ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অসুস্থ বা কোরবানির অযোগ্য পশু হাটে আনলে শাস্তি ॥ সাঈদ খোকন

প্রকাশিত: ০৪:৪৬, ২৯ আগস্ট ২০১৭

অসুস্থ বা কোরবানির অযোগ্য পশু হাটে আনলে শাস্তি ॥ সাঈদ খোকন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অসুস্থ বা কোরবানির অযোগ্য পশুকে কোরবানির হাটে নিয়ে এলে ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। একইসঙ্গে কোরবানির পর পশুর বর্জ্য সুষ্ঠুভাবে অপসারণের জন্য মেয়র সরাসরি মাঠে থেকে ও ফেসবুক এবং অনলাইনে সার্বিক কর্মকা- সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করবেন বলে জানিয়েছেন। সোমবার দুপুরে নগর ভবনের সামনে আসন্ন কোরবানিতে সুষ্ঠুভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার স্বার্থে প্রায় ৩ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মীর সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় মেয়র এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ডিএসসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোঃ বিলাল, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডর মোঃ শফিকুল ইসলাম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডাঃ সালাহউদ্দিন আহমেদ, অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম, কমিশনার হাসিবুর রহমান মানিক, সংরক্ষিত আসনের কমিশনার ডলি আক্তার প্রমুখ। সাঈদ খোকন বলেন, এ বছর কোরবানির পশুর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ডিএসসিসির নিয়মিত কর্মীসহ মোট ১২ হাজার কর্মী কাজ করবে। বর্জ্য অপসারণের জন্য মোট তিন শ’টি ছোট বড় বিভিন্ন প্রকারের যানবাহন ব্যবহার করা হবে। এছাড়া কোরবানি দেয়ার পর যদি কোথাও কোন পশুবর্জ্য পড়ে আছে দেখতে পান, তাহলে আমাদের হট লাইনের মাধ্যমে জানাবেন। আপনাদের অভিযোগ আমাদের কর্মকর্তাদের কাছে চলে আসবে। আর পুরো ব্যবস্থাপনা আমি নিজেই ফেসবুক ও অনলাইনের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করব। সিটি কর্পোরেশন নির্ধারিত ৬শ’ ২৫টি স্থানে পশু জবাই দেয়ার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘নগরবাসীর প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা নির্ধারিত স্থানেই পশু জবাই দেবেন। এর পরেও কেউ যদি নিজেদের বাড়ির আঙ্গিনায় পশু জবাই দেন, তাহলে পশুর রক্ত পানি দিয়ে ভাল করে পরিষ্কার করে নেবেন। আমাদের স্থানীয় কাউন্সিলর, আঞ্চলিক কর্মকর্তা বা পরিচ্ছন্নতা কাজে নিয়োজিত কর্মীদের জানালে আমরা ব্লিচিং পাউডার, স্যাভলনসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দেব। আমাদের সরবরাহ করা ব্যাগে বর্জ্য ভর্তি করে নির্ধারিত ডাস্টবিনে রাখবেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা এসে তা নিয়ে যাবে। সবাই সহযোগিতা করলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই নগরীকে পরিষ্কার করতে পারব। কোরবানির পশু ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, আপনারা কোনভাবেই জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কোন পশু বাজারে আনবেন না। যদি কেউ এমন কাজ করে থাকেন, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। হাটে সার্বক্ষণিক আমাদের কর্মকর্তাসহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবে। তিনি বলেন, অন্যান্য বছরের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা দেখেছি, প্রতিবছর কোরবানির ঈদে ডিএসসিসি এলাকায় প্রায় ২৫ হাজার টন বর্জ্য উৎপাদন হয়। তাই এসব বর্জ্য অপসারণের জন্য মোট সাড়ে তিন শ’টি যানবাহন ব্যবহার করা হবে। উপস্থিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের পক্ষ থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের স্ক্যাভেঞ্জার্স এ্যান্ড ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ মেয়রের কাছে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। এগুলো হচ্ছে মাসিক বেতন বোনাস ভাতা, সময়মতো পরিশোধ করা, চাকরির মেয়াদ ৬ বছর অতিক্রমকারী পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের স্কেলভুক্ত করা, ড্রাইভারদের মতো পরিচ্ছন্নতাকর্মীদেরও ওভারটাইমের ব্যবস্থা করা, বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে আহতদের ঝুঁকিভাতা চালু করা, মৃত পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের মেয়র কর্তৃক অনুদান দ্রুত ও সহজ পদ্ধতিতে ব্যবস্থা করা ও ৫৯ বছর অতিক্রমকারী পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নতুন পে-স্কেল সংক্রান্ত মোখিক স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে মানবিক কারণে চালুর আবেদন জানান। এর প্রেক্ষিতে মেয়র বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা ক্লিনারদের জন্য ডিএসসিসি ও সরকারের এলজিইডির মাধ্যমে লিফট, জেনারেটর, ব্যায়ামের ব্যবস্থাসহ আধুনিক সকল সুবিধা সম্পন্ন মোট ১৩টি ভবন নির্মাণ করছি। এছাড়া সঠিকভাবে বর্জ্য অপসারণ করে নগরবাসীর সেবা করুন। আশা করি ঈদের পর আমরা আপনাদের সকল নায্য দাবি পূরণ করতে চেষ্টা করব। এছাড়া প্রতিমাসের এক থেকে ৫ তারিখের মধ্যেই ক্লিনারদের বেতন প্রদানের ঘোষণা দেন তিনি। এরপর মেয়র বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে সঠিক সময়ে গুরুত্বের সঙ্গে পালন করতে উপস্থিত ক্লিনারসহ সকলকে নিয়ে শপথবাক্য পাঠ করেন।
×