ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সুর নরম করলেন ব্রেক্সিটমন্ত্রী

ব্রেক্সিটের পরও ইসিজের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে ব্রিটেন

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ২৫ আগস্ট ২০১৭

ব্রেক্সিটের পরও ইসিজের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে ব্রিটেন

যুক্তরাজ্য সরকার মঙ্গলবার বলেছে, ব্রেক্সিটের পর ব্রিটেনের বিচার প্রক্রিয়ায় ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিসের সঙ্গে সম্পর্ক থাকতে পারে। বিরোধীপক্ষ এটিকে সরকারের আগের দেয়া অবস্থান থেকে সরে আসা বলে চিহ্নিত করেছে। এএফপি। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন শুরু থেকেই দাবি করে আসছে, ব্রিটেনে বসবাসরত ইউরোপীয় নাগরিকদের অধিকারের সুরক্ষার জন্য ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিস-সিজেইইউর কর্তৃত্ব বা এখতিয়ার সে দেশে বলবৎ থাকা উচিত। পক্ষান্তরে এর আগে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ ব্রেক্সিটের পর তাদের দেশে সিজেইইউর কোন ধরনের কর্তৃত্ব বা এখতিয়ার না থাকার পক্ষে তাদের একরোখা মনোভাব প্রকাশ করে আসছিল। আগামী সপ্তাহে ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিতব্য যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈঠকে পেশ করার জন্য গৃহীত পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব ব্রিটেনে সিজেইইউর ভূমিকা যেন অনেকটা পরোক্ষভাবে স্বীকার করে নেয়া হলো। এ সংক্রান্ত মূল দলিল প্রকাশ হওয়ার আগে ব্রেক্সিট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘ব্রেক্সিট পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হওয়ার পর, সদস্য নয় এমন একটি রাষ্ট্রের (ব্রিটেন) ওপর সিজেইইউর সরাসরি এখতিয়ার প্রয়োজনীয় বা প্রযোজ্য নয়। এটি হলে, তা হবে একটি অভূতপূর্ব ব্যবস্থাপনা।’ এছাড়াও ব্রিটেনের পক্ষ থেকে যুক্তি প্রদর্শন করা হয়েছিল, আন্তর্জাতিক চুক্তির সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোন বিষয়ের নিষ্পত্তি সিজেইইউর সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়া বিদ্যমান আইনেই করা সম্ভব। ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল দলের বিরোধীপক্ষ সিজেইইউর সরাসরি এখতিয়ার কথাটিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। তাদের মতে, এর মাধ্যমে ইউরোপীয় কোর্ট অব জাস্টিসকে ভবিষ্যতে যুক্তরাজ্যের আদালতগুলোকে প্রভাবিত করার সুযোগ রাখা হলো। এ প্রসঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নপন্থী লেবার পার্টির পার্লামেন্ট সদস্য চুকা উমুন্না বলেছেন, হঠাৎ করে ডাইরেকট শব্দ বসিয়ে গোল পোস্ট সরিয়ে নেয়ার মতো ঘটনা ঘটল। এতে ভবিষ্যতে ব্রেক্সিট নিয়ে দরকষাকষির সময় ব্রিটিশ পক্ষের অবস্থান বদল করা সহজতর হবে। ইইউপন্থী লিবারেল ডেমোক্রেট নেতা ভিন্স ক্যাবল বলেছেন, এই প্রস্তাব একটি যুক্তিগ্রাহ্য ও বহু প্রতীক্ষিত ছাড় যা অনেক আগেই উপস্থাপন করার প্রয়োজন ছিল। গত বছরে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্যপদ ত্যাগ নিয়ে গণভোটের সময় ব্রেক্সিট পন্থীদের অন্যতম মূল দাবি ছিল ইউরোপ থেকে ব্রিটেনে অভিবাসী সংখ্যা কমানো এবং দেশটিতে ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিসের বিচার ক্ষমতার অবসান ঘটানো। এবং গণভোটে ব্রেক্সিটের পক্ষে রায় পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে রক্ষণশীল দলের এক সম্মেলনে বেশ দৃঢ়ভাবেই বলেছিলেন, ‘আমরা যখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করে আসব তখন ইউরোপীয় কোর্ট অব জাস্টিসকে (ইসিজে) ছেড়ে আসব। কিন্তু গত বুধবার টেরেসা মে তার বক্তব্যে বলেন, ব্রিটেন তার নিজ ভূখ-ে নিজস্ব আইনী পথ অনুসরণ করবে এবং একই সঙ্গে তার সরকার ব্রেক্সিটের পরও যাতে ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিস ইসিজে ব্রিটেনে অবস্থানরত ইইউ নাগরিকদের স্বার্থরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে। এর মাধ্যমে বেক্সিট কার্যকরের চূড়ান্ত সময় পর্যন্ত (২০১৯ সাল) প্রায় তিন বছর ইসিজে ব্রিটেনের মাটিতে তার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে।
×