ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শাহীন রেজা নূর

বাণিজ্য যখন রাজনৈতিক হাতিয়ার

প্রকাশিত: ০৪:২৪, ২৮ আগস্ট ২০১৭

বাণিজ্য যখন রাজনৈতিক হাতিয়ার

চীন রাজনীতির সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যকে জড়াবার ঘোরতর বিরোধী বলে দাবি করলেও বাস্তবে এর উল্টোটাই ঘটছে। দেখা যাচ্ছে যে, চীনের করতলগত বা বশীভূত থাকতে বা হতে অনিচ্ছুক দেশগুলোর বিরুদ্ধে চীন এই রাজনৈতিক বাণিজ্যকে হাতিয়াররূপে প্রয়োগ করে চলেছে অবলীলায়। দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে চীনের সাম্প্রতিক ব্যাপক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের মধ্যে এই বিষয়টি লক্ষণীয়। দক্ষিণ কোরিয়ার সম্প্রতি টার্মিনাল হাই আলটিটিউড এরিয়া ডিফেন্স এন্টি মিসাইল সিস্টেম (ঞঐঅঅউ) স্থাপনের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ এই হাতিয়ার ব্যবহার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। উপরন্তু অভিযোগ আছে যে, চীন তার পররাষ্ট্রনীতি বা লক্ষ্যসমূহ হাসিলের জন্য বিভিন্ন দেশের সমর্থন লাভার্থে ও সেসব দেশে অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রদানের নামে প্রকারান্তরে তাদের অর্থনৈতিকভাবে চীনের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল করে তুলেছে এই হাতিয়ারটি ব্যবহারের মাধ্যমে। চীন অর্থনৈতিকভাবে বিভিন্ন দেশকে শায়েস্তা করার নানা কৌশল অবলম্বন করছে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পত্র-পত্রিকার প্রতিবেদনে প্রকাশ। নিজস্ব রাজনৈতিক অভিলাষ পূরণের জন্য যেসব দেশের সমর্থন প্রয়োজন সেসব দেশ যদি চীনের সে ইচ্ছে পূরণে সহযোগিতা করতে রাজি না হয় তাহলেই সে দেশের ওপর বাণিজ্যকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। যেভাবে এই অস্ত্রটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে তার মধ্যে আছে ওইসব দেশ থেকে আমদানি হ্রাস করা বা আনুষ্ঠানিকভাবে ওই চিহ্নিত দেশের পণ্য বর্জন এবং কোন কোন ক্ষেত্রে কৌশলগত পণ্যের (যেমন দুর্লভ খনিজ পদার্থসমূহ) রফতানি বন্ধ করে দেয়া। তাছাড়া সুনির্দিষ্ট বিদেশী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে স্থানীয়ভাবে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ইত্যাদিতে উৎসাহ জোগানো এই কৌশলের অন্তর্ভুক্ত। অন্য আর যে সকল হাতিয়ার চীন এক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকে তার মধ্যে আছে পর্যটকদের ভ্রমণ স্থগিতকরণ আর মৎস্য শিকারে বাধাদান ইত্যাদি। এগুলো অত্যন্ত সুচিন্তিতভাবে করা হয়ে থাকে, যাতে করে কোনক্রমেই চীনের নিজস্ব বাণিজ্যিক স্বার্থ বিঘিœত না হয়। চীনের এই ভূ-অর্থনৈতিক বলদর্পিতার একটি ক্ল্যাসিক উদাহরণ দেখা যায় মঙ্গোলিয়ার বিরুদ্ধে চীনের শাস্তিমূলক করারোপের মধ্যে। উল্লেখ্য, মঙ্গোলিয়ার রফতানির ৯০ শতাংশের খদ্দের চীন। মঙ্গোলিয়া গত নবেম্বরে সেখানে দালাইলামাকে আমন্ত্রণ জানানোর ফলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে এবং মঙ্গোলিয়াকে শিক্ষা দেয়ার জন্য চীন ওই কর আরোপ করে। তখন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং কীর কণ্ঠে এই দম্ভোক্তি শোনা যায় যে, তিব্বতি আধ্যাত্মিক নেতা দালাইলামাকে খায়-খাতিরের নতিজা মঙ্গোলিয়া নিশ্চয়ই এখন টের পাচ্ছে এবং এ থেকে শিক্ষা গ্রহণপূর্বক মঙ্গোলিয়া ভবিষ্যতে আর এমন ভুল করবে না