ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় আজ

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২০ আগস্ট ২০১৭

কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় আজ

বিডিনিউজ ॥ ১৭ বছর আগে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আজ রবিবার রায় দেবে ঢাকার ২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। ৬৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ এবং রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ১০ আগস্ট ট্রাইব্যুনালের বিচারক মমতাজ বেগম রায়ের এদিন ঠিক করে দেন। হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনের এ দুই মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত ২৫ আসামির মধ্যে হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে অন্য একটি মামলায়। এ কারণে তার নাম এ মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। বাকিদের মধ্যে ১২ জন কারাগারে রয়েছে এবং ১২ জন পলাতক বলে ট্রাইব্যুনালের পেশকার ইমরুল ইসলাম জানান। বন্দী আসামিরা ॥ মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মাহমুদ আজহার, রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম ওরফে রাশেদুজ্জামান ওরফে শিপন, মেহেদী হাসান ওরফে আব্দুল ওয়াদুদ ওরফে গাজী, ওয়াসিম আক্তার ওরফে তারেক হোসেন ওরফে মারফত আলী, আনিসুল ইসলাম আনিস, মাওলানা সাব্বির, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, আবু বক্কর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, আরিফ হাসান সুমন ওরফে আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুর রউফ ওরফে মুফতি আব্দুর রউফ ওরফে আঃ রাজ্জাক ওরফে আবু ওমর, হাফেজ ইয়াহিয়া। পলাতক আসামিরা ॥ মুন্সি ইব্রাহিম, মোঃ শাহনেওয়াজ ওরফে মোঃ আজিজুল হক, ইউসুফ ওরফে মোহসাব মোড়ল, মোঃ লোকমান, শেখ মোঃ এনামুল হক, মিজানুর রহমান, খন্দকার মোঃ কামাল উদ্দিন সাকের, সারোয়ার হোসেন মিয়া, মুন্সি ইব্রাহিম, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মুফতি শফিকুর রহমান ও মুফতি আঃ হাই। ২০০০ সালের ২০ জুলাই কোটালীপাড়ার শেখ লুৎফর রহমান মহাবিদ্যালয়ের উত্তর পাশে তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণের জন্য মঞ্চ নির্মাণের সময় মাটিতে পুঁতে রাখা ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পাওয়া যায়। পরদিন ৮০ কেজি ওজনের আরও একটি বোমা উদ্ধার করা হয় কোটালীপাড়ার হেলিপ্যাড থেকে। তার একদিন পর নিজের নির্বাচনী এলাকায় দাদার নামে প্রতিষ্ঠিত ওই কলেজ মাঠে জনসভায় শেখ হাসিনার ভাষণ দেয়ার কথা ছিল। ওই ঘটনায় কোটালীপাড়া থানার উপপরিদর্শক নূর হোসেন বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করেন। সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মুন্সি আতিকুর রহমান তদন্ত শেষে ২০০১ সালের ৮ এপ্রিল যে অভিযোগপত্র দেন, তাতে আসামি করা হয় ১৬ জনকে। পরে ২০০৯ সালের ২৯ জুন নতুন করে ৯ জনকে অন্তর্ভুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। গোপালগঞ্জের আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্রটি যখন দেয়া হয়, ততদিনে ওই আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ৪১ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়ে গিয়েছিল। পরে গুরুত্ব বিবেচনায় দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে মামলা দুটি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টাসহ হরকাতুল জিহাদের