ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

২৪ দিনে ৪শ’ পৃষ্ঠার রায় লেখা সম্ভব নয় ॥ বিচারপতি মানিক

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২৭ আগস্ট ২০১৭

২৪ দিনে ৪শ’ পৃষ্ঠার রায় লেখা সম্ভব নয় ॥ বিচারপতি মানিক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী সুপ্রীমকোর্টে বাতিলের রায়ের পর্যবেক্ষণ প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার লেখা কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন আপীল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। তিনি অবসরের আগে বর্তমান প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চেও দায়িত্ব পালন করেন। প্রধান বিচারপতির লেখা রায় নিয়ে সরকারী দলের নেতাকর্মীদের ক্ষোভ প্রকাশের মধ্যেই শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে স্বাধীনতা পরিষদের শোক দিবসের আলোচনা সভায় বিচারপতি মানিক তার সন্দেহের কথা জানান। বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, উনি (প্রধান বিচারপতি) মাত্র ২৪ দিন সময়ের মধ্যে ৪০০ পৃষ্ঠার রায় লিখেছেন, এটা ইমপসিবল, এটা হতে পারে না। এটা তার লেখা রায় মোটেও নয়। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতির লেখা রায় পড়লে আপনারা দেখতে পাবেন, অনেক শব্দ আছে যেসব শব্দ তার লেখা আগের কোন রায়ে নেই। অর্থাৎ এটা পরিষ্কার, এই রায় তার লেখা নয়। অন্য কেউ লিখে দিয়েছে, সম্ভবত পাকিস্তানি আইএসআই এজেন্ট এটা লিখে দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, ষোড়শ সংশোধনী মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত না এমন অনেক কথা তিনি অভজারবেশনে লিখেছেন। প্রধান বিচারপতির কাজ রাজনীতি করা না। যে প্রধান বিচারপতি রাজনীতি করে, সেটা তার অযোগ্যতা। এসব করে তিনি অনেকভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন, শপথ ভঙ্গ করেছেন। তার আর এই পদে থাকার কোন অধিকার নেই। তাকে অবশ্যই এই পদ ছেড়ে চলে যেতে হবে। প্রধান বিচারপতিকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি মানিক বলেন, শুধু প্রধান বিচারপতির পদ না, আপনাকে এ দেশও ছাড়তে হবে। আপনি যখন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব স্বীকার করেন না, এ দেশে থাকার কোন অধিকার আপনার নেই। বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে নিতে সংবিধানে আনা ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে গত ৩ জুলাই আপীল বিভাগ চূড়ান্ত রায় দেন, ১ অগাস্ট পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ করা হয়। ৭৯৯ পৃষ্ঠার ওই রায়ের বেশিরভাগ অংশজুড়ে প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ রয়েছে, যা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে তুমুল আলোচনা। সভায় আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী- এমনটা প্রমাণ করতে অপেক্ষাকৃত কম যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও প্রধান বিচারপতি পদে এস কে সিনহাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। আর এই প্রধান বিচারপতি এখন দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন। দুর্নীতিবাজ এক বিচারককে বাঁচানোর জন্য তিনি দুদকে চিঠি দিয়েছেন। দুর্নীতিকে যে প্রশ্রয় দেয়, সেও সমান অপরাধী। এটা দুদকের ৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী তিনিও সেই অপরাধ করেছেন। বিএনপি এখন প্রধান বিচারপতির ঘাড়ে বসে রাজনীতি করতে চাইছে বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের এই নেতা। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি চিত্তরঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য অধ্যাপক ফজলুল হক, আওয়ামী লীগ নেতা বলরাম পোদ্দার, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
×