ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অবিনাশ পুরকায়স্থ

পাঠাভিনয়ে শ্রাবণ ট্র্যাজেডি

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২৪ আগস্ট ২০১৭

পাঠাভিনয়ে শ্রাবণ ট্র্যাজেডি

মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের ৪০তম প্রযোজনা নাটক শ্রাবণ ট্র্যাজেডি মঞ্চায়নের প্রাক প্রস্তুতির ধারাবাহিকতায় গত ১৬ আগস্ট ২০১৭ ইং সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশে শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে বরেণ্য নাট্যজন মঞ্চসারথি আতাউর রহমান এবং নাট্যজন নাসির উদ্দীন ইউসুফের আশীর্বচনের মাধ্যমে গবেষণালব্ধ নাটক শ্রাবণ ট্র্যাজেডি পাঠ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাট্যকার আনন জামান। মিলনায়তনপূর্ণ দর্শক শ্রোতা নাটকের মানুষের পিনপতন নিস্তবদ্ধতার মধ্যে ১ ঘণ্টা ২০ মিনিটের পান্ডুলিপিটি পাঠ শেষ হয়। শ্রাবণ ট্র্যাজেডি নাাটক পাঠাভিনয় শেষে বোঝা যায় নাটকটির কাহিনী গড়ে উঠেছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবার পরিজনদের সুপরিকল্পিত নৃশংস হত্যাকা-ের প্রেক্ষাপট নিয়ে। এক ভূখ- মানুষ যখন পরাধীনতার শিকল পায়ে ভাঙনের কিনারে এসে দাঁড়ায় তখন প্রয়োজন হয়ে পড়ে- এক দাপুটে দিব্য মানুষ আর অলৌকিক তর্জনীর। যার ডাকে আর ইশারায় বটপাতার ছায়ার তলে অথবা দিগন্ত বিস্তৃত খোলা মাঠে অথবা ফসলী খেতের আলপথে নিবিড় হয়েছিল এক ভূখ- জনমানুষ। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান- সাহসের অগ্নিশিখা জ্বেলে দিয়েছিলেন বাঙালীর মানসপটে। তার রাজনৈতিক সত্যনিষ্ঠ দৃঢ়তা- উদ্যম সঞ্জারী উচ্চারণ- দূরদর্শিতা- মানুষের প্রতি ভালবাসা- বিশ্ব রাজনীতিতে- তাকে আলাদাভাবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। সাধারণ মানুষের সঙ্গে তার সখ্য ও সম্পর্ক আন্তর্জাতিক রাজনীতির ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্ত। যুদ্ধবিধ্বস্ত রাষ্ট্রটিকে সুসংহত করার প্রত্যয়ী মানুষটাকে- ক্ষমতালোভী রাজনৈতিক আর সামরিক বেনিয়াদের সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রে সপরিবারে হত্যা করা হলো- স্বাধীন রাষ্ট্রের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে। ক্ষমতার চেয়ারে বসে থাকা শাষকদের যোগসাজশে নেপথ্যে থেকে গেল হত্যার সিলেবাস রচনাকারী আন্তর্জাতিক ও দেশীয় রাজনৈতিক এবং সামরিক কুচক্রী দানব। হত্যাকারীরা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পেল- পুরস্কার। নষ্ট ইতিহাস রচনার ধোয়াশায় আড়াল করা হলো- প্রকৃত খুনীদের। হত্যা সহযোগীরা কেউ কেউ পেল বেকসুর খালাস। প্রত্যক্ষ খুনীদের কেউ কেউ এখনও বহাল তাবিয়তে অবস্থান করছে বিদেশে। রাতের আন্ধারিতে এই গোপন হত্যায় মহান নেতাকে নিঃশেষ করতে পারেনি বরং বাংলার মানুষ আর বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাস আর অনুশীলনে তার আদর্শ আরও বেশি প্রাণময়- শাণিত হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে তার নিবিড় সম্পর্ক প্রকাশিত হয় মহাকালের নতুন রচনায়। আড়ালে থাকা খুনীদের মুখ আর লোভ উন্মোচিত হয় বর্তমানের আলোয়- তাদের দাঁড় করিয়ে দেয়া হয় বিচারের কাঠগড়ায়। বাংলাদেশের মানুষের জীবনের সকল অমঙ্গল ঘুছিয়ে মঙ্গল বার্তা ঘোষিত হওয়ার রূপকার যে বঙ্গবন্ধু সেটিও স্পষ্ট পাঠাভিনয়ে। দীর্ঘ ৯ মাসের এই পা-ুলিপি প্রস্তুতির গবেষণা, নির্মাণ ও বিনির্মাণের নেপথ্যে দায়িত্বশীল ভূমিকায় ছিলেন আনন জামানসহ এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, ইউসুফ হাসান অর্ক, দল প্রধান মীর জাহিদ হাসান ও মোঃ সানোয়ার। নাটকটির মঞ্চায়নকালে নির্দেশনার দায়িত্ব পালন করবেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান ইউসুফ হাসান অর্ক।
×