ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রোহিঙ্গা পরিস্থিতি জোরালোভাবে তুলে ধরবে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৪:৫০, ২৮ আগস্ট ২০১৭

রোহিঙ্গা পরিস্থিতি জোরালোভাবে তুলে ধরবে বাংলাদেশ

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ জেনেভায় মানবাধিকার কাউন্সিলে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি জোরালোভাবে তুলে ধরবে বাংলাদেশ। মানবাধিকার কাউন্সিলের ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউতে (ইউপিআর) এ বিষয়ে মতামত দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক। রবিবার সরকারী কর্মকর্তাদের জন্য আয়োজিত ইউপিআর বিষয়ক এক কর্মশালায় তিনি এসব তথ্য জানান। রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এই কর্মশালায় পররাষ্ট্র সচিব জানান, ২০১৩ সালে জেনেভায় ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউতেও রোহিঙ্গা বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। সে সময় বাংলাদেশ এ বিষয়ে মতামত দিয়েছিল। মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর অত্যাচারে বাংলাদেশে প্রায় চার লাখের মতো রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে। আগামীবারের রিভিউতে রোহিঙ্গা বিষয়ে আলোচনা হবে। এ বিষয়ে আমাদের জোরালো মতামত থাকবে। জেনেভাতে আগামী বছরের মে মাসে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির পর্যালোচনা হবে জানিয়ে সচিব আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রথম রিভিউ হয়েছিল ২০০৯ সালে যেখানে ৪৫টি দেশ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করেছিল। এরপর ২০১৩ সালে দ্বিতীয় পর্যালোচনায় ৯৫টি দেশ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করেছিল এবং এবারে এই সংখ্যা বাড়তে পারে। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউয়ের মোট সাতটি রিপোর্টের মধ্যে পাঁচটি রিপোর্ট বাংলাদেশ ইতোমধ্যে জমা দিয়ে দিয়েছে। এম শহীদুল হক বলেন, সামনের বছরের ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউ বাংলাদেশের জন্য কঠিন হবে। এটি কোন দেশের জন্য সহজ নয়, আমাদের জন্যও সহজ হবে না। যখন একটি দেশ আরেকটি দেশকে প্রশ্ন করে তখন বিভিন্ন অবস্থান থেকে মানবাধিকার পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রশ্ন করে। এর উত্তর সঙ্গে সঙ্গে দিতে হয় বলে এটি অত্যন্ত কঠিন। তিনি বলেন, এই গোটা প্রক্রিয়াটি একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া। কারণ যখন একটি দেশ আরেকটি দেশকে প্রশ্ন করে তখন সেটি পুরোপুরি রাজনৈতিকধর্মী হয়। এবারের রিভিউতে আইনবহির্ভূত হত্যাকা- বিষয়টি আলোচিত হবে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, এ বিষয়টি এবার আসবে। আমরা আশা করি আমাদের সঠিক উত্তর এ প্রেক্ষাপটে হবে। পররাষ্ট্র সচিব জানান, ২০১৩ সালের রিভিউতে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য সব মিলিয়ে ১৯৬টি সুপারিশ করা হয়েছিল এবং এর মধ্যে পাঁচটি সুপারিশ বাংলাদেশ গ্রহণ করেনি। এই পাঁচটি সুপারিশ করা হয়েছিল মৃত্যুদ- রহিত এবং সমকাম বিষয়ক। তিনি জানান, বাংলাদেশের স্থানীয় আইনে মৃত্যুদ- প্রচলিত আছে, সে কারণে এ সংক্রান্ত সুপারিশ বাংলাদেশ গ্রহণ করেনি। এছাড়া বাংলাদেশের সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ধারণা সমকামিতা সমর্থন করে না এবং বাংলাদেশ জেনেভাতে পরিষ্কার জানিয়ে এসেছে তাদের পক্ষে এ সুপারিশ গ্রহণ করা সম্ভব নয়।
×