ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চীন রাশিয়ার প্রতি আরও ঝুঁকবে পাকিস্তান’

প্রকাশিত: ০৪:৫০, ২৩ আগস্ট ২০১৭

চীন রাশিয়ার প্রতি আরও ঝুঁকবে পাকিস্তান’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন মধ্য এশীয় দেশ আফগানিস্তান ও পাকিস্তানকে নিয়ে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত যে পরিকল্পনা ও কৌশল চূড়ান্ত করেছে- তা যুক্তরাষ্ট্রকে জটিল পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবে। এ অঞ্চলকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র এমন ধরনের কৌশল নিতে যাচ্ছে যা শুধু আফগানিস্তান নয়, বরং দক্ষিণ এশীয় অন্য দেশেও এর প্রভাব পড়বে বলে জল্পনা শুরু হয়েছে। তবে, ট্রাম্প প্রশাসনের গৃহীত এ ভূ-রাজনৈতিক কৌশল পাকিস্তানের জন্য কোন ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে না বলে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের বিশ্বাস এবং সে জন্য তারা বিকল্প কর্মপরিকল্পনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। খবর এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের। এ পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত দুজন উর্ধতন কর্মকর্তা এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে বলেন, আফগানিস্তান নিয়ে নতুন মার্কিন কৌশলে পাকিস্তানের স্বার্থের পরিপন্থী কিছু থাকলে ইসলামাবাদ বেশকিছু তাৎক্ষণিক বিকল্পের কথা চিন্তা করছে। সংশ্লিষ্ট এ দুজন কর্মকর্তা স্বীকার করেন, আফগানিস্তান সংক্রান্ত নতুন মার্কিন নীতি সম্পর্কে ওয়াশিংটন থেকে যে সব আভাস-ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে তাতে সামনের দিনগুলোতে পাকিস্তানের ধৈর্য ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়বে। নীতিনির্ধারণের সঙ্গে জড়িত এক কর্মকর্তা অভিমত প্রকাশ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের গৃহীত পন্থা যদি চরম পর্যায়ে পৌঁছে, তবে সহযোগিতার জন্য চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে আরও গভীর সম্পর্ক স্থাপন ছাড়া পাকিস্তানের কাছে আর কোন পথ খোলা থাকবে না। জন্মলগ্ন থেকে পাকিস্তান মার্কিন জোটভুক্ত দেশ হিসেবে সুপরিচিত। সোভিয়েত ইউনিয়নকে ঠেকাতে পাকিস্তানে শত শত বিলিয়ন ডলারের মার্কিন সামরিক ও অর্থনৈতিক সাহায্য পাঠানো হয়েছে। নয় বছর এক মাসব্যাপী (১৯৭৯-৮৯) সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধেও পাকিস্তানের মাধ্যমেই-ওসামা বিন লাদেনসহ অন্য বিদ্রোহীদের কাছে অস্ত্রশস্ত্র ও রসদ পাঠাতো যুক্তরাষ্ট্র। আজ দীর্ঘদিনের এ পরীক্ষিত মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কেন এত ক্ষুব্ধ তা বিশ্লেষণের দাবি রাখে। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য এশিয়া বিষয়ক নতুন নীতি, পরিকল্পনা ও কৌশল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত না হলেও, বিভিন্ন সূত্র থেকে মোটামুটিভাবে যা জানা গেছে তাতে মনে হচ্ছেÑ পাকিস্তানকে কতগুলো শর্তের কঠিন বেড়াজালে আবদ্ধ করতে চাচ্ছে ওয়াশিংটন। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, হাক্কানি নেটওয়ার্কসহ অন্য জঙ্গী গ্রুপের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা। গত সপ্তাহান্তে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার শীর্ষ নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছেন বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে ‘ফরেন পলিসি’ নামে এক ম্যাগাজিনে দাবি করা হয়, ট্রাম্প পাকিস্তানে সব ধরনের সামরিক সাহায্য বন্ধ করার কথা ভাবছেন, কারণ তার বিশ্বাস ইসলামাবাদ ওয়াশিংটনের সঙ্গে প্রতারণা করছে। ট্রাম্পের সঙ্গে সুর মিলিয়ে প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারাও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে একমত হন। বিভিন্ন তথ্য সূত্র মারফত মার্কিন প্রশাসনিক মনোভাব অবগত হওয়ার পর পাকিস্তানের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে আভাস-ইঙ্গিতে যেসব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তাতে মনে হয় না যে তাদের গৃহীত নতুন আফগান নীতি আমাদের জন্য ভাল কিছু হবে। কারণ কোন কোন পক্ষ পররাষ্ট্রনীতির মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে ট্রাম্পের অনভিজ্ঞতাজনিত দুর্বলতার সুযোগ গ্রহণে সবসময়ই তৎপর আছে।
×