এবং একই সঙ্গে মঙ্গোলিয়া চীনকে প্রদত্ত যাবতীয় প্রতিশ্রুতি সততার সঙ্গে পরিপূর্ণভাবে মেনে চলবে। এক্ষেত্রে নরওয়ের বিরুদ্ধেও চীনের এমন ধারার বাণিজ্যিক প্রতিহিংসা বা প্রতিশোধপরায়ণতার কথা উল্লেখ করা যায়। ২০১০ সালে কারারুদ্ধ চীনা ভিন্নমতাবলম্বী লিউ জিয়াও বোকে শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার প্রদানের কারণে চীনে নরওয়ের স্যামন মাছ রফতানিতে ধস নামে। ২০১০ সালে চীন বিশ্বে কতিপয় অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও দুর্লভ খনিজ পদার্থের বলতে গেলে একচেটিয়া অধিকারী হওয়ার সুবাদে এক ধরনের অঘোষিত রফতানি নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে জাপান ও পশ্চিমা দুনিয়ার জন্য ব্যাপক বাণিজ্যিক আঘাত হানে। অন্যদিকে সেনকাকু দীপপুঞ্জের ওপর জাপান ও চীনের মধ্যে মালিকানা নিয়ে যে বিরোধ সেই ১৮৯৫ সাল থেকে চলে আসছে ২০১২ সালে তা মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে চীন তখন জাপানের বিরুদ্ধে বাণিজ্যকে তার কৌশলগত হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে, আর তাতে হাজার হাজার কোটি ডলারের লোকসান গুনতে হয় জাপানকে। ২০১২ সালের এপ্রিলে আবার দক্ষিণ চীন সাগরে অবস্থিত বিরোধপূর্ণ স্কারবরো শৌলের সন্নিকটে এক দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে চীন ফিলিপিন্সকে যাচ্ছেতাই রকম ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে সেখানে নজরদারি নৌযান প্রেরণের মাধ্যমে বলে অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, ওই এলাকায় ফিলিপিন্সদের ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আর ফিলিপিন্স থেকে কলা আমদানিতে বাধা সৃষ্টি করতেও পিছপা হয়নি চীন। এর দরুন ফিলিপিন্সে কলা উৎপাদনকারীদের পথে বসার যোগাড় হয়েছিল তখন। এভাবে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টিকে চীন তার এসব কার্যক্রমের দিকে নিবদ্ধ রেখে তলে তলে স্কারবোকে মৎস্য শিকার ক্ষেত্রটি নিজের দখলে নিয়ে নেয়। দক্ষিণ কোরিয়ার সাম্প্রতিক ঞঐঅঅউ সিস্টেম মোতায়েনের বিরুদ্ধে চীন যে প্রতিশোধপরায়ণ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তাকে চীনের উপরে উল্লিখিত বাণিজ্যকে রাজনৈতিক হাতিয়াররূপে ব্যবহারের ঘটনাবলীর আলোকে বিচার-বিশ্লেষণ করতে হবে বৈকি! বিস্ময়ের ব্যাপার এই যে, দক্ষিণ কোরিয়ার ওই ব্যবস্থাটি আসলে গড়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের সার্বিক সহযোগিতা ও প্রশ্রয়ে। উত্তর কোরিয়া বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও পাশ্চাত্যের জন্য যেভাবে একটি মারাত্মক পারমাণবিক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আঘাত হানতে সক্ষম এই ঞঐঅঅউ সিস্টেমটি যুক্তরাষ্ট্রই আসলে মোতায়েন করেছে। অথচ চীন কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোন প্রকার বাণিজ্য বা অন্য প্রকার অস্ত্র ব্যবহার করেনি বা করছে না। আর এটিই প্রথম নয়। বরং দেখা যাবে ২০০০ সালে দক্ষিণ কোরিয়া যখন চীন থেকে আমদানিকৃত রসুনে তার বাজার সয়লাব হয়ে যাওয়ার বিপরীতে নিজ দেশের রসুন উৎপাদনকারীদের স্বার্থসংরক্ষণকল্পে আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি করে, তখন চীন এর প্রতিহিংসামূলক ব্যবস্থা হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে সেলফোন ও পলিইথিলিন আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দেয়। রসুনের সঙ্গে যে পণ্যের কোনরকম সম্পর্কই নেই এমন পণ্য আমদানির ওপর এই চীনা নিষেধাজ্ঞা তাদের প্রকট প্রতিহিংসাপরায়ণ চেহারাটাই দক্ষিণ কোরীয়দের কাছে মেলে ধরে নয় কি? এ ধরনের পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে চীন তার নিজস্ব অভ্যন্তরীণ শিল্পকে উৎসাহ যোগানোর পাশাপাশি যেটির নিশ্চয়তা বিধান করেছে তা হলো চীনের চাইতে যেন দক্ষিণ কোরিয়ার লোকসান বা ঘাটতি বহুগুণে বেশি হয়। এই বাণিজ্য-গদা ব্যবহার হিতে বিপরীতও হতে পারে, আর সেরকম ক্ষেত্রে চীন তা ব্যবহারে উৎসাহী যে হয় না তা তিব্বত-ভুটান ও ভারতীয় রাজ্য সিকিমের মিলনস্থলের সীমান্ত এলাকায় সাম্প্রতিক চীন-ভারত সৈন্যদের স্থিতাবস্থা থেকেই বিষয়টি অতি পরিষ্কার হয়ে ওঠে নয় কী! চীনের লোকসান হতে পারে এমন অবস্থা দেখলে চীন ওই বাণিজ্য মুগুরটি সেক্ষেত্রে ব্যবহারই করে না। ভারতের সঙ্গে চীনের ব্যবসা-বাণিজ্যের শনৈঃ শনৈঃ উন্নতির প্রেক্ষাপটে ভারতের বিরুদ্ধে ওই বাণিজ্যিক হাতিয়ার প্রয়োগ করা চীনের পক্ষে সম্ভব নয় নিশ্চয়ই। কেননা, ওই দেশ দুটির মধ্যকার বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দেখা যাবে চীন ভারত থেকে যা আমদানি করে তার থেকেও পাঁচগুণ বেশি রফতানি করে ভারতে। ফলে এই লাভের হিসাবটি চীনা নেতাদের মাথায় ভালভাবেই গেঁথে আছে বিধায় ওই সীমান্তে যত উত্তেজনাই দেখা দিক না কেন শেষ বিচারে বাণিজ্যিক লাভের হিসাবটিই নিয়ামকের ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে নিশ্চয়ই। আর সে কারণেই সীমান্ত উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে চীন তার আর্থিক লাভের হিসাবটিকেই মাথায় নিয়ে সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধের পরিবর্তে (কেননা সেক্ষেত্রে ভারতও নিশ্চয়ই ওই বাণিজ্যিক লেনদেন বন্ধ করে দেবে, যা চীনের জন্য ক্ষতির কারণই হবে মাত্র) তিব্বতের ঐতিহাসিক তীর্থস্থানগুলোতে ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের গমনে বাধা সৃষ্টির পথটিকেই অধিক বেহতর ভাবছে। আর সে কাজটিই তারা করছে সীমান্তে ওই উত্তেজনা ছড়িয়ে। মোদ্দাকথা, চীন যেখানে এই বাণিজ্য-অস্ত্র ব্যবহার করলে বেশি সুবিধা পাওয়া যাবে দেখছে সেখানেই তা প্রয়োগ করছে অবলীলায়। এক্ষেত্রে কোন প্রকার রাখঢাকই করে না তারা। ২০১০ সালের এক সমীক্ষায় প্রতীয়মান হয় যে, যেসব দেশ তিব্বতের নেতা দালাইলামাকে একটু খাতির যতœ করেছে অর্থাৎ তার সঙ্গে বৈঠকাদি করেছে তাদের বরাতে অর্থনৈতিকভাবে বিপদ নেমে এসেছে চীনা প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থার কারণে। চীনে সেসব দেশের রফতানি দ্রুত শতকরা ৮.১ থেকে ১৬.৯ ভাগ পর্যন্ত নেমে যেতে দেখা গেছে। আর এরই ধারাবাহিকতায় কেবল যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত বাদে অন্য সব রাষ্ট্র যারা দালাইলামার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাত করেছে তারা এখন আর তার সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কোন দেখা-সাক্ষাত বা বৈঠকে মিলিত হয় না বা হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে চীন দিনকে দিন এক বাণিজ্যিক নিপীড়নকারীরূপে বিশ্বমঞ্চে আবির্ভূত হচ্ছে। এক্ষেত্রে বাণিজ্য বিষয়ক আন্তর্জাতিক নিয়মনীতির কোন তোয়াক্কাই করছে না তারা। যেসব ক্ষেত্রে তারা আন্তর্জাতিক রীতিনীতি ভঙ্গ করে চলেছে তার মধ্যে আছে বিদেশীদের প্রতিযোগিতা থেকে বিরত রাখতে শুল্কমুক্ত বাধা বজায় রাখা, রফতানির ক্ষেত্রে ভর্তুকি, চীনা কোম্পানিদের পক্ষে অভ্যন্তরীণ বাজারকে করায়ত্ত রাখা, বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের চৌর্যবৃত্তি, নানা সুবিধাদী আদায়ের জন্য এ্যান্টি ট্রাস্ট আইনের ব্যবহার ইত্যাদি। