ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে খুনের, ছেলের বিরুদ্ধে চুরির মামলা

প্রকাশিত: ০৪:৫২, ২৯ আগস্ট ২০১৭

মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে খুনের, ছেলের বিরুদ্ধে চুরির মামলা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পুরান ঢাকার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসেম হাওলাদারকে খুনের মামলার আসামি করার পর এবার তার ছেলেকে চুরির মামলায় আসামি করায় গে-ারিয়া থানা এলাকায় আবারও ব্যাপক হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি থেকে মাত্র দুই শ’ গজ দূরে অবস্থিত গে-ারিয়া থানায় গত ২৫ আগস্ট মামলাটি রেকর্ড হয়। এমন ঘটনায় থানাটির দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা চলছে। জসীম নামের এক স্থানীয় ডিশ ব্যবসায়ী মামলাটি দায়ের করেন। আর পুলিশ কোন প্রকার যাচাই-বাছাই ছাড়াই ঈদের আগে অসৎ উদ্দেশ্যে মামলাটি রেকর্ড করেছে বলে অভিযোগ করেছেন মুক্তিযোদ্ধার পরিবার। যদিও পুলিশ বলছে, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসেম হাওলাদার জনকণ্ঠকে বলেন, গে-ারিয়া থানা থেকে আমার বাড়ি দু’শ গজ দূরে। ৫৩/১/এ নম্বর বিশাল ছয়তলা বাড়ির মালিক আমি। পাশেই আমার আরও বাড়ি রয়েছে। ২০০৮ সালে ছয়তলা বাড়িটি নির্মাণের সময় স্থানীয় চাঁদাবাজ ও পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী দীন ইসলাম দিলা ও তার ভাই জসীম মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেছিল। চাঁদা না দেয়ার প্রেক্ষিতে অব্যাহত হুমকির মুখে ছেলেদের প্রাণ বাঁচাতে জাপানে পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হই। সদরঘাটে অবস্থিত গ্রেটওয়াল মার্কেটের মালিকও আমি। সবকিছু ভালই চলছিল। কিন্তু বিপত্তি দেখা দেয় ২০১০ সালের ৫ নবেম্বর। নিজ বাসার সামনে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দীন ইসলাম দিলা নিহত হন। এ মামলায় আমাকে আসামি করা হয়। এমন ঘটনার মধ্যেই চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি দিলার ভাই জসীম আমার ছেলে ফরহাদ হোসেন অলুকে আসামি করে গে-ারিয়া থানায় একটি ছিনতাই মামলা দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, আমার ছেলে অলু ও লিটন নামের একজন জঙ্গীকে নিয়ে জসীমের স্ত্রীর গলার সোয়া লাখ টাকা মূল্যমানের স্বর্ণের চেইন ও নগদ সাড়ে নয় হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। সর্বশেষ গত ২৫ আগস্ট গে-ারিয়া থানায় আমার ছেলে অলু ও শুভ নামের একজনের বিরুদ্ধে জসীম আরেকটি মামলা দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা জসীমকে মারধর শেষে চাঁদাদাবি করে। এরপর জসীমের কাছ থেকে ৬২ হাজার টাকা চুরি করে। টাকা লুটের পর জসীমকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। মামলার অভিযোগ হাস্যকর। আমি ব্যক্তিগতভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক। আমার ছেলের ৬২ হাজার তো দূরের কথা ৬২ লাখও ছিনতাই করার প্রয়োজন নেই। এসব মামলা অসৎ উদ্দেশ্যে দায়ের করা। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে দীলা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল। দীলার এক ভাই ফারুক সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন। আরেক ভাই ওয়াসিম সন্ত্রাসীদের গুলিতে পঙ্গু হয়ে গেছেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় ডিশ ব্যবসায়ী মামলার বাদী জসীমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বিষয়টি সম্পর্কে গে-ারিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুব আলম জনকণ্ঠকে বলেন, মূলত রেষারেষি থেকে পাল্টাপাল্টি মামলা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে পাল্টাপাল্টি মামলা দায়েরের নেপথ্যে তেমন কোন যৌক্তিক ভিত্তি নেই। মূলত দুই পরিবারের মধ্যে চলমান জেদ থেকেই এমন ঘটনা ঘটছে। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়িয়েছে যে, পুলিশেরও এক্ষেত্রে তেমন কিছুই করার নেই। দুই পরিবার মিলে গেলেই বিষয়টি সহজ হয়ে যায়।
×