ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পেঁয়াজ ও চালের দাম কমছে, বাড়ছে সবজি ও মাছের

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২৬ আগস্ট ২০১৭

পেঁয়াজ ও চালের দাম কমছে, বাড়ছে সবজি ও মাছের

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজ ও চালের দাম। কোরবানি সামনে রেখে ব্রয়লার মুরগির দাম ও চাহিদা কমেছে। বেড়ে যাচ্ছে সবজি ও মাছের দাম। ভোজ্যতেল, চিনি, আটা ও ডালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। রাজধানীর কাওরান বাজার, কাপ্তান বাজার, মিরপুর সিটি কর্পোরেশন মার্কেট, মোহাম্মদপুর টাউন মার্কেট এবং নিউমার্কেট ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। পেঁয়াজ ও চালের দাম কিছুটা কমায় স্বস্তি বিরাজ করছে বাজারে। কোরবানি সামনে রেখে এ সময়টাতে সবচেয়ে বেশি চাহিদা তৈরি হয় পেঁয়াজের। দুসপ্তাহ আগে হঠাৎ করেই দ্বিগুণ দামে ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হয় প্রতিকেজি পেঁয়াজ। সেই পেঁয়াজ জাত ও মানভেদে এখন ৪৫ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরবরাহ বাড়ায় পেঁয়াজের দাম আরও কমতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। একই অবস্থা মোটা চালের ক্ষেত্রে। আমদানি বেড়ে যাওয়ায় কেজিতে ১-২ টাকা কমেছে মোটা চালের দাম। তবে চিকন ও উন্নতমানের চালের দাম কমছে না। বর্তমান প্রতিকেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৩-৪৫ টাকায়। এছাড়া সরু ও চিকন চাল কিনতে ভোক্তাকে ৫২-৫৮ টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। এদিকে, কোরবানি সামনে রেখে বাজারে সব ধরনের মাংসের চাহিদা কমে গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যারা কোরবানি করবেন তারা এখন আর মাংস না কিনে বরং ফ্রিজ খালি করছেন। নতুন করে কেউ আর মুরগি ও অন্যান্য মাংস কিনছেন না। এতে করে বাজারে সব ধরনের মাংসের চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। কাপ্তান বাজারের মুরগি বিক্রেতা হাবিব জনকণ্ঠকে বলেন, কোরবানি সামনে-এ কারণে মুরগির বিক্রি কমে গেছে। একান্ত প্রয়োজন না হলে কেউ মুরগি কিনছে না। সবাই কোরবানির মাংস ফ্রিজে ঢোকানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১২৫-১৩৫, দেশী মুরগি প্রতিপিস ৩৭০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে মাছের বাজার চড়া। দেশীয় জাতের সব ধরনের মাছ বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে। চড়া ইলিশ মাছের দামও। প্রতিজোড়া মাঝারি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৬শ’ থেকে ২ হাজার টাকা। এছাড়া বন্যা ও ভারি বৃষ্টির কারণে এ বছর সবজিক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে সবরবরাহ কমে যাওয়ায় বেড়ে গেছে সবজির দাম। বাজারে আলু ২০-২৫, পটোল ৬০ থেকে ৭০, বরবটি ৩০, কাঁকরোল ৬০, গোলবেগুন ৬০ থেকে ৬৫, ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০, শসা ৬০ থেকে ৭০, মরিচ ১০০, চিচিঙ্গা ৭০ থেকে ৮০ এবং মূলা ৪০ টাকা দরে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে। কাওরান বাজারের খুচরা বিক্রেতা জামাল বলেন, সবজির বাজারে এখন ক্রেতাদের চাপ বেশি। সামনে কোরবানির ঈদ, তাই মানুষ এখন সবজির দিকেই বেশি ঝুঁকছে। আর পাইকারি বাজারে দাম না কমলে খুচরা বাজারেও দাম কমার কোন সুযোগ নেই। এছাড়া ঈদের কারণে পাইকারি বাজার থেকে সবজি যারা পরিবহন করে এনে দেয় তাদের আগের থেকে বেশি টাকা দিতে হচ্ছে। এ কারণেই দাম কিছুটা বেশি। এছাড়া সবজিটানা ট্রাকগুলো এখন গরু বহন করছে। এ কারণে ট্রাক ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় সবজির সরবরাহ হ্রাস পাচ্ছে। এদিকে, আগের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে অধিকাংশ মুদি পণ্যের দাম। বাজারে কেজি প্রতিছোলা ৮৫ টাকা, দেশী মুগ ডাল ১৩০ টাকা, ভারতীয় মুগ ডাল ১২০ টাকা, মাসকলাই ১৩৫ টাকা, দেশী মসুর ডাল ১২৫ টাকা, ভারতীয় মসুর ডাল ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ব্র্যান্ডভেদে ৫ লিটারের বোতল ৫৩০-৫৪০ টাকা, এছাড়া প্রতিলিটার ১০৭ টাকা থেকে ১০৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা স্বর্ণা চাল প্রতিকেজি ৪৩-৪৪ টাকা, পারিজা চাল ৪৩ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মিনিকেট (ভাল মানের) ৫৬-৫৮ টাকা, মিনিকেট (সাধারণ) ৫৩ টাকা, বিআর-২৮ ৪৮-৫০ টাকা, সাধারণ মানের নাজিরশাইল ৫০ টাকা, উন্নত মানের নাজিরশাইল ৫২-৫৮ টাকা, পাইজাম চাল ৪৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকার ভেদে সব মাছের দাম বেড়েছে। প্রতিকেজি রুই মাছ ২৮০-৪০০ টাকা, সরপুঁটি ৩৮০-৪৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ২৫০-৩০০ টাকা, চাষের কৈ ৩০০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাঙ্গাস প্রতিকেজি ১৫০-২৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০-৮০০ টাকা এবং আকার ভেদে চিংড়ি ৫৫০-১২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
×