ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বেপরোয়া গতিতে ঘটছে দুর্ঘটনা ॥ নিষেধাজ্ঞা মানা হচ্ছে না

বাল্কহেডের দখলে বালু নদী

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ২২ আগস্ট ২০১৭

বাল্কহেডের দখলে বালু নদী

মীর আবদুল আলীম, রূপগঞ্জ ॥ প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা নৌপথে আনে নিরাপত্তা শীর্ষক নৌবিভাগের নানা কর্মসূচীই ভেস্তে যাচ্ছে। নৌপুলিশের টহল না থাকা ও বাল্কহেড চলাচল বিধি প্রয়োগ না করায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে যাত্রী ও বালুবাহী নৌযানের শ্রমিক। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শ্রমিক, মালিক, যাত্রী ও ক্ষুদ্র নৌপরিবহনে ব্যবহৃত যানের। নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার জেলা প্রশাসন বার বার সন্ধ্যার পর শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীতে বালুবাহী বাল্কহেড চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও মানা হচ্ছে না এ আইন। তাই বাধা ডিঙ্গিয়ে অবাধে চলছে মরণঘাতী এসব যান। দু-একটি দুর্ঘটনার পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসলেও ফের বালুবাহী অবৈধ ফিটসেনবিহীন যান অহরহ চলাচল করছে। এমনকি রাতের বেলায় চলাচল করলেও প্রশাসন নির্বিকার থাকে বলে রয়েছে অভিযোগ। সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, শীতলক্ষ্যায় বিভিন্ন পয়েন্টে শহর এলাকায় নৌফাঁড়ির সদস্যরা ব্যবস্থা নিলেও উপজেলা এলাকায় রাতের বেলায় নির্ধারিত চাঁদা আদায় করে এ বাল্কহেড চলাচল অব্যাহত রেখেছেন। অভিযোগ রয়েছে পুলিশ বাধা দিলেই ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকাতেই রাতের বেলায় চলতে দেয়া হয় এসব মালবাহী নৌযান। এদিকে এ নদীতে চলাচলরত সাধারণ নৌযানের মালিকপক্ষের দাবি প্রশাসনের নীরবতার সুযোগে উভয় নদীতে বেপরোয়া বালুবাহী বাল্কহেডগুলো চলছে। তাতে সাধারণ যাত্রী ও শ্রমিক শ্রেণীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সূত্র জানায়, বালু নদীটি রাজধানীর ডেমরা ও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের চনপাড়া পুনর্বাসন এলাকা থেকে শুরু হয়ে কায়েতপাড়া ইউনিয়ন ও রূপগঞ্জ সদর এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদীতে মিলেছে। নদীটির প্রশস্থতা কম থাকার পরও পূর্বাচল উপশহর ও এর আশপাশ এলাকায় আবাসন কোম্পানির বালু বহনের কাজে এসব মালবাহী বাক্লহেড ব্যবহার হচ্ছে। ফলে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়াও এসব নৌযান চলাচল অব্যাহত থাকায় প্রশাসন নির্বিকার রয়েছেন। তাই বন্ধ করা যাচ্ছে না এ মরণঘাতী যান। এমনই এক ঘটনায় সম্প্রতি উপজেলার ইছাপুরা এলাকার বালু নদীতে বালুবাহী বলগেটের ধাক্কায় সাক্কাত আলী (৪৫) নামে এক মাটিকাটার শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন পাঁচজন। শীতলক্ষ্যা নদীর রূপগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গীর, পিতলগঞ্জ ও হাটাব ত্রিশকাহনিয়া এলাকায় বিভিন্ন আবাসন কোম্পানিতে ফেলা বালুবাহী বাল্গহেডগুলো রাতের বেলায় চলাচল করায় স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। একইভাবে বালু নদীর ইছাপুরা, ছনি, কায়েতপাড়া ও ডেমরা এলাকায় ছোট্ট বালু নদীতে এসব যান চলাচলে ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন স্থানীয় লোকজন। ভারি নৌযানগুলো যত্রতত্র চলাচল করায় সাধারণ নৌযান এ নদীতে চলাচল করতে অসুবিধা হচ্ছে। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়া বলেন, রাতের বেলায় বালু ও শীতলক্ষ্যায় বাল্কহেড চলাচলে নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে। ফলে রাতের বেলায় কোন যান পেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন। টাকার বিনিময়ে রাতের বেলায় সুযোগ দেয়া হয়ে থাকলে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×