ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কী ঘটছে ইংলাকের ভাগ্যে

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ২৫ আগস্ট ২০১৭

কী ঘটছে ইংলাকের ভাগ্যে

থাইল্যান্ডের লোকজন গভীর উৎকণ্ঠা নিয়ে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার চাল ভর্তুকি নিয়ে দুর্নীতি মামলার রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি অবৈধভাবে চালে ভর্তুকি দিয়ে দেশের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন। আজ সুপ্রীমকোর্টের এ রায়ে তার ১০ বছর কারাদ- হতে পারে। ব্যাঙ্কক পোস্ট। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার সমর্থকেরা তার প্রতি সমর্থন জানাতে কোর্টের বাইরে অবস্থান নিতে পারেন। থাই কর্তৃপক্ষ হুঁশিয়ারি দিয়েছে, কোর্টের কাছে ইংলাকের সমর্থনে যানবাহন দিয়ে কেউ সহায়তা দিলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইংলাকের বিরুদ্ধে সুপ্রীমকোর্টের এই রায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইংলাকের ভাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার বিরুদ্ধে প্রায় এক দশক ধরে কোর্টে মামলা চলছে। ২০০৬ সালে দুর্নীতি ও রাজাকে অসম্মানের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন। টেলিকমিনিকেশন জায়ান্ট থাকসিন ২০০৮ সালে স্বার্থের দ্বন্দ্বের সংঘর্ষে জড়িয়ে কারাগারে না যেতে স্বেচ্ছায় দেশ ত্যাগ করেন। থাকসিনের সমর্থকরা, বিশেষ করে, গ্রামের দরিদ্র ও অবস্থা সম্পন্ন নয় এমন লোকেরা, যারা তাকে নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হতে সহায়তা করেছিলেন, তাদের সঙ্গে বিরোধীদের বছরব্যাপী সংঘর্ষের কারণে ২০০৬ সালে থাকসিনকে ক্ষমতা ছাড়তে হয়। থাকসিনের বিরোধীপক্ষরা মূলত রাজার অনুগত শহরের মধ্যবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্রেণী এবং সেনাবহিনীর সদস্য। এরাই ২০১৪ সালে দেশটির নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ইংলাককে ক্ষমতাচ্যুত করেন। ইংলাক আদালতের রায়ের আগের দিনগুলোতে শান্তশিষ্ট আছেন। এদিকে শুক্রবার সুপ্রীমকোর্টের রায়ে ইংলাকের ‘বিজয়ের’ জন্য বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে প্রার্থনা করা হয়। থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলের নারেসুয়ান ইউনিভার্সিটির রাজনীতি বিজ্ঞানী পল চেম্বারস বলেন, ‘আদালত যদি (ইংলাকের বিরুদ্ধে) অভিযোগ প্রমাণ না করতে পারে, জেনারেলদের মুখ চুনকালি পড়বে।’ তিনি আরও বলেন, আর যদি ইংলাক দোষী প্রমাণিত হন, ‘তাহলে পরবর্তীতে কে আসছেন সে বিষয়ে জেনারেলরা চুক্তিতে যাবে এবং এটি হবেন একজন শহীদ ব্যক্তি।’ চাল ভর্তুকি নীতির কারণেই মূলত ইংলাকের রাজনৈতিক দল ২০১১ সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে। কৃষকরা বাজার থেকে যা পান থাই সরকার তার প্রায় ৫০ শতাংশেরও বেশি তাদের ভর্তুকি হিসেবে দেয়। চাল-উৎপাদনের মাধ্যমে অন্য দেশগুলো বাজার দখল করে নেয়ায় বিশ্বের সবচেয়ে বৃহত্তম চাল আমদানিকারক দেশ থাইল্যান্ড চাল আমাদানির জন্য ভিয়েতনামের উপর নির্ভরশীল। প্রশাসনিক ক্ষয়ক্ষতির কারণে ইতোমধ্যে প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের জন্য ইংলাকে দায়ী করা হচ্ছে এবং এ কারণে তার ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। থাইল্যান্ডের ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষক নিফোন পাউপাংসাক্রন বলেন, ‘আমি মনে করি, পরিকল্পনাবিদেরা বিশ্ব চালের বাজারের সঙ্গে এই কর্মসূচীটি সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করেননি এবং চালের বাজার সম্বন্ধে বুঝতে পারেননি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই কর্মসূচীর ভাল দিকটাই তারা ভেবেছিলেন, যেটি আসলে অবাক হাওয়ার মতো বিষয় ছিল না। কারণ আমি বিশ্বাস করি, এই নীতির গোপন বিষয় ছিল নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া।’
×