ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে বিশ্বব্যাংক দিচ্ছে ৪৪০ কোটি টাকা

সরকারী কেনাকাটায় ই-জিপি সিস্টেম

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ৩০ আগস্ট ২০১৭

সরকারী কেনাকাটায় ই-জিপি সিস্টেম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকারী কেনাকাটার ডিজিটাল ই-জিপি সিস্টেমকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ৫ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশী মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৪৪০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮০ টাকা হিসেবে)। ‘ডিজিটাইজিং ইমপ্লিমেন্টেশন মনিটরিং এ্যান্ড পাবলিক প্রকিউরমেন্ট প্রজেক্ট’ শীর্ষক প্রকল্পে এ অর্থ ব্যয় করা হবে। এ লক্ষ্যে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সরকার এবং বিশ্বব্যাংকের মধ্যে একটি ঋণচুক্তি সই হয়েছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের ইআরডি সম্মেলন কক্ষে এক অনুষ্ঠানে সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব কাজী শফিকুল আযম এবং বিশ্বব্যাংকের পক্ষে সংস্থাটির বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান চুক্তিতে সই করেন। এ সময় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটের (সিপিটিইউ) মহাপরিচালক মোঃ ফারুক হোসেনসহ ইআরডি এবং বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সরকারী ক্রয় কার্যক্রম দ্রুততর হবে। পাশাপাশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ নির্মাণে আরও একধাপ অগ্রগতি সাধিত হবে। জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় ই-জিপি প্রবর্তনকারী সংস্থা সিপিটিইউকে পুনর্গঠন করে এ কার্যক্রমের কর্তৃপক্ষ (অথরিটি) করা হবে। এর মাধ্যমে ই-জিপি সিস্টেম প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাবে। সরকারী ক্রয় কার্যক্রমকে ডিজিটালাইজড করার মাধ্যমে দেশের সকল সরকারী প্রতিষ্ঠানকে ই-জিপি সিস্টেমের আওতায় আনা হবে। এছাড়া প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্রয় ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট দরদাতাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীভুক্ত (এডিপি) প্রকল্পগুলোকে ডিজিটাল ও আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তদারক করার লক্ষ্যে বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগকে (আইএমইডি) শক্তিশালী করা হবে। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ৬ কোটি ডলার (৪৮০ কোটি টাকা)। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের পাশাপাশি এর মধ্যে সরকারী তহবিল থেকে দেয়া হবে ৪০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি জুলাই ২০১৭ হতে জুন ২০২২ মেয়াদে বাস্তবায়িত হওয়ার কথা রয়েছে। জানা গেছে, ঋণের শর্ত হিসেবে বিশ্বব্যাংককে উত্তোলিত অর্থের ওপর বার্ষিক শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ দিতে হবে। ঋণের অর্থ পরিশোধে ৬ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩৮ বছর সময় পাওয়া যাবে। অনুষ্ঠানে চিমিয়াও ফান বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর এডিপির আওতায় ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রকিউরমেন্টের ক্ষেত্রে ব্যয় করা হয়। প্রক্রিয়াগত ত্রুটির কারণে এতে প্রচুর অর্থের অপচয় হয়। যদি ১ শতাংশ অর্থের অপচয়ও রোধ করা যায়, সেটির পরিমাণ হবে ১০০ মিলিয়ন ডলার। যা দিয়ে দুই হাজার প্রাইমারী স্কুল কিংবা এক হাজার কিলোমিটার পল্লী সড়ক নির্মাণ করা সম্ভব। তিনি বলেন, সম্প্রতি বছরগুলোতে সরকারী ক্রয় ব্যবস্থাপনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। বর্তমান সরকারও যে ক্রয় কার্যক্রমে সঙ্গে যুক্ত সব প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটালাইজড করতে আগ্রহী, এ প্রকল্প সেটির প্রমাণ। কাজী শফিকুল আজম বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়া বর্তমান সরকারের অন্যতম অঙ্গীকার। প্রকল্পটি সেই অঙ্গীকার পূরণে আরও একধাপ এগিয়ে নেবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ক্রয় কার্যক্রম গতিশীল হবে, নিশ্চিত হবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা এবং অন্য প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়নেও সহায়ক হবে। অনুষ্ঠানে মোঃ ফারুক হোসেন জানান, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট ব্যবস্থায় সংস্কার শুরু হয় ২০০২ সালে। ক্রয় কার্যক্রমে যুক্ত ৮০ শতাংশেরও বেশি সরকারী প্রতিষ্ঠান ই-জিপির আওতায় এসেছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ই-জিপি কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত হবে। ফলে অবশিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোও অচিরেই ই-জিপির আওতায় আসবে
×