ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর মেয়েকে হত্যাচেষ্টা ॥ কেউ গ্রেফতার হয়নি

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ২৫ আগস্ট ২০১৭

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর মেয়েকে হত্যাচেষ্টা ॥ কেউ গ্রেফতার হয়নি

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ নারায়ণগঞ্জে আলোচিত ৭ খুন মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) ওয়াজেদ আলী খোকনের মেয়ে মায়েশা ওয়াজেদ প্রাপ্তিকে মিষ্টির সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগের ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে শনাক্ত বা গ্রেফতারর করতে পারেনি। এ ঘটনায় প্রাপ্তির মা সেলিনা ওয়াজেদ মিনু বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটার দিকে নগরীর চাষাঢ়া বালুর মাঠ এলাকায় নিজ বাসভবনে পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন সাংবাদিকদের জানান, তার মেয়েকে অপহরণের উদ্দেশ্যে মিষ্টির সঙ্গে বিষ খাইয়ে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে। দুই দফা ওয়াশ করার পর চিকিৎসা শেষে তার মেয়েকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। ৭ খুনের মামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এ কারণে তার মেয়েকে অপহরণের চেষ্টা করা হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন। তিনি বলেন, কেন আমার মেয়েকে এ ঘটনার শিকার হতে হলোÑ তা তদন্ত করে দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে এটাই আমরা প্রত্যাশা করি। তিনি বলেন, আমাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করতে আমাকে না পেয়ে আমার পরিবারের ওপর হামলার চেষ্টা করা হতে পারে । এটি অনেক বড় হতে পারতো। তাকে অপহরণের উদ্দেশ্যে বিষাক্ত নেশাজাতীয় দ্রব্য খাওয়ানো হয়েছে। কেন গাড়ি ও আরও লোক ব্যবহার করা হবে? তাকে অপহরণের হত্যা ও গুম করা পারতো বলে তিনি জানান। তিনি আরও জানান, আমি ব্যক্তিগতভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি না। তবে ঘটনার পর থেকে এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার পথে পুলিশের সতর্ক প্রোটেকশন, এবং বাড়তি নিরাপত্তা দেয়া হয়েছেÑ এতে আমি বুঝতে পারছি পুলিশের কাছে হয়তো কোন মেসেজ আছে সেই জন্যই বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। তিনি বলেন, তার মেয়ে বর্তমানে সুস্থ আছে। মেয়ে মায়েশা ওয়াজেদ প্রাপ্তি সাংবাদিকদের বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় সে কোচিং শেষে সিঁড়ি দিয়ে নেমে যাওয়ার সময় অজ্ঞাত এক লোক (যার আনুমানিক বয়স হবে ৪৮ থেকে ৫২) তার বাবার পরিচিত বলে তাকে জিজ্ঞাসা করে তাকে চিনে কিনা? জবাবে সে বলে না। পরে সে আস্থা অর্জনের জন্য তার বাবার বন্ধু আনিছুর রহমান দীপু, চন্দনশীল, কাজলসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে। পরে তাকে বলে তোমার বাবা তো অনেক এচিভমেন্ট আছে। আসো তোমাকে মিষ্টি খাওয়াই। সে মিষ্টি খেতে না চাইলে ওই ব্যক্তি বারবার মিষ্টি খাওয়ার জন্য পিড়াপিড়ি করে। কথা বলার একপর্যায়ে লোকটি আমার মুখের মধ্যে একটি মিষ্টি ঢুকিয়ে দেয়। যার কারণে সে মিষ্টিটি গিলে ফেলতে বাধ্য হন। বিষয়টি আমার কাছে অন্য রকম মনে হলে আমি দ্রুত তাকে পাস কাটিয়ে বাড়ির বাইরে রাস্তায় এসে রিক্সা ঠিক করে বাসার উদ্দেশে রওনা দেই। রিক্সায় উঠে পেছনের দিকে চেয়ে দেখি লোকটি একটি সাদা প্রাইভেটকারে সামনের সিটে বসছে। পেছনের ছিটে আরও দুইজন লোক বসা। জোরপূর্বক মিষ্টি খাওয়ানো লোকটি গায়ের রং ফর্সা, পরনে স্টুট পরা ছিল। রিক্সাটি গলাচিপা মোড় এলে আমার বুক, পেট ও গলা জ্বালাপোড়া শুরু হলে বিষয়টি আমার বাবাকে জানাই। রিক্সাটি বালুর মাঠ এলে বাবা আমাকে উদ্ধার করে পরে হাসপাতালে নিয়ে যায়। রাতে ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসা শেষে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। আজ মায়েশার ‘ও’ লেভের পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে। সে সাতটি সাবজেেেক্টর মধ্যে পাঁচটিতে ‘এ’ এবং দুটিতে ‘বি’ পেয়েছে। তবে মিষ্টি খাওয়ানো লোকটি তাকে অপহরণের চেষ্টা চালায়নি বলে তিনি জানান। নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মীর শাহীন পারভেজ জানান, ঘটনার রহস্য উন্মোচনে পুলিশের তদন্ত অব্যাহত আছে। তদন্তের স্বার্থে অনেক কিছুই বলা যাচ্ছে না। তাকে বিষ জাতীয় জিনিস খাইয়ে অচেতন করতে পারলে হয়তো তাকে অপহরণ করতে পারত।
×