসিংহের ভালুকায় নালম প্রামানিক নামে নব্য জেএমবির এক জঙ্গী গ্রেনেড-বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্মঘাতী হয়ে নিহত হন। এই জঙ্গী আস্তানা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময়ে আত্মঘাতী হয়ে নিহত হওয়া জঙ্গীর স্ত্রী, সন্তানকে গ্রেফতার ও জঙ্গী আস্তানা থেকে গ্রেনেড-বোমা উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও রমজান মাসে বা ঈদের নামাজের দিনও জঙ্গীরা আত্মঘাতী হামলার ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটাতে পারে সেজন্যও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি বার্তা পাঠানো হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, নব্য জেএমবির মতো ভয়ঙ্কর জঙ্গী সংগঠনটি কোণঠাসা হয়ে পড়ার পর নতুন করে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। ময়মনসিংহের ভালুকায় আলম ওরফে আব্দুল্লাহ আগে ক্যারিয়ার বা বাহক হিসেবে কাজ করত বলে তাদের কাছে তথ্য ছিল। কিন্তু গত কয়েক মাসে সে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়েছে। তার বোমা তৈরির উদ্দেশ্য নতুন করে হামলার প্রস্তুতি ছিল বলে মনে করছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। পান্থপথে জঙ্গী সাইফুল কিংবা ভালুকায় আবদুল্লাহ আত্মঘাতী হয়ে নিহত হলেও তাদের সহযোগী আত্মঘাতীরা এখনও অধরা। জঙ্গীর সংখ্যাও একেবারে নগন্য নয়, যার কোন সঠিক পরিসংখ্যানও নেই। এছাড়া নব্য জেএমবি কোণঠাসা হলেও একেবারে নিঃশেষ হয়ে যায়নি। তাদের মুহাজির বা সরাসরি হিজরতকারীর সংখ্যা কমে গেলেও মুনাসিরের (র‌্যাডিকেল) সংখ্যা অনেক। যাদের ডাক দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কথিত হিজরতের নামে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসবে। বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমেই তাদের নানা রকম শারীরিক প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এমনকি মুনাসিরদের অনলাইনে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণও দেয়া হচ্ছে বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের দাবি। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের এক কর্মকর্তা জানান, নব্য জেএমবির শীর্ষ দুই নেতা মাইনুল ইসলাম মুসা ও হাতকাটা মাহফুজ ওরফে সোহেল মাহফুজের হাত ধরে জঙ্গীবাদে জড়িয়েছিল ভালুকায় নিহত জঙ্গী আলম প্রামাণিক। তার সাংগঠনিক নাম ছিল আব্দুল্লাহ ড্রাইভার। আগে বাহক হিসেবে কাজ করলেও ধীরে ধীরে সে বোমা তৈরির কারিগর হয়ে ওঠে। ভালুকার বাসায় বোমা তৈরি করতে গিয়েই বিস্ফোরণে নিহত হয় সে। ওই রাতেই বাসা থেকে পালিয়ে যাওয়া তার স্ত্রী পারভীন ও দুই শিশু সন্তানকে আটক করেছে পুলিশ। গ্রেফতার হওয়া জঙ্গীদের দেয়া তথ্যানুযায়ী, আলম ওরফে আব্দুল্লাহর বিষয়ে তথ্য পায় তদন্তকারীরা। আবদুল্লাহকে ধরতে অভিযানের প্রস্তুতি নেয়ার সময়েই বোমায় আত্মঘাতী হয় সে। তার সঙ্গে সহযোগী আর কেউ ছিল কিনা সে বিষয়ে আমরা খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। তদন্তকারীরা জানান, গ্রেফতারকৃত জঙ্গীদের দেয়া তথ্যানুযায়ী জঙ্গীবাদে জড়িয়ে গত বছরের নবেম্বরে কথিত হিজরতের নামে ঘর ছাড়ে এই আলম প্রামাণিক। তবে প্রথম দিকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেও চলতি বছরের জানুয়ারিতে সে মোবাইল নম্বর বন্ধ করে দিয়ে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। হিজরতের সময় সঙ্গে নেয় স্ত্রী-সন্তানদের। হিজরতের পরে প্রথমে কুষ্টিয়া গিয়ে একটি বাসায় অস্তাানা গাড়ে। এর আগেও সে ঢাকায় ছিল। ঢাকায় থাকা অবস্থায় সে গাড়ির চালক ও গাড়িচালকের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে। কিছুদিন পিকআপ ভ্যানও চালিয়েছে। পরবর্তীতে সাভারে একটি লেদ মেশিনেও কাজ করে সে। মাস কয়েক আগে তারা কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় একটি বাসায় অভিযান চালিয়েছিল সিটিটিসির একটি দল। ওই বাসায় এই আলম ওরফে আব্দুল্লাহ ছিল। কিন্তু অভিযানের আগের দিনই স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে ওই বাসা ছেড়ে চলে যায় সে। এরপর থেকেই তাকে খোঁজা হচ্ছিল। ওই সময়ই আলম ওরফে আব্দুল্লাহ কুষ্টিয়া থেকে ভালুকায় চলে আসে বলে তদন্তকারীদের দাবি। ইলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একজন কর্মকর্তা বলেন, রাজধানীর পান্থপথে হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালে জঙ্গী সাইফুল ইসলামের সঙ্গে আরও কয়েক সহযোগী ছিল। ঘটনাস্থলের আশপাশে এদের অবস্থান ছিল। প্রাথমিকভাবে জঙ্গী সাইফুলের সহযোগীদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে। তার সহযোগীদের ধরতে গোয়েন্দারা কাজ করছেন। সাইফুল নব্য জেএমবির সদস্য ছিলেন। সাইফুল মাত্র কিছুদিন আগেই জেএমবিতে যোগ দিয়েছিল। তাকে ইত্তেহাদী হামলার জন্য নিয়োজিত করা হয়েছিল। নিহত সাইফুলের সঙ্গে সহযোগী ছাড়াও অন্তত ৪৫ জনের নাম পাওয়া গেছে, যারা বোমা তৈরিতে দক্ষ এবং দীর্ঘদিন ধরে পলাতক। পলাতক বোমা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অন্যতম হলো হাদীসুর রহমান সাগর। সাগর হচ্ছে, গুলশান হামলার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড। এছাড়াও সাগর পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত নূরুল ইসলাম মারজান ও সম্প্রতি গ্রেফতার আরেক মাস্টারমাইন্ড হাত কাটা সোহেল মাহফুজের আত্মীয়। সাগর কয়েক বছর ধরে পলাতক থেকে নব্য জেএমবির কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত। তবে শোক দিবসের আত্মঘাতী জঙ্গী হামলার ছঁক কষার সঙ্গে ভালুকায় নিহত জঙ্গী আবদুল্লাহর কোন যোগাযোগ আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
×