ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সামনে ঈদ ॥ কামারপাড়ায় চলছে এখন টুংটাং কব্দ

প্রকাশিত: ০৪:৫০, ২৪ আগস্ট ২০১৭

সামনে ঈদ ॥ কামারপাড়ায় চলছে এখন টুংটাং কব্দ

সংবাদদাতা, মীরসরাই, চট্টগ্রাম, ২৩ আগস্ট ॥ আসন্ন ঈদ-উল আযহা উপলক্ষে টুংটাং শব্দে দা, ছুরি, ধামা তৈরিতে ব্যস্ত কামাররা। কোরবানিদাতা পরিবারের সদস্যরা কিংবা দায়িত্বপ্রাপ্ত কসাইরা নিজেদের চাহিদা মতো দা, ছুরি, চাকু, ধামা, কুড়াল, বটি কিনছে কামারদের থেকে। সরজমিনে ঘুরে দেখা যায় মীরসরাই উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার তথা, বারইয়াহাট, মিঠাছরা, শান্তিরহাট, বামনসুন্দর, বড়তাকিয়া, আবুতোরাব, জোরারগঞ্জ, আবুরহাট, বড় দারোগারহাটসহ ছোটবড় সকল হাটের সর্বত্র কামারদের ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কয়লার দগদগে আগুনে লোহাকে পুড়িয়ে পিটিয়ে তৈরি করছেন তারা দা, ছুরি, চাকু, কুড়াল, কাঠারি, বটিসহ ধারালো সামগ্রী। কেউবা অর্ডারকৃত আর কেউ কেউ নিজের লোহা দিয়েই তৈরি করে পাইকারি দরে বিক্রি করছেন। তবে এসব তৈরিতে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি কামারগুলোতে। পুরনো নিয়মেই চলছে আগুনে পুড়ে লোহা হতে ধারালো কর্তন সামগ্রী তৈরির কাজ। কামাররা জানায়, এ পেশায় অধিক পরিশ্রম। আর শ্রম অনুযায়ী তারা এর যথাযথ মূল্য পান না। কারণ লোহার বাজার দর বেশি। পাশাপাশি খাদ্য দ্রব্যের মূল্যের সঙ্গে ভারসাম্য রেখে যদি কামাররা তাদের লোহার ধারালো যন্ত্রপাতি তৈরি করত তাহলে এ পেশাজীবীরাও মূল্যায়ন পেত বলে তারা মনে করেন।জীবিকা নির্বাহে কষ্ট হলেও শুধু পরিবারের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এ পেশাটিকে তারা এখনও আঁকড়ে আছেন। সারাবছর পরিবারে ও কৃষি জমিতে ব্যবহারের প্রয়োজনে অনেকে কাছে এসে তা তৈরি করে নিয়ে যাচ্ছে। তবে কোরবানির পশুর জন্য বেশি প্রয়োজন মনে হওয়ায় সকলেই এখন ছুটছেন কামারদের কাছে। আর এতেই এই মাসে জমজমাট হয়ে উঠে কামারপাড়া। মেহেরপুর সংবাদদাতা, মেহেরপুর, থেকে জানান, জেলায় দেড় শতাধিক কামারশালা রয়েছে। বিলুপ্তি হয়ে গেছে অনেক কামারশালা। ঈদকে সমানে রেখে বছরের অন্য সময়ের চেয়ে কাজের চাপ বেড়ে যাওয়ায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন কামারেরা। লোহা দিয়ে তৈরি দা, বটি, ছুরি, ডাসাসহ গৃহস্থলির নানা উপকরণ বানিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে ইস্পাত-লোহা সঙ্কট ও কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে তারা। আয় রোজগার কমে যাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছে এ পেশার মানুষরা কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়াসহ চাহিদা অনুযায়ী কাজের মূল্য না পাওয়ায় অভাবের তাড়নায় পূর্বপুরুষের এই পেশা ছেড়ে দিচ্ছে অনেকে।
×