ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

তবু হাল ছাড়ছে না টাইগাররা

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৩০ আগস্ট ২০১৭

তবু হাল ছাড়ছে না টাইগাররা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জিততে পারে যে কোন দলই। তবে তৃতীয়দিন শেষে মিরপুর টেস্টে পাল্লা ভারি হয়ে গেছে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার। জয়ের অনেকখানি কাছে চলে এসেছে তারা। এমনটাই দাবি করেছেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার প্যাট্রিক কামিন্স। তবে সেজন্য চতুর্থদিন সকালে ব্যাটসম্যানদের ধৈর্য রেখে নিজেদের পরিকল্পনা কাজে লাগানোর জন্য লেগে থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। কিছুটা ব্যাকফুটে এখন স্বাগতিক বাংলাদেশ। কিন্তু ধৈর্যই এখন মূল চাবিকাঠি। উভয় ইনিংসে অর্ধশতক হাঁকানো বাংলাদেশী ওপেনার তামিম ইকবাল জানালেন দ্রুত দুয়েকটি উইকেট নিতে পারলেই জয়ের সুযোগ বেড়ে যাবে বাংলাদেশের। তৃতীয় দিনশেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন কামিন্স ও তামিম। চতুর্থদিনে অনেককিছুই হয়তো অপেক্ষা করছে মিরপুরে। এখন পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না কোন দল জয় পাবে। কারণ মিরপুরের উইকেট পুরোপুরিই অনুমান অযোগ্য। তৃতীয়দিনের শেষভাগে ব্যাটসম্যানদের জন্য দারুণ উপযোগী হয়ে উঠেছিল উইকেট। অথচ দিনের মাঝামাঝি দীর্ঘ সময় স্পিনারদের কাছে নাজেহাল হয়েছেন ব্যাটসম্যানরা। গত অক্টোবরেও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ২৭৩ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ইংলিশরা বিনা উইকেটে তুলে ফেলেছিল ১০০ রান। কিন্তু এরপর স্পিন আক্রমণের সামনে মাত্র ১৬৪ রানেই গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। সেই ইতিহাস মাথায় রেখেই হাল ছাড়ছে না বাংলাদেশ। এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘প্রায় ইংল্যান্ডের ম্যাচটার মতোই পরিস্থিতি। কাল আমাদের যে জিনিসটা করতে হবে, কিছুক্ষণ আগে বললাম, উইকেটটা একেবারেই অনুমান অযোগ্য। ভাল জায়গায় বোলিং করে যেতে হবে। উইকেটের জন্য নয়। ডট বলের জন্য বল করতে পারলে ওরা চাপে পড়বে। চাপ দিতে থাকলে উইকেট আসবে। উইকেটটাই এমন। যে দু’জন আছে তাদের একজন আউট হয়ে গেলে কি হবে আপনিও জানেন না। এ রকম অনেক ম্যাচ দেখেছি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিও।’ কিন্তু ক্রিকেট ইতিহাস মেনে চলে না। যেদিন যে দলটি ভাল নৈপুণ্য দেখাতে পারে তারাই বিজয়ী হয়ে মাঠ ছাড়ে। আর মাত্র ১৫৬ রান প্রয়োজন অস্ট্রেলিয়ার। বাংলাদেশকে নিতে হবে ৮ উইকেট। দলের লক্ষ্য নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ৮ উইকেট নেয়া। ইতিহাস দেখে চিন্তা করলে চলবে না। কাজটা করতে হবে আমাদের। যে দু’জন উইকেটে আছে তারা ওদের সেরা ব্যাটসম্যান। যতো দ্রুত ওদের আউট করতে পারব ততো সুযোগ থাকবে আমাদের।’ কিন্তু অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ আর ডেভিড ওয়ার্নারের শেষ বিকেলে চমৎকার ব্যাটিংটাই এখন আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে অস্ট্রেলিয়াকে। জয়ের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে তারা এমনটাই মনে করছে। এ বিষয়ে কামিন্স বলেন, ‘শেষ একটা ঘণ্টা বা তারচেয়ে কিছুটা বেশি সময় আমাদের বিশ্বাস জুগিয়েছে। আমি নিশ্চিতভাবে অবশ্যই খুব আত্মবিশ্বাসী। স্মিথ ও ডেভকে দেখে মনে হচ্ছে তাদের দারুণ একটা গেম পরিকল্পনা আছে। আর তারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণেও রেখেছেন। সুতরাং এটা খুবই প্রতিশ্রুতিময় এবং মাত্র ১৫০ রান কিংবা তার সামান্য বেশি করতে হবে। তাই দুয়েক ঘণ্টাকাল (আজ) সকালে ভাল কাটাতে পারলেই আমরা বেশ কাছাকাছি চলে যাব।’ নিজেদের অবস্থান এখন অনেকটাই নড়বড়ে হয়ে গেছে সেটা পরিষ্কারভাবেই বুঝতে পারছেন তামিম। কিন্তু বাঁহাতি এ ওপেনার মনে করেন শুরুতেই দুয়েকটা উইকেট খেলার পরিস্থিতি নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসতে পারে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া আজ ভাল ব্যাটিং করেছে। আমরা দুইটা উইকেট নেয়ার পর আরও ভাল বোলিং করতে পারতাম, আরও আঁটসাঁট বোলিং করতে পারতাম। আসলে এখানকার উইকেট খুবই দুর্বোধ্য। যে কোন কিছু ঘটতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার সেরা দুই ব্যাটসম্যান কাল (আজ) খেলতে নামবে। আমরা যদি দ্রুত তাদের আউট করতে পারি ১৫০ রান খুব কম নয়। একজনকেও যদি দ্রুত তুলে নিতে পারি তাহলে আমাদের জন্যও ম্যাচের দ্বার উন্মুক্ত হয়ে যাবে। কারণ এ উইকেটে এমনটাই দেখা গেছে যে একটা উইকেট পড়ে যাওয়ার পরপরই আরও দুয়েকটার পতন ঘটে।’ বাংলাদেশ যেমনটাই ভাবুক। এই পর্যায়ে নিশ্চিতভাবে মিরপুর টেস্টে নিয়ন্ত্রকের আসনে আছে অস্ট্রেলিয়া। ওয়ার্নার-স্মিথের জুটি ইতোমধ্যেই জমে উঠেছে। নিজেদের অবস্থান নিয়ে কামিন্স বলেন, ‘আমার মনে হয় এই মুহূর্তে আমরা দারুণ অবস্থানে আছি। মনে হচ্ছে প্রথমদিনের চেয়ে পিচটা একটু সহজ হয়েছে। আমার মনে হয় লক্ষ্যটা ২৬০-এর মধ্যে থাকায় আমরা খেলায় ভালভাবেই আছি। আজ যেভাবে খেলেছি সেভাবেই আমরা আগামীকাল (আজ) খেলতে পারলে আমাদের পক্ষে আসবে ম্যাচ।’ আর এ জায়গাটাতেই কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ দল। তামিমের কণ্ঠেও সেটা ফুটে উঠলো, ‘একটা দিন আগে হলেও ২৬০ রানে আমরা খুশি থাকতাম। কিন্তু আজকে আমাদের কাছে সুযোগ ছিল লিড বাড়িয়ে ৩০০’র বেশি করার। ওই দিক থেকে কিছুটা হতাশ। ৩০০ হলে সুবিধা হতো।’ নিজের শতক হাতছাড়া হওয়া নিয়েও কিছুটা হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি, ‘আসলে যেমন খেলছিলাম এবং যে কঠোর পরিশ্রম করেছি আমার সেঞ্চুরি পাওনার ছিল। সেটা করতে পারলে হয়তো আমাদের রানটা আরও বেশিই হতো। তবে যে দুই বলে আউট হয়েছি সেটা আমার নিয়ন্ত্রণে ছিল না।’
×