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, চীন এমনকি দ্বিপাক্ষিক চুক্তিসমূহকেও নিজস্ব উদ্দেশ্য হাসিলের কাজে এক ধরনের হাতিয়ার হিসেবেই ব্যবহার করে থাকে আজকাল। চীনের মতে, তৎক্ষণিক উদ্দেশ্য হাসিলই এ জাতীয় চুক্তির লক্ষ্য। সুতরাং, ওই প্রাথমিক উদ্দেশ্য হাসিল হয়ে গেলেই এর আর কোন বাধ্যবাধকতার বিষয় থাকে না। ১৯৮৪ সালের চীন-ব্রিটিশ যৌথ ঘোষণা যা কিনা ১৯৯৭ সালে চীনের কাছে হংকং হস্তান্তরের পথ সুগম করেছিল সেটি চীন সম্প্রতি এই একই যুক্তিতে বাতিল করে দিয়েছে। চীনের এই অর্থনৈতিক পেশিশক্তির উত্থানের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় সহযোগিতা ছিল। চীনের ওপর থেকে যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে এবং চীনকে বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থায় প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এই সহযোগিতা প্রদান করে। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ায় অনেকে আশা করেছিলেন এবার বাণিজ্যে চীনের প্রায় একচ্ছত্র আধিপত্য হ্রাস পাবে। কেননা, ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই চীনকে প্রতারক-ব্যবসায়ী হিসেবে অভিহিত করে এসেছে। কিন্তু নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর এ ব্যাপারে ট্রাম্পের সুর পাল্টে গেছে। ট্রাম্প চীনের এই বাণিজ্যিক দৌরাত্ম্য বা প্রভুত্বের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ দূরে থাক, বরঞ্চ চীনকে আরও চাঙ্গা হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন বলে মার্কিন মহলে গুঞ্জন আছে। ট্র্যান্স-প্যাসিফিক অংশীদারিত্ব থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাম প্রত্যাহার এবং এশীয় প্যাসিফিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব সঙ্কুচিত করার মাধ্যমে তিনি চীনকে অধিক মদদ দিচ্ছেন। ট্র্যান্স-প্যাসিফিক অংশীদারিত্ব বা টিপিপি পুনরুজ্জীবন চায় জাপান। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এতে অংশ না নিলে চীনের এই অবাধ বাণিজ্যিক দৌরাত্ম্য সামাল দেয়া আদৌ সম্ভব কিনা তা নিয়ে জাপানের উদ্বেগের অন্ত নেই। একটি বাজারবান্ধব, নিয়মনীতিভিত্তিক অর্থনৈতিক সম্প্রদায় গড়ে তোলার মাধ্যমে কেবল এই অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব বলে মনে করেন অনেকেই। টিপিপিকে সত্যিকার অর্থে কার্যকর করতে হলে তথা শক্তিশালী ও ব্যাপক কর্তৃত্ববাদী চীনের বাণিজ্যিক খড়গকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে আরও অনেকের অন্তর্ভুক্তি একান্তই প্রয়োজন বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। এ অবধি চীনের এই বাণিজ্যিক অস্ত্রের বিস্তার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চলে এসেছে। চীনকে বাণিজ্য ক্ষেত্রে নিয়মনীতির আওতায় আনতে হলে একটি সমন্বিত আন্তর্জাতিক কৌশল গ্রহণ এবং অন্যতম অপরিহার্য উপাদান হিসেবে টিপিপির পুনরুজ্জীবন জরুরী। লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক
×