ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় উত্তাপ

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ৩০ আগস্ট ২০১৭

দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় উত্তাপ

অস্ট্রেলিয়ায় দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে জোর বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। দ্বৈত নাগরিকত্বের অধিকারী ব্যক্তিরা পার্লামেন্টের সদস্য হওয়ার যোগ্যতা রাখেন কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে। দেশটির পরিবেশবাদী দল অস্ট্রেলিয়ান প্রীনস এর দুজন সিনেটর তাদের দ্বৈত নাগরিকত্বের দ্বারা সংবিধান লঙ্ঘিত হয়েছে জানার পর গত জুলাই মাস, পার্লামেন্ট সদস্যপদে ইস্তফা দেন। তার আগে প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নকুল তাদের অবিশ্বাস্য নোংড়ামির নিন্দা করেছিলেন। কিন্তু গত ১৪ আগস্ট উপপ্রধানমন্ত্রী বার্নাবি জয়েস জানান যে তিনিও অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড এই দুই দেশের নাগরিক। তাঁর এই স্বীকারোক্তি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিরল কূটনৈতিক বিত-ার সূত্রপাত ঘটেছে। শুধু তাই নয়, টার্নবুলের সরকারের অস্তিত্ব নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে। কারণ এই সরকার একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন নিয়ে ক্ষমতায় টিকে আছে। অস্ট্রেলিয়ার সংবিধানে আছে যে বিদেশী রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করেছে কিংবা বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব আছে অথবা বিদেশী রাষ্ট্রের প্রজা বা নাগরিক হিসেবে অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে এমন ব্যক্তি ফেডারেল পার্লামেন্টের সদস্য হতে পারবে না। কিন্তু সে দেখে অভিবাসী সংখ্যা অনেক বেশি সেখানে এসব বিধান নিয়ে অপ্রত্যাশিত রাজনৈতিক বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। গত জুলাইয়ের মাঝামাঝি অস্ট্রেলিয়ান গ্রীনস এর স্কট লুডলাম নিউজিল্যান্ডের নাগরিকত্ব এবং লাবিসা ওয়ান্টার্স কানাডার নাগরিকত্ব থাকার কারণে উচ্চ পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন। প্রথম জন ৩ বছর বয়সে ও দ্বিতীয় জন শিশু বয়সে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন। তারা জানতেন না ওইসব দেশের নাগরিকত্ব এখনও তাদের আছে। সাবেক সম্পদমন্ত্রী ম্যাট কানাভ্যানের অবস্থাটা আরও গোলমেলে। গত ২৫ জুলাই তিনি এই মর্মে ঘোষণা দেন যে তিনি একই সঙ্গে ইতালি ও অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। এই ঘোষণার প্রেক্ষিতে সরকার বেশ খানিকটা হোঁচট খায়। কানাভ্যান জানান যে দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে বিতর্ক ওঠার পরই কেবল তিনি নিজের অবস্থাটা জানতে পারেন। তিনি মন্ত্রী পদ ছেড়েছেন তবে সিনেটের আসন নয়। কোয়ালিশন সরকারের জুনিয়র শরিক বারনাবি জয়েস তাঁর দফতরের দায়িত্ব নেন। তিন সপ্তাহ পর তিনি পার্লামেন্টে বলেন যে, তিনি একথা জেনে মর্মাহত যে তারও দ্বৈত নাগরিকত্ব আছে। অস্ট্রেলিয়ার রাজনীতি ইতোমধ্যে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে এবং তাতে দ্বৈত নাগরিকত্বের বিষয়টি ইন্ধন হিসেবে কাজ করেছে। জয়েসের স্বীকারোক্তির আগে লেবার পার্টির এক সিনেটরের স্টাফ সদস্য নিউজিল্যান্ডের লেবার পার্টির এক এমপিকে সে দেশের নাগরিকত্ব আইন নিয়ে জিজ্ঞেস করায় ব্যাপারটা এক আন্তর্জাতিক ঘটনার রূপ নেয়। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলি বিশ্বপ নিউজিল্যান্ডের বিরোধী লেবার পার্টির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে তারা অস্ট্রেলিয়ার সরকারকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে নানা অভিযোগ তুলছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রী টার্নবুল অভিযোগ করেন যে অস্ট্রেলিয়ার বিরোধী দল একটি বিদেশী শক্তির সঙ্গে ষড়যন্ত্র করছে। দ্বৈত নাগরিকত্বের বিষয়টি এখন হাইকোর্টের বিবেচনাধীন আছে। হাইকোর্টের রায়ের ওপর টার্নবুল সরকারের টিকে থাকা না থাকা বহুলাংশে নির্ভর করছে। চলমান ডেস্ক সূত্র : দি ইকোনমিস্ট
×