ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কুড়িগ্রাম রেল স্টেশনের পরিত্যক্ত সম্পত্তি বেদখলে

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ২৬ আগস্ট ২০১৭

কুড়িগ্রাম রেল স্টেশনের পরিত্যক্ত সম্পত্তি বেদখলে

রাজুমোস্তাফিজ, কুড়িগ্রাম থেকে ॥ কুড়িগ্রামে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ১২ একর ৪২ শতক জমির অধিকাংশ জায়গা দখলবাজদের হাতে চলে গেছে। দখলকৃত জায়গা কেনা-বেচাসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বাড়ি-ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেছে অনেকেই। সেই সঙ্গে পরিত্যক্ত পুরানো রেল স্টেশনের টিন, লোহার খুঁটি, শাল কাঠের খুঁটি, এমনকি প্লাটফরমের ইট চুরি যাচ্ছে। দখলবাজদের তালিকায় স্থানীয় লোকজনের নাম শোনা যাচ্ছে। রেলওয়ে সূত্র জানায়, পণ্য পরিবহন ও লোকজনের চলাচলের সুবিধার্থে ১৮৫৩ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় উপমহাদেশে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করে। ধরলা নদীর অব্যাহত ভাঙনে স্টেশনটি নদী গর্ভে চলে গেলে ১৯২৬ সালে কুড়িগ্রাম শহরে বর্তমানে পুরনো শহর নামক স্থানে ১২ একর ৪২ শতক জমিতে স্টেশনটি পুনরায় স্থাপন করা হয়। ১৯৭৯ সালে যানজট কমানোর লক্ষ্যে তৎকালীন মন্ত্রী মাঈদুল ইসলাম মুকুল স্টেশনটি বন্ধ করে দেয়ার পদক্ষেপ নিলে পুরনো শহরের লোকজনের আন্দোলনের মুখে তা ভেস্তে যায়। পরবর্তীতে অব্যাহত ভোগান্তির কারণে তৎকালীন বিএনপি সরকার ২০০৬ সালের ৩০ জুন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরকারীভাবে পুরনো রেলওয়ে স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। এরপর নাগরিক কমিটির উদ্যোগে পরিত্যক্ত রেলওয়ে স্টেশনের ১২ একর ৪২ শতক জমির উপর বাসটার্মিনাল, মার্কেট, ভূরুঙ্গামারীÑকুড়িগ্রাম বইপাস সড়ক, শিশু পার্কসহ নানান স্থাপনার দাবিতে রেল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। একই দাবি নিয়ে সাবেক মেয়র আবু বকর সিদ্দিক পুরনো স্টেশনটি পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের জন্য আবেদন করেন এবং নাগরিক কমিটির প্রস্তাবনা মোতাবেক ইউজিআইআইটি প্রকল্পে তা অন্তর্ভুক্ত করে ঢাকায় প্রস্তাব পাঠানো হয়। বর্তমানে তা প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে কুড়িগ্রাম পুরনো রেলওয়ে স্টেশন ভূমি দস্যুরা পুরোপুরি দখল করে নিয়েছে। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জাফর আলী জানান, বিএনপি সরকার কুড়িগ্রাম পুরনো স্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। তাদের উচিত ছিল শহর উন্নয়নে পরিকল্পনামাফিক কাজ করা। কুড়িগ্রাম শহর উন্নয়নে পুরনো স্টেশনটি যাতে সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায় সেদিকে সরকারের লক্ষ্য রয়েছে। এ বিষয়ে লালমনিরহাট রেলওয়ে ডিভিশনের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার জানান, যেহেতু কুড়িগ্রাম পুরনো রেল স্টেশনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সে কারণে রেলের সব সম্পত্তি অকশন দেয়া হবে। এ সংক্রান্ত পত্র ইতোমধ্যে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে দেয়া হয়েছে।
×