ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

রায়ের পর্যবেক্ষণ প্রত্যাহার করুন ॥ প্রধান বিচারপতির প্রতি আমু

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২৪ আগস্ট ২০১৭

রায়ের পর্যবেক্ষণ প্রত্যাহার করুন ॥ প্রধান বিচারপতির প্রতি আমু

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর রায়ে দেয়া পর্যবেক্ষণ প্রত্যাহারের জন্য প্রধান বিচারপতির প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে আদালতের রায়ে যে পর্যবেক্ষণ দেয়া হয়েছে তা শুধু অপ্রাসঙ্গিক, অনভিপ্রেত নয়, তা দুঃখজনক। অনতিবিলম্বে তা প্রত্যাহার করতে হবে। পর্যবেক্ষণ প্রত্যাহার করা না হলে এ নিয়ে দেশে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে তার দায়ভার তাকেই (প্রধান বিচারপতি) গ্রহণ করতে হবে। এ বিষয়ে আপনার কোন্ ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া উচিত প্রধান বিচারপতি হিসেবে আপনাকেই তা বুঝতে হবে। বুধবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে শিল্পমন্ত্রী আমু বলেন, ষোড়শ সংশোধনীর রায়ে দেয়া পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধে আদালতের ভূমিকাকে খাটো করা হয়েছে। কারণ, তৎকালীন হাইকোর্টের বিচারপতি টিক্কা খানকে শপথ পড়াতে রাজি হননি। আর ষোড়শ সংশোধনীর রায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে যে পর্যবেক্ষণ দেয়া হয়েছে তা মুক্তিযুদ্ধে আদালতের ভূমিকাকে ম্লান করেছে। তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করে পাকিস্তানের সঙ্গে শিথিল কনফেডারেশন করার জন্যই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ক্ষমতা গ্রহণ করেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করে দেশকে নব্য পাকিস্তানে পরিণত করেছিলেন। আর তাই বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু করলে তাকে হত্যার জন্য ১৯ বার হামলা চালানো হয়েছিল। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৃত্যু ভয়কে জয় করে আন্দোলনের মাধ্যমে মানুষের ভোট-ভাতের অধিকারই শুধু প্রতিষ্ঠা করেননি, তিনি বঙ্গবন্ধুর খুনীদের যেমন বিচার করেছেন তেমনি যুদ্ধাপরাধীদেরও বিচার করেছেন। ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সভাপতি মাইনুল হোসেন খান নিখিলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাবান মাহমুদ, যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাট ও উত্তরের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র ছিল ॥ গণপূর্তমন্ত্রী গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পেছনে এক গভীর ষড়যন্ত্র ছিল। কতিপয় সেনাসদস্য বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, এটি মোটেও সঠিক তথ্য নয়। এ জাতি যাতে কোনদিন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে এমন ঘৃণ্য উদ্দেশেই বঙ্গবন্ধুর রক্তের সম্পর্কের সকলকেই ঘাতকরা হত্যা করতে চেয়েছিল। সৌভাগ্যক্রমে দেশে না থাকায় জাতির পিতার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রাণে বেঁচে যান। শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন বলেই বাংলাদেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হচ্ছে এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। বুধবার রাজধানীর রাজউক মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজউক শ্রমিক-কর্মচারী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আজীবন লড়াই করেছেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে, এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। ছয় দফা দেয়ার পর তৎকালীন অনেক রাজনীতিক এ দাবি থেকে সরে আসার জন্য বঙ্গবন্ধুকে চাপ দিয়েছেন। কিন্তু তিনি ছয় দফার সঙ্গে আপোস করেননি। ছয়দফা ছিল এ জাতির মুক্তির সনদ। এ জাতিকে মুক্তি দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে রাজনীতির প্রতিটি ধাপেই জাতির পিতা দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছেন। সংগঠনটির সভাপতি এম এ মালেকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ শহীদ উল্লাহ খন্দকার, রাজউকের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রহমান, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম। আলোচনা সভার শুরুতে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদতর কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধু’ প্রদর্শন করা হয় এবং বিশেষ দোয়া ও দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।
×