ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বেনাপোল থেকে আসছে মাদক ॥ বিক্রেতা পুলিশের সোর্স

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ২৮ আগস্ট ২০১৭

বেনাপোল থেকে আসছে মাদক ॥ বিক্রেতা পুলিশের সোর্স

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোরে পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যেও থেমে নেই মাদক কেনাবেচা। শহরের চাঁচড়া রায়পাড়া, শংকরপুর, রেলস্টেশন এলাকা, বাসটার্মিনালসহ আশপাশের এলাকায় অনেক বিক্রেতা বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য বিক্রি করছে। আবার অনেকে পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে মাদক কেনাবেচা করছে। এদিকে মাদক বহনে বেনাপোল থেকে যশোরগামী ট্রেন ব্যবহার করছে মাদক বিক্রেতারা। প্রতিদিন ট্রেনে করে আসছে মাদক। এক শ্রেণীর চোরাকারবারি এবং ভারত ফেরৎ পাসপোর্ট যাত্রী মালামালের মধ্যে মাদক নিয়ে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে রেল পুলিশ বলেছে, রেলে মাদক বহন হয় না। যদি কারোর জানা থাকে এবং জিআরপি যশোর ফাঁড়িতে অভিযোগ দিলে আটক করা হবে। মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জিআরপি কোন যোগাযোগ নেই বলে জানান যশোর জিআরপির ইনচার্জ এসআই ইদ্রিস আলী। যশোরে পুলিশের পূর্ব ঘোষিত মাদকবিরোধী অভিযান চলছে। কিন্তু মাদক কেনাবেচা বন্ধ নেই। এই অভিযানের মধ্যেও মাদক কেনাবেচা হচ্ছে পড়ায় মহল্লায়। পুরনো কিছু বিক্রেতার সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে নতুন বিক্রেতা। পুলিশ প্রতিনিয়ত আটক করছে ইয়াবাসহ বিক্রেতাদের। কিন্তু কেনাবেচা থামছে না। এর পেছনে রয়েছে পুলিশের সোর্স পরিচয়দানকারী কিছু যুবক। এরা বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে মাদক কেনাবেচা করে থাকে। আবার অনেকে লুকিয়ে কেনাবেচা করছে। পুলিশি তৎপরতা কমে যাওয়ায় সুযোগে মাদক বিক্রেতারা সুযোগ পাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একটি সূত্র জানিয়েছে, চাঁচড়া রায়পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় পুরনো বিক্রেতার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন কিছু ব্যবসায়ী। পুরনো বিক্রেতাদের অনেকে পুলিশের সোর্স বনে গেছে। ওই এলাকার কামাল ওরফে শ্যামল, মরা, ছোট জয়নাল, রমজান, রহিম ওরফে মুরগী রহিম, লাড্ডু, বেবী, সোহাগ, সবুজ, সাগর, শহিদুল, রাজ্জাক, সানি, দোলা, আইজুল ওরফে আজিজুল, চান মিয়া, সুলতানা, রওশনারা, ওসমান, সাইফুল, আনু, হাফিজুর, কালু, ষষ্টিতলার টেরা চঞ্চল, সাইফুল, বাবু, সেলিম, শংকরপুরের কেরামত, আসলাম, সালাম, গিটবাবু, আরমান, লাল্টু, বিল্লাল, আলীম, সানিসহ কয়েকজন মাদক কেনাবেচার সঙ্গে যুক্ত। এদের মধ্যে অনেকে পুলিশের সোর্স। যারা এক সময় কেনাবেচা করত। পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক বিক্রেতারাও এখন সোর্স হিসেবে কাজ করছে। আর গোপনে বিক্রি করছে মাদক। পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণকারী বিক্রেতাও এখন পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে মাদক বিক্রি করছে। মাদকসেবী আর বিক্রেতাদের পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে আবার টাকার বিনিময়ে ছাড়িয়েও নিচ্ছে। যার ফলে পাড়ায় মহল্লায় মাদক বিক্রি থেমে নেই। বিশেষ করে ইয়াবা কেনাবেচা হচ্ছে দেদার। এক শ্রেণীর চোরাকারবারি এবং পাসপোর্ট যাত্রী বিভিন্ন মালামালের মধ্যে করে গোপনে গাঁজা-ইয়াবা আনছে। যশোর জিআরপি পুলিশকে মাসিক টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে ওই মাদক বহন করছে। জিআরপির ভাষ্যমতে- ট্রেন এবং প্লাটফর্মের ভেতরে জিআরপি যে কোন যাত্রীকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। জিআরপি যশোর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই ইদ্রিস আলী বলেছেন, আমার জানামতে যশোর রেল স্টেশনে কোন মাদক আনা হয় না। যদি গোপনে হয়ে থাকে তাহলে আমাদের কিছু করার থাকে না। কারণ আমাদের সোর্স কম। পুলিশের বিরুদ্ধে টাকা বিনিময়ে মাদককারবারীদের সুযোগ দেয়ার অভিযোগ মিথ্যা বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কোন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ হলে তদন্ত করে মামলা দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে তিনি সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেছেন। এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি একেএম আজমল হুদা জানিয়েছেন, যশোরে, মাদকের কোন স্পট নেই। মাদক কেনাবেচা করে কেউ পার পাবে না। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা দেয়া হয়েছে। অভিযান জোরেশোরে চলছে। তা অব্যাহত থাকবে।
×