ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা এগিয়ে

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ২৩ আগস্ট ২০১৭

ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা এগিয়ে

সোহেল তানভীর ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিনস এ্যাওয়ার্ডে ছেলেদের তুলনায় মেয়ে শিক্ষার্থীরা এগিয়ে যাচ্ছে। গত ২০১৫ সালে ২৯ জন শিক্ষার্থীকে ডিনস এ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছিল। এর মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ছিল ১৬ জন। মঙ্গলবার ২৮ জনকে ‘ডিনস এ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে নারী শিক্ষার্থীই রয়েছে ১৭ জন। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে প্রতি বছর ডিনস এ্যাওয়ার্ডে নারী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, নারীরা এক সময় অনেক পিছিয়ে ছিল। অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত ছিল। নারীদের সুযোগ দিয়ে দেখা গেল নারীরা আস্তে আস্তে পুরুষের চেয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। নারীরা প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় দেশের সর্বত্র নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে। তবে দেশের উন্নয়নের জন্য নারী-পুরুষ উভয়কে সমানতালে এগিয়ে আসতে হবে। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া জনকণ্ঠকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের এগিয়ে নেয়ার পথে আমরা যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি তারই একটি প্রতিফলন হচ্ছে ডিনস এ্যাওয়ার্ডের ক্ষেত্রে নারাীদের এগিয়ে থাকা। তবে ছেলেরা যে পিছিয়ে যাচ্ছে সেটাও কাম্য নয়। ছেলেমেয়ে সমানতালে এগিয়ে যাবে সেটাই আমরা চাই। গত কয়েক বছরের ফল অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, গত তিন বছর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে বিএসএস সম্মান পরীক্ষায় প্রথম হচ্ছে নারী শিক্ষার্থীরা। বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক মফিজুর রহমান। তিনি বলেন, মেয়েরা একাডেমিক পড়াশোনায় মনোযোগী বেশি। তাই তারা বিভাগে ভাল ফল করছে। তবে ছেলেদেরও একাডেমিক পড়াশোনায় আরও মনোযোগী হওয়া দরকার। তবে ছেলেমেয়ে উভয়কে একই গতিতে এগিয়ে আসতে হবে। ডিনস এ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠান ২০১৭ এবার সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ১০টি বিভাগের ২৮ শিক্ষার্থীকে ‘ডিনস এ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কৃতী শিক্ষার্থীদের হাতে এ্যাওয়ার্ড তুলে দেন। গত ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ সালের বিএসএস সম্মান পরীক্ষায় অসাধারণ ফলস্বরূপ শিক্ষার্থীদের এই এ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ কামাল উদ্দীন বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। বিভাগীয় চেয়ারম্যানগণ এ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. হাকিম আরিফ স্বাগত বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শবনম আযীম। এবার এ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা হলেন- অর্থনীতি বিভাগের মোঃ নাহিদ ফেরদৌস পবন, মোঃ ইসলামুল হক, মাহির এ. রহমান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের আবু সুফিয়ান, রুবেল মোল্লা, সানিয়া আকতার, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ফারহানা রাজ্জাক, মোঃ আবদুল হান্নান, ফাতিমা-তুজ-জোহরা, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের জেনিনা ইসলাম আবির, মনিরা বেগম, নওশিন জাহান ইতি, লোক প্রশাসন বিভাগের ম্যাগডানিলা ডি সিলভা, মোঃ আমজাদ হোসেন, শাহ মোঃ আজিমুল এহসান, শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের মোসাঃ কামরুন নাহার, আদিবা সুলতানা মিম, উইমেন এ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের রওশন ই ফাতিমা, মাহিরাতুল জান্নাত, হালিমা-তুস-সাদিয়া, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের মোহাম্মদ সাঈদ ইসলাম, তানজিলা আফরিন, আলভী আল সৃজন, মায়শা সামিহা, নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের আনিকা ইন্তেসার, নুশরাত জাহান, উম্মে ফারিহা এবং পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের মোঃ জাকিউল আলম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, তরুণ প্রজন্মের মেধাই হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ। এই মেধাসম্পদের যথাযথ সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে মানবসভ্যতার উৎকর্ষ সাধনের জন্য শিক্ষার্থীদের কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণ করে নতুন প্রজন্মকে পূর্ণাঙ্গ মানুষ হতে হবে। দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে হবে। ভাল একাডেমিক ফল অর্জনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সৎ, দেশপ্রেমিক ও সত্যনিষ্ঠ হতে হবে। মানবিক মূল্যবোধের অভাবেই সমাজ তথা বিশ্বে জঙ্গীবাদের বিস্তৃতি ঘটেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মকে মানবিক মূল্যবোধে দীক্ষিত হতে হবে।
×