ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মোশাররফকে হানিফ এতদিন জাতি কেঁদেছে, এখন আপনাদের কাঁদতে হবে

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ২৩ আগস্ট ২০১৭

মোশাররফকে হানিফ এতদিন জাতি কেঁদেছে, এখন আপনাদের কাঁদতে হবে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেনের উদ্দেশে বলেছেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার চলছে। এই হত্যাকা-ের সঙ্গে আপনার দলের শীর্ষ নেতারা জড়িত। কান্নাকাটির কী দেখেছেন? কান্নাকাটি এতদিন জাতি করেছে, এবার আপনাদের কাঁদতে হবে, অপেক্ষা করুন। প্রধান বিচারপতির রায় ও বক্তব্যে ‘পাকিস্তান প্রেমের’ প্রকাশ ঘটেছে দাবি করে তাকে দেশটিতে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। মঙ্গলবার রাজধানীর আবদুল গণি রোডের বিদ্যুত ভবনের মুক্তি হলে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। জাতীয় বিদ্যুত শ্রমিক লীগ (সিবিএ) এ আলোচনা সভায় আয়োজন করে। প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার উদ্দেশে হানিফ বলেন, ‘অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে খুনী জিয়াউর রহমান সুপ্রীম জুডিসিয়াল কাউন্সিল করেছিলেন। পৃথিবীর আর কোথাও এটি নেই, আছে শুধু পাকিস্তানে। পাকিস্তানের প্রতি আপনার এত দরদ। ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় আপনি নিজেও বলেছিলেন, শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। এর মাধ্যমে কী বোঝাতে চেয়েছিলেন? এই বাংলাদেশে যারা রাজাকার, আলবদর, আলশামস, শান্তি কমিটির সদস্য- তারা পাকিস্তানের সৈনিক ছিলেন। সেই হিসেবে আপনি নিজেকে পাকিস্তানের সৈনিক ভাবছেন? আপনার যদি পাকিস্তানের প্রতি এতই আকর্ষণ থাকে, তাহলে পাকিস্তানে চলে যান। সে অধিকার আপনার আছে। চলে যান পাকিস্তানে, আপনাকে কেউ নিষেধ করবে না। ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে সুপ্রীমকোর্টের রায় নিয়ে বিচার বিভাগ, সরকার এবং ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে চলমান বিতর্কের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে হানিফ বলেন, ষড়যন্ত্র এখনও থেমে নেই। এখন আদালতের মাধ্যমে নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সরকারকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। কিন্তু সরকারকে হুমকি দিয়ে কোন লাভ নেই। এটা স্বাধীন বাংলাদেশ, পাকিস্তান নয়। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানকে পরাজিত করে আমরা এদেশ স্বাধীন করেছি। বাঙালী বীরের জাতি, আমাদের হুমকি দিয়ে কোন লাভ নেই। দেশের জনগণ যদি একবার জেগে যায়, তাহলে অনেকে পালাবার পথ খুঁজে পাবেন না। আওয়ামী লীগের এই নেতা আরও বলেন, ‘যদি বিচারকের চেয়ারে বসে বারবার দেশের রাজনীতি নিয়ে কথা বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেন, ষড়যন্ত্রের পথে হাঁটেন, শপথ ভঙ্গ করেন, তাহলে আপনার (প্রধান বিচারপতি) আর ওই চেয়ারে থাকার নৈতিক অধিকার থাকে না। জনগণও আর ওই চেয়ারে বেশিদিন আপনাকে দেখতে চায় না। সাংবিধানিক পদের শপথ ভঙ্গ করে বারবার রাজনীতির বিরুদ্ধে একের পর এক কথা বলবেন, এটা বাংলাদেশের জনগণ বারবার বরদাশত করবে না।’ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, আমরা এই হত্যাকা-ে জড়িত ঘাতকদের বিচারের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু মূল চক্রান্তকারী হিসেবে জিয়াউর রহমানকে বিচারের আওতায় আনতে পারিনি। আইন অনুযায়ী মৃত ব্যক্তিদের বিচার হয় না। তাই আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। তাই পুনরায় তদন্ত কমিশন গঠন করে জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি করেন তিনি।
×