ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

টেকসই উন্নয়নে তহবিল গঠনের তাগিদ

প্রকাশিত: ০৩:৫৪, ২৫ আগস্ট ২০১৭

টেকসই উন্নয়নে তহবিল গঠনের তাগিদ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশে টেকসই অর্থায়নের সুফল পেতে নীতিনির্ধারকদের সমন্বিত উদ্যোগ এবং কার্যক্রম গ্রহণ করা প্রয়োজন। আর এ উন্নয়নের জন্য তহবিল গঠনের তাগিদ দিলেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, তবে এটা ব্যাংকের ওপর চাপিয়ে দিলে ব্যাংক তা করবে না। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একটা কোর ফান্ড গঠন করতে পারে। যেখানে সরকারের বাজেট থেকে কোর ফান্ডে টাকা জমা হবে। এ ফান্ডে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও টাকা জমা করবে। এছাড়া নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে অর্থায়নের ক্ষেত্রে ‘সাসটেইনেবল এ্যান্ড রিনিউয়েবেল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (স্রেডা)’ সোলার হোম সিস্টেমের গুণগত মান নিশ্চিতকরণের দায়িত্ব পালন করতে পারে। এ ক্ষেত্রে সরকারের কাছ থেকে অনুদান পাওয়ার জন্য বিশেষায়িত শর্তাবলী ও নির্ধারণ করা যেতে পারে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক কম সুদে বাংক ও অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে পুনঃঅর্থায়নের জন্য ফান্ড গঠন করলে দ্রুত এ খাতে সফলতা আসবে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে ‘এক্সপ্লোরিং বেরির্য়াস অব সাসটেইনেবল ফিন্যান্স ইন ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর এ্যান্ড পলিসি প্রোপজিশনস টু রিমুভ দ্য বেরিয়ার’ শীর্ষক গবেষণা কর্মশালায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। বিআইবিএম এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফিন্যান্স বিভাগ যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে। প্রধান অতিথি হিসেবে কর্মশালার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর এসকে সুর চৌধুরী। বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক, প্রশিক্ষণ ড. শাহ্ মোঃ আহসান হাবীবের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি গবেষক দল কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেনÑ বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফিন্যান্স বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মনোজ কুমার বিশ্বাস। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর এসকে সুর চৌধুরী বলেন, ১৯৯৭ সালে গ্রীন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতে টেকসই অর্থায়ন শুরু হয়। টেকসই অর্থায়নের দ্রুত সফলতার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত এ খাতে বেশকিছু সমস্যা রয়েছে, যা দূর করতে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গবর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটা তহবিল গঠন করতে হবে। তবে এটা ব্যাংকের ওপর চাপিয়ে দিলে ব্যাংক তা করবে না। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একটা কোর ফান্ড গঠন করতে পারে। যেখানে সরকারের বাজেট থেকে কোর ফান্ডে টাকা জমা হবে। এ ফান্ডে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও টাকা জমা করবে। তিনি বলেন, শস্য বীমার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার তবে তা বাস্তবায়ন সহজসাধ্য নয়। কারণ এতে কৃষকের ব্যয় বেড়ে যাবে। বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক এবং পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকিং খাতে টেকসই অর্থায়নের ক্ষেত্রে দক্ষতা উন্নয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের বাজেট রাখতে হবে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ রাখতে চায় না। তিনি বলেন, ইদানীং সব ক্ষেত্রেই ব্যাংকগুলোর মধ্যে একটা অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে। কিন্তু টেকসই অর্থায়নের ক্ষেত্রে সবাইকে একই ছাতার নিচে আসতে হবে। বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ইয়াছিন আলি বলেন, ভবিষ্যত প্রজন্মের মাঝে আর্থিক শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে হবে। তাই শুরু থেকেই ভবিষ্যত প্রজন্মকে পরিবেশবান্ধব ব্যাংকিং, স্কুল ব্যাংকিংসহ অন্য বিষয়ে ধারণা দিতে হবে। এ জন্য ষষ্ঠ শ্রেণী থেকেই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আর্থিক শিক্ষার কাঠামো গড়ে তোলা উচিত। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক বছর ধরে শস্য বীমা চালু করার কথা বলা হলেও তা আলোর মুখ দেখছে না। একইসঙ্গে সবুজ অর্থায়নের জন্য কোন প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে না। প্রশিক্ষণ এবং গবেষণার মাধ্যমে মানবসম্পদের উন্নয়ন করতে হবে।
×