ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দু’পক্ষই পর্যায়ক্রমে সৈন্য সরিয়ে নেবে

চীন-ভারত সমঝোতা ॥ সীমান্তে অচলাবস্থার অবসান

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২৯ আগস্ট ২০১৭

চীন-ভারত সমঝোতা ॥ সীমান্তে অচলাবস্থার অবসান

ভারত ও চীন শেষ পর্যন্ত সীমান্তে উত্তেজনা নিরসনে রাজি হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার জানিয়েছে কূটনৈতিক আলোচনার মধ্য দিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। দু’মাসের বেশি সময় ধরে চলা অচলাবস্থা নিরসনের লক্ষ্যে দু’পক্ষই পর্যায়ক্রমে সৈন্য সরিয়ে নেবে। এএফপি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া। অচলাবস্থা নিরসনের জন্য দু’পক্ষই সপ্তাহখানেক ধরে নেপথ্যে কূটনৈতিক আলোচনা চালিয়েছে। এরপর ভারত সেখান থেকে সৈন্য ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে। চীনের দাবি, ভারত এরই মধ্যে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে তবে চীনা সৈন্যরা সেখানে টহলের জন্য থাকবে। দুই দেশই এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছে বলে ভারত দাবি করেছে। সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে দুই পক্ষ থেকে আলাদা আলাদা দাবি করা হলেও পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হওয়ার স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে সিকিম সীমান্তের দোকলাম মালভূমিতে ত্রিদেশীয় জংশনের কাছে চীনের সৈন্যদের সড়ক নির্মাণ কাজে বাধা দেয় ভারতীয় সেনারা। এরপর থেকেই মুখোমুখি হয় দুই দেশ। তখন থেকেই কোন পক্ষ পিছু হটার কোন আলামত দেখায়নি। চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দোকলাম মালভূমি (যেটিকে তারা দোংলাং বলে) তাদের ভূখ-ের অংশ। সেখানে সড়ক নির্মাণের পূর্ণ অধিকার তাদের আছে। দোকলাম মূলত ভুটানের একটি ছিটমহল। তবে ভুটান এই বিবাদে কোন পক্ষ অবলম্বন করেনি। এ সময় সীমান্তে মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক সেনা সদস্য, যুদ্ধ সরঞ্জাম। যুদ্ধ বেধে যাওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছিল। এ অবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করে উভয় পক্ষকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। ভারত ও চীনের মধ্যকার উত্তেজনায় সেখানে দেখা দেয় অচলাবস্থা, স্থবির হয়ে পড়ে ভুটানের জনজীবন। মন্দাভাব দেখা দেয় ব্যবসা-বাণিজ্যে। কারণ ভারতের ব্যবসায়ীরা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে অন্য দেশে যেতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত কঠোর অবস্থান থেকে পিছু হটে ভারত। সোমবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দোকলামের ঘটনা নিয়ে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ভারত ও চীনের কূটনৈতিকভাবে আলাপ আলোচনা হয়েছে। এর ভিত্তিতে দুই পক্ষ দোকলামে উত্তেজনায় জড়ানো থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে একমত হয়েছে।’ আগামী মাসে অনুষ্ঠিতব্য ব্রিকস সম্মেলনের আগে ভারত ও চীনের মধ্যে সমঝোতার খবরটি এলো। চীন ও ভারতের পাশাপাশি এই সম্মেলনে অংশ নেবে ব্রাজিল, রাশিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। চীনের জিয়ামেন শহরে অনুষ্ঠিতব্য ওই সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির ১৯তম কংগ্রেস সামনে। এই কংগ্রেসে পার্টি প্রধান ও প্রেসিডেন্ট হিসেবে শি জিনপিংয়ের আরও পাঁচ বছর থাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে পার্টি। এই প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখে চীন তার অবস্থান কিছুটা নমনীয় করেছে।
×