ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দুই দলের সেরা তিন ক্রিকেটারের মধ্যে হবে লড়াই

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৬ আগস্ট ২০১৭

দুই দলের সেরা তিন ক্রিকেটারের মধ্যে হবে লড়াই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুই দলের ক্রিকেটাররাই উত্তেজিত, রোমাঞ্চিত। দুই দলের ক্রিকেটাররাই যে পরস্পরের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলবেন। আর দুই দলের এ লড়াইয়ে দুই দলের তিন ক্রিকেটারের মধ্যেই যেন লড়াইটা দেখা যাবে। একদিকে যেমন মুশফিকুর রহীম, সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের দিকে নজর থাকবে। আরেকদিকে স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার ও নাথান লিয়নের দিকে দৃষ্টি থাকবে। যে আত্মবিশ্বাস বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে তাতে অস্ট্রেলিয়াকে না সত্যিই হোয়াইটওয়াশ করে দেয় বাংলাদেশ। যে স্বপ্ন প্রধান কোচ চন্দ্রিকা হাতুরাসিংহে, বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান দেখেছেনও। বাংলাদেশের অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। মুশফিক খেলেছেন ৫৪ টেস্ট। স্মিথও খেলেছেন সমান সংখ্যক টেস্ট। তবে মুশফিক যেখানে ২০০৫ সাল থেকে ১০০ ইনিংস খেলে ৫টি সেঞ্চুরিসহ ৩৫.৪৮ গড়ে ৩২৬৫ রান করেছেন, সেখানে স্মিথ ২০১০ সাল থেকে খেলে ১০০ ইনিংসে ২০টি সেঞ্চুরিসহ ৬১.০৫ গড়ে ৫২৫১ রান করেছেন। এ মুহূর্তে বিশ্বের সেরা টেস্ট ব্যাটসম্যান স্মিথই। অসি দলের কান্ডারিও। স্মিথ দ্রুত আউট মানেই অস্ট্রেলিয়াও যেন বিপদে পড়ে যাওয়া। মুশফিক আউট হলে দল চাপে পড়লেও বাংলাদেশের অন্য ব্যাটসম্যানরা উইকেটে টিকে থেকে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম হন। কিন্তু ইদানীং বিশেষ করে উপমহাদেশের উইকেটে স্মিথ দ্রুত আউট হওয়া মানেই যেন অস্ট্রেলিয়াও ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে। সর্বশেষ ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার সিরিজে তো তাই প্রমাণ হয়েছে। এ দুই ক্রিকেটার দলের ব্যাটিংয়ের মূল স্তম্ভ। এ দুই ক্রিকেটার দলকে সামনে থেকে কিভাবে নেতৃত্ব দেন সেটিই এখন দেখার বিষয়। এরপর আসা যাক দুই দলের সহঅধিনায়ক ও ওপেনারের দিকে। বাংলাদেশ ওপেনার তামিম ইকবাল ২০০৮ সাল থেকে টেস্ট খেলে ৪৯ টেস্ট ম্যাচে ৯৪ ইনিংসে ব্যাটিং করেছেন। ৮টি সেঞ্চুরিসহ ৩৯.৫৩ গড়ে ৩৬৭৭ রান করেছেন। আরেকদিকে অসি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ২০১১ সাল থেকে খেলে ৬৪ টেস্টে ১১৯ ইনিংসে ব্যাটিং করে ১৮ সেঞ্চুরিসহ ৪৭.৪২ গড়ে ৫৪৫৪ রান করেছেন। দুই ওপেনারই দলের ভরসা। শুরুটা যে তাদেরই করতে হয়। দুই দলেই এ দুই ব্যাটসম্যানের দিকে দল তাকিয়ে থাকবে। বাংলাদেশ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান যেখানে ২০০৭ সাল থেকে টেস্ট খেলে ৪৯ টেস্টে ৯২ ইনিংস ব্যাটিং করে ৫টি সেঞ্চুরিসহ ৪০.৯২ গড়ে ৩৪৭৯ রান করেছেন। বল হাতে ১৭৬ উইকেট নিয়েছেন। আরেকদিকে স্পিনার নাথান লিয়ন ২০১১ সাল থেকে টেস্ট খেলে ৬৭ টেস্টে ২৪৭ উইকেট নিয়েছেন। দুই দলের দুই সেরা স্পিনার সাকিব ও লিয়ন। তবে সাকিব একদিক দিয়ে এগিয়ে থাকছেন। তিনি যে ব্যাটিংটাও দুর্দান্ত করেন। লিয়ন সেই স্থানে পিছিয়ে থাকছে। তবে সাকিব ও লিয়ন থেকে স্পিনটাই আগে চাইবে দল। এটাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশের উইকেট স্পিননির্ভর। স্পিনটা এ সিরিজে দুই দলের জন্যই আতঙ্কেরও। তাই দুই দলের দুই সেরা স্পিনারের কাছ থেকে বিশেষ কিছু চাওয়া রয়েছে দলের। দুই দলেরই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার বলতে এ তিনজন করেই। এ তিন ক্রিকেটারের হিসেবে মুশফিক, তামিম, সাকিব মিলে ১৫২ টেস্ট ও স্মিথ, ওয়ার্নার ও লিয়ন মিলে ১৮৫ টেস্ট খেলেছেন। এক্ষেত্রে ৩৩ টেস্ট বেশি খেলা হয়েছে অসিদের। তবে বর্তমান নৈপুণ্য বিবেচনায় এবং অভিজ্ঞতায় মুশফিক, তামিম, সাকিব অনেক এগিয়ে থাকছেন। সর্বশেষ পাঁচ টেস্টে মুশফিক দুটি সেঞ্চুরি ও দুটি হাফসেঞ্চুরি করেছেন। তামিম ইকবাল তিনটি হাফসেঞ্চুরি করেছেন। সাকিব দুটি সেঞ্চুরি ও দুটি হাফসেঞ্চুরি করেছেন। এরমধ্যে একটি ডাবল সেঞ্চুরিও রয়েছে। বল হাতে আবার ১৭ উইকেট নিয়েছেন। সেখানে স্মিথ সর্বশেষ ৫ টেস্টে তিনটি সেঞ্চুরি ও একটি হাফসেঞ্চুরি করেছেন। ডেভিড ওয়ার্নার এক সেঞ্চুরি ও এক হাফসেঞ্চুরি করেছেন। নাথান লিয়ন শুধু স্পিনার। তিনি ৩১ উইকেট নিয়েছেন। তিন ক্রিকেটারের মধ্যে একদিকে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকছে। সাকিব অলরাউন্ডার। ব্যাট ও বল হাতে দুর্দান্ত খেলছেনও। বাংলাদেশের মাটিতে খেলা। তাই বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা ভাল করেই জানেন কিভাবে খেলতে হবে। উপমহাদেশে অস্ট্রেলিয়ার বাজে রেকর্ড রয়েছে। এবার বাংলাদেশের মাটিতেও নিশ্চয়ই তেমন অভিজ্ঞতাই হবে অসিদের। সেই আশা সবার। সেই আশার পালে হাওয়া দিতে পারেন মুশফিক, তামিম, সাকিব। অস্ট্রেলিয়াকে বাঁচালে স্মিথ, ওয়ার্নার ও লিয়নই বাঁচাতে পারেন।
×