ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পবিত্র হজ ৩১ আগস্ট

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ২৪ আগস্ট ২০১৭

পবিত্র হজ ৩১ আগস্ট

স্টাফ রিপোর্টার। আগামী ৩১ আগস্ট পবিত্র হজ। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে বুধবার থেকে সৌদি আরবে শুরু হয়েছে হিজরি পঞ্জিকার জিলহজ মাস। সেই হিসেবে আগামী ৩১ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে হজ। সৌদি আরবের সুপ্রীমকোর্টের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, আগামী ৩০ আগস্ট ফজর থেকে শুরু হয়ে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হজের যাবতীয় কার্যক্রম চলবে। সে অনুযায়ী সৌদি আরবে ১ সেপ্টেম্বর ঈদ-উল-আযহা অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছর ২৫ লাখ মুসল্লি হজ পালন করবেন বলে জানিয়েছে সৌদি হজ মন্ত্রণালয়। এদিকে বাংলাদেশ থেকে মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত সরকারী ও বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় মোট ১ লাখ ৪ হাজার ৫০৬ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পরিচালিত ১৫৪টি এবং সৌদি এয়ারলাইন্স পরিচালিত ১৪৭টিসহ মোট ২৯৯টি হজ ফ্লাইটে তারা সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। বর্তমানে তারা মক্কা ও মদিনায় অবস্থান করছেন। ব্যবস্থাপনাসহ এ পর্যন্ত সৌদি দূতাবাস বাংলাদেশ থেকে মোট ১ লাখ ২৭ হাজার ৫৪৬ জনের ই-হজ ভিসা প্রদান করেছে। এ বিষয়ে বিমানের পরিচালক আলী আহসান বাবু জনকণ্ঠকে জানান, হজযাত্রী বহন নিয়ে আর কোন সঙ্কট নেই। সব আশঙ্কার অবসান ঘটেছে। বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত বিমানের যে সব ফ্লাইট অপারেট করার সিডিউল ছিল তাতে কমপক্ষে ৫৩ হাজার হজযাত্রী বহন সম্পন্ন হয়। এ হিসেবে আর মাত্র হাজার দশেক হজযাত্রী বাকি থাকে যা আগামী ২৮ আগস্টের মধ্যে অনায়াসে পরিবহন করা সম্ভব। এখন বিমানের অবস্থা সৌদিয়ার চেয়ে এগিয়ে। সৌদি আরবে গিয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত মোট ২৩ বাংলাদেশী ইন্তেকাল করেছেন। তাদের মধ্যে ২২ জন পুরুষ ও ১ জন নারী। ২৩ জনের মধ্যে মক্কায় ১৭ জন ও মদিনায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ হজ অফিসের একটি প্রতিনিধি দল মোয়াচ্ছাছার অফিসে এক বিশেষ আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভায় বাংলাদেশের হজযাত্রীদের জামারাতে পাথর নিক্ষেপের সময়সূচী এবং কোন কোন রাস্তা ব্যবহার করতে পারবেন তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। মৌসুমি হজ অফিসার এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী সরকারী হজ গাইডদের নিয়ে বুধবার মিনা ও আরাফাতের তাঁবু পরিদর্শনে যান। চলতি বছর সরকারী ও বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় মোট হজযাত্রীর সংখ্যা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রার প্রথম ফ্লাইট পৌঁছে ২৪ জুলাই। শেষ ফ্লাইট ২৮ আগস্ট। ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ৬ সেপ্টেম্বর ও শেষ ফিরতি ফ্লাইট ৫ অক্টোবর। মক্কা থেকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে জানান, হজে আসা মুসল্লিরা ৮ জিলহজ বা ৩০ আগস্ট মক্কা থেকে মিনার উদ্দেশে রওনা হবেন। সেখানে ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের পর ৩১ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে হজ। ওইদিন ফজরের নামাজের পর থেকে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আসা ২৫ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান আরাফাতের ময়দানে সমবেত হতে থাকবেন। স্থানীয় সময় বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে আরাফাত ময়দানের মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুৎবা দেয়া হবে। খুৎবা শেষে এক ইকামতে যোহর এবং আসরের নামাজ একসঙ্গে আদায় করবেন হাজিরা। সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে যাওয়ার পর হাজিরা আরাফা থেকে মুজদালিফার উদ্দেশে রওনা হবেন। মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব এবং এশার নামাজ একসঙ্গে আদায়ের পর সেখানে খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করবেন তারা। মুজদালিফায় থাকা অবস্থায় শয়তানকে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপের জন্য ছোট ছোট ৭২টি পাথর সংগ্রহ করবেন। ১০ জিলহজ বা ১ সেপ্টেম্বর মুজদালিফায় ফজরের নামাজ আদায় করে সূর্যোদয়ের পর মিনায় পৌঁছে বড় জামারা (বড় শয়তান)কে সাতটি পাথর নিক্ষেপ করবেন। সেখানে থেকে ফিরে পশু কোরবানি দিয়ে মাথার চুল মু-ন করে ইহরাম খুলে স্বাভাবিক পোশাক পরে মক্কায় গিয়ে কাবা শরীফ তাওয়াফ করবেন। কাবার সামনের সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে সাতবার দৌড়াবেন। সেখান থেকে তারা আবার মিনায় যাবেন। সেখানে আরও এক বা দুইদিন অবস্থান করে হজের অন্য আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করবেন। মিনার কাজ শেষে মক্কায় বিদায়ী তাওয়াফ করার পর যারা মদিনায় যাননি, তারা মদিনায় হযরত মোহাম্মদ (স) কবর জিয়ারত করতে যাবেন। এভাবেই সম্পন্ন করা হয় মুসলমানের জীবনের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুশাসন।
×