ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পুঁজিবাজারে বিবিএস কেবল নিয়ে অস্বস্তি

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ২৪ আগস্ট ২০১৭

পুঁজিবাজারে বিবিএস কেবল নিয়ে অস্বস্তি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের পরদিনই দরপতনের শীর্ষে উঠে এসেছে নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি বিবিএস কেবল। আর এই বিবিএস কেবলের ধাক্কাতেই পুঁজিবাজারের অন্যান্য কোম্পানির দরেও প্রভাব ফেলেছে। এছাড়া বাজার সংশ্লিষ্টরাও বিবিএস কেবলের ইস্যুটি নিয়ে কিছুটা অস্বস্তিতে রয়েছেন। কারণ, ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ার দর ১৪০ শতাংশ বাড়ার পর কমিটি গঠনের সমালোচনা করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রথম থেকেই ইনসাইডার ট্রেডিং হয়ে থাকলেও শুরুতেই নিয়ন্ত্রক সংস্থা ব্যবস্থা নিতে পারত বলে মনে করছেন তারা। অন্যদিকে নতুন কোম্পানিটির লোগো ব্যবহার করে বিদেশী উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চুক্তি করেছে বিবিএস কেবল লিমিটেড। এটি পৃথক কোম্পানি হলেও ব্যবসা সম্প্রসারণের খবরে পুঁজিবাজারে সদ্য তালিকাভুক্ত বিবিএস ক্যাবলসের শেয়ার দাম ‘অস্বাভাবিক’ হারে বেড়েছে। এটিও বাজারে শেয়ার দরকে প্রভাবিত করেছে। ক্ষতির শিকার হয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারী। তবে এটির পেছনেও কারসাজি রয়েছে বলেছেন বাজার বিশ্লেষকরা। এই বিষয়ে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বলছে, বিবিএস কেবল লিমিটেড পৃথক কোম্পানি হলেও বিবিএস কেবল বেশি পরিচিত। নতুন কোম্পানিকে পরিচিত করানো ও বিজ্ঞাপনের স্বার্থেই বিবিএস কেবলের লোগো ব্যবহার করা হয়েছে। বিবিএস কেবলের প্রধান অর্থ কর্মকতা (সিএফও) আমিনুল ইসলাম বলেন, চুক্তি হওয়া কোম্পানির আমাদের পৃথক কোম্পানি। বিবিএস কেবলের সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই। তবে বিজ্ঞাপনের স্বার্থে বিবিএস কেবলের লোগো ব্যবহার করা হয়েছে। এখন এই তথ্য দেখে বিনিয়োগকারী শেয়ার কিনলে আমরা কি করতে পারি। কেবলমাত্র লোগোটিই ব্যবহার করা হয়েছে। সূত্র জানায়, গত ১৮ আগস্ট বিবিএস কেবলের লোগো ব্যবহার করে বিবিএস কেবল ইউনিট-২ লিমিটেড মেশিনারিজ রফতানিতে বিদেশী বিনিয়োগকারীর সঙ্গে চুক্তি করে। কোম্পানিটির ২২০ কেভি ভোল্টেজের তার উৎপাদন করছে এমন একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে বিনিয়োগকারী শেয়ার কিনতে থাকে উচ্চ দরে। এটি একটি পৃথক ইউনিট হলেও সে বিষয়ে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ কোন তথ্য জানায়নি। নতুন কোম্পানির এভাবে দরবৃদ্ধি পাওয়াকে অস্বাভাবিক মনে করে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আগামী সাতদিনের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এর আগে গত ৮ আগস্ট ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের জানতে চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে শেয়ার দাম বৃদ্ধির বিষয়ে অপ্রকাশিত কোন তথ্য নেই। একটি অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে সংবাদ প্রকাশের সূত্র তুলে ধরে গত ২১ আগস্ট আবারও কারণ জানতে চিঠি দেয় ডিএসই। এই চিঠির জবাবে কোম্পানি জানিয়েছে, বিবিএস কেবল ও বিবিএস কেবল ইউনিট-২ দুটি আলাদা কোম্পানি। আর বিবিএস কেবল ইউনিট-২ লিমিটেড গত ১৮ আগস্ট বিদেশী বিক্রেতাদের কাছে মেশিনারিজ সরবরাহে চুক্তি সম্পন্ন করে। কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জানায়, বিবিএস কেবল বিখ্যাত কোম্পানি হওয়ায় এই কোম্পানির লোগো ব্যবহার করা হয়। বিশ্বের বিখ্যাত তার সরবরাহকারীদের আকর্ষণ করতে ও বিজ্ঞাপনের উদ্দেশ্যেই এটি করা হয়েছে। কোম্পানিটির আর্থিক হিসাব বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ৩১ জুলাই লেনদেন শুরুর পর থেকেই ক্রমাগতভাবেই বেড়েছে শেয়ার দাম। অভিহিত মূল্যের ১০ টাকার শেয়ার প্রথমদিনেই লেনদেন শেষ হয় ৯০ টাকায়।
×