ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজ মামলায় সাক্ষীদের জেরার দিন ধার্য

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ২৫ আগস্ট ২০১৭

প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজ মামলায় সাক্ষীদের জেরার দিন ধার্য

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ১৯৯৬ সালে শেয়ার কেলেঙ্কারির ঘটনায় প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজ মামলায় সাক্ষীদের জেরা করার জন্য আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে। আসামিদের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজার-সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তিতে গঠিত বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক আকবর আলী শেখ এ দিন ধার্য করেছেন। বৃহস্পতিবার মামলাটির পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন শুনানিতে আসামিদের আইনজীবী সাক্ষীদের জেরা করার জন্য সময় আবেদন করেন। এর আলোকে আদালত সময় মঞ্জুর করে এবং ২৪ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন। এ মামলাটিতে জেরা করার জন্য আদালত মোট ৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪ জনকে সমন জারি করেছেন। এরা হলেনÑআমিরুল হক চৌধুরী, প্রফেসর জহিরুল হক, মনির উদ্দিন আহমেদ ও মোঃ রুহুল খালেক। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর তাদের আদালতে উপস্থিত হওয়ার জন্য এই সমন জারি করা হয়েছে। এদিকে সাক্ষী এমএ রশীদ খানকে অনেক আগেই আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জেরা করেছেন। আর পরবর্তী সময়ে অপর ২ সাক্ষী দেলোয়ার হোসেন ও মুন্সী এনামুল হককে জেরা করা হবে। এর আগে শেয়ারবাজার বিষয়ক ট্রাইব্যুনালে মামলটির বিচারকার্য পরিচালনার জন্য ২৪ জুলাই পূর্বনির্ধারিত থাকলেও ওইদিন আসামিরা ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়নি। এতে বাদীপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করেছিলেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক। যা পরবর্তীতে ৯ আগস্ট আসামিরা ট্রাইব্যুনালে জামিন আবেদন করেন। এর আলোকে বিচারক তা মঞ্জুর করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মাসুদ রানা খান বলেন, এ মামলায় অভিযুক্ত আনু জায়গীরদার এবং মশিউর রহমানের আইনজীবী সাক্ষীদের জেরা করার জন্য সময় আবেদন করে। তা ট্রাইব্যুনাল মঞ্জুর করেছেন। এছাড়া মামলাটির বিচার কাজ পরিচালনার জন্য আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন। এদিন ট্রাইব্যুনালে আসামিদের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে মোঃ মহসীন রশীদ ও আবদুল কাদের মোল্লা উপস্থিত ছিলেন। এ মামলার আসামিরা ছিলেনÑ প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজসহ প্রতিষ্ঠানটির তৎকালীন চেয়ারম্যান এমএ রউফ চৌধুরী, পরিচালক সাঈদ এইচ চৌধুরী ও আনু জায়গীরদার এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমান। এরই মধ্যে চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল র‌্যাংগস গ্রুপের কর্ণধার এমএ রউফ চৌধুরী ও এইচআরসি গ্রুপের চেয়ারম্যান সাঈদ এইচ চৌধুরী বেকসুর খালাস পেয়েছেন। অন্যদিকে এ মামলায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে আসামি মশিউর রহমান ও আনু জায়গীরদারের বিচারকাজ বন্ধ ছিল। যা গত ২ মে পর্যন্ত কার্যকরী ছিল। এরপরে মশিউর রহমান ও আনু জায়গীরদারের বিচারকাজ আবার শুরু হয়। এই মামলায় মশিউর রহমান ও আনু জায়গীরদারের বিচারকাজে দুই দফায় ৬ মাস করে এক বছরের স্থগিতাদেশ দেন উচ্চ আদালত। প্রথমবার ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল এ বিচারকাজে ৬ মাসের স্থগিতাদেশ দেয়া হয়। স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষে ২৯ নভেম্বর দ্বিতীয়বারের মতো ৬ মাসের স্থগিতাদেশ দেয় আদালত। মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামিরা প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজের নামে ১৯৯৬ সালের জুলাই থেকে নবেম্বর পর্যন্ত প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার লেনদেন করেছেন। এ সময়ে তারা মিতা টেক্সটাইল, প্রাইম টেক্সটাইল, বাটা সুজ ও বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার লেনদেন করেন। প্রতিষ্ঠানটি ওই সময়ে মোট ১২৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা লেনদেন করে। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি শুধু ফরেন ডেলিভারি ভার্সেস পেমেন্টের (ডিভিপি) মাধ্যমে ৮৫ লাখ টাকা লেনদেন করে। এ সময় এক নম্বর আসামি প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজ ওই সময়ে ২১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৩টি শেয়ার বিক্রি করে, যার মূল্য ছিল ৬৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা। স্টক এক্সচেঞ্জের রেকর্ড মোতাবেক আসামিরা এসিআই লিমিটেডের ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮১৯টি শেয়ার বিক্রি করেন। অথচ ব্যাংক রেকর্ড অনুযায়ী, শেয়ার বিক্রির পরিমাণ ২ লাখ ৩৪ হাজার ৫৩৮টি, যার মধ্যে ফরেন ডিভিপির মাধ্যমে লেনদেন অনিষ্পত্তি হওয়া শেয়ারের পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।
×