ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ফের জাতীয় ঐক্যের ডাক বি চৌধুরী- ড. কামালের

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২৫ আগস্ট ২০১৭

ফের জাতীয় ঐক্যের ডাক বি চৌধুরী- ড. কামালের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ‘বিকল্প রাজনৈতিক জোট’ বা ‘বৃহত্তর রাজনৈতিক শক্তির উত্থান’ ঘটাতে ‘জাতীয় ঐক্যের’ ডাক দিয়েছেন ড. কামাল হোসেন ও একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। বৃহস্পতিবার বিকল্পধারার সভাপতি বি চৌধুরীর প্যাডে তার প্রেস সচিব জাহাঙ্গীর আলমের স্বাক্ষরে গণমাধ্যমে পাঠানো যৌথ ঘোষণার কথা জানানো হয়। এর আগেও জাতীয় ঐক্যের কথা বলে রাজনীতিতে নানা কারণে বিতর্কিত ও সমালোচিত এই দুই নেতা হাত মিলিয়েছিলেন। যদিও সেই বন্ধুত্ব ছিল ক্ষণস্থায়ী। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতাদের একজন হলেন বি চৌধুরী। বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তিনি রাষ্ট্রপতি ছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। বিএনপির সঙ্গে মতবিরোধে টিকতে না পেরে দল থেকেও তাকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর তিনি বিকল্পধারা করেন। তবে একাধিকবার হাত মেলান এলডিপির কর্নেল অলীর সঙ্গে। সেখানেও এক সঙ্গে পথচলা হয়নি। যদিও অলী ছিলেন বিএনপির দলছুটদের একজন। আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেতা কামাল হোসেন। এক সময় আওয়ামী লীগ সরকারের আইন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন তিনি। এখন গণফোরাম নিয়েই কোন রকম টিকে আছেন। বলতে গেলে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির এক সময়ের নেতা বি চৌধুরী এবং গণফোরাম সভাপতি ও আওয়ামী লীগের এক সময়ের নেতা কামাল হোসেন দুই প্রধান জোটের বাইরে আলাদা জোট গঠনে অনেক দিন থেকেই সক্রিয় রয়েছেন। তাদের যৌথ ঘোষণায় দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে হতাশা প্রকাশ করে বলা হয়, ‘এই পরিস্থিতিতে জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি অহিংস বিকল্প রাজনৈতিক ধারা গড়ে তোলা সময়ের দাবি। দশম সংসদ নির্বাচনের আগে এনডিএফ নামে একটি জোট গঠন করেছিলেন বি চৌধুরী, যাতে কৃষক, শ্রমিক, জনতা লীগের কাদের সিদ্দিকী, জাসদের (জেএসডি) নেতা আ স ম আবদুর রবও ছিলেন। এবারও একটি জোট গঠনের প্রক্রিয়ায় রয়েছেন বি চৌধুরী, এই প্রক্রিয়ায় কামাল হোসনের পাশাপাশি নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি দল যুক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে। ২০১২ সালে এক অনুষ্ঠানে জাতীয় ঐক্যর দিয়েছিলেন বি চৌধুরী ও কামাল হোসেন। তার আগে ২০০৮ সালের নির্বাচনের সময় যুক্তফ্রন্ট গড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন বি চৌধুরী ও কামাল হোসনে। তারপর ২০১২ সালে একবার তারা জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন। যৌথ ঘোষণায় একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলা হয়, দেশকে যারা ভালবাসেন, যারা দেশের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী, তাদরে একটি প্রগতিশীল, পাহাড় ও সমতলে মানুষসহ সব সম্প্রদায়রে পূর্ণ অধিকার সম্পন্ন একটি বাংলাদশে গড়ার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়া আহ্বান জানাচ্ছি। রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থার ‘র্অথবহ পরবর্তনের’ লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হতে আহ্বান জানান প্রবীণ এই দুই রাজনীতিবিদ। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মহান স্বাধীনতা অর্জনের মধ্য দিয়ে সর্বস্তরেরের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের যে স্বপ্ন রচিত হয়েছেÑ বাংলাদেশের মানুষ সে স্বপ্নের পূর্ণ বাস্তবায়ন চায়। যারা এ স্বপ্নে বিশ্বাসী তাদের আজ কাছাকাছি আসতে হবে যৌথ ঘোষণায় তারা আরও বলেন, ‘আগামী সংসদ নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ এবং অবাধ, সুুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনী আইন ও নির্বাচন ব্যবস্থার দাবিতে এবং দারিদ্র্যমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত এবং সন্ত্রাসমুক্ত একটি সুখী ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি ছাত্র সমাজ, শিক্ষিত ও সুধীজন, আইনজ্ঞ, চিকিৎসক, মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারবর্গ, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, কৃষক, সাবেক সরকারী-বেসরকারী কর্মকর্তা- কর্মচারী ও অন্য পেশাজীবী মানুষের সমন্বয়ে বৃহত্তম একটি রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটাতে হবে।’ দীর্ঘদিন রাজনৈতিক সুবিধার বাইরে থাকা এই দুই নেতা আবারো ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। যদিও দলগত কোন শক্তি নেই। নেই নেতাকর্মী ও সমর্থক। সম্প্রতি বি চৌধুরীর বাসায় নতুন জোট গঠন করার লক্ষ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে জাতীয় পার্টিও পক্ষ থেকেও একজন প্রতিনিধি ছিল। নতুন জোট গঠন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মাহমুদুর রহমান মান্নাকে লিয়াজো কমিটির প্রধান করা হয়েছে। এছাড়া নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করতে রাজনৈতিক কর্মসূচীও ঘোষণার কথা রয়েছে।
×