নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ সদর উপজেলার দুধখালী এলাকায় ৭ম শ্রেণির এক মাদ্রাসার ছাত্রী (১৩) ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ ব্যাপারে ঐ ছাত্রী বাদী হয়ে মাদারীপুর সদর থানায় ধর্ষকের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো তিন জনকে আসামী করে একটি মামলা করেছে। ধর্ষক সদর উপজেলার দুধখালী ইউনিয়নের আইয়ুব আলী মোল্লার ছেলে মুন্না মোল্লাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি বৃহস্পতিবার ঘটলেও মানসম্মানের কথা চিন্তা করে বিষয়টি গোপন রাখে তার পরিবার। রবিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় ধর্ষিতার জবানবন্দী গ্রহণের পর সোমবার বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়।
পারিবারিক, হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার দুধখালী ইউনিয়নের চন্ডিবর্দী দাখিল মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণির ঐ ছাত্রীকে প্রায়ই উত্যাক্ত করতো একই এলাকার আইয়ুব আলী মোল্লার ছেলে মুন্না মোল্লা। মাঝে মধ্যে মুন্না তাকে মাদ্রাসায় যাতায়াত পথে গতিরোধ করতো এবং বিয়ের প্রস্তাব দিতো। বিষয়টি মাদ্রাসার এক শিক্ষককে জানালে তিনি মুন্নাকে ডেকে গালমন্দ করে চরথাপ্পর দিয়ে শাসিয়ে দেন। এতে মুন্না আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং প্রতিশোধ নিতে অপেক্ষা করতে থাকে। বৃহস্পতিবার মাদ্রাসা ছুটির পর বাড়ি ফেরার পথে মুন্না ও তার তিন বন্ধু ঐ ছাত্রীর মুখ চেপে ধরে অপহরণ করে পর্দা দিয়ে ঢাকা একটি ইজিবাইকে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে একটি নির্মাণাধীন বিল্ডিং রুমে আটকে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে মুন্না ঐ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে।
পরে বিকেলের দিকে অজ্ঞান অবস্থায় নির্যাতিতাকে চন্ডিবর্দী এলাকার একটি পুরনো মঠের পাশে ফেলে মুন্না ও তার বন্ধুরা পালিয়ে যায়। সন্ধ্যার দিকে ঐ ছাত্রীর জ্ঞান ফিরে এলে সে বাড়িতে যায় এবং ধর্ষণের ঘটনাটি তার মা-বাবাকে খুলে বলে। পরে তাকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। রাতে ধর্ষিতা বাদী হয়ে ধর্ষক মুন্না মোল্লার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো তিন জনকে আসামী করে মাদারীপুর সদর থানায় একটি মামলা করলে পুলিশ মুন্নাকে গ্রেফতার করে।
ধর্ষিতা ঐ ছাত্রী বলে, ‘লোকলজ্জায় আমি আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু না আমি ঐ নরপশু মুন্নার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেখতে চাই। আমার লেখাপড়া শেষ হয়ে গেল। আমি কিভাবে সমাজে মিশবো?’
ঐ ছাত্রীর পিতা বলেন, ‘আমি সমাজে কিভাবে বসবাস করবো ? আমার তো সবই শেষ, আমি ঐ পশু মুন্নার ফাঁসি চাই। ওর ফাঁসি না হলে সমাজে এ ধরণের ঘটনা আরো ঘটবে।’ এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, ‘প্রাথমিক আলামতে মনে হচ্ছে মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে। মুল আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই বাকীদের গ্রেফতার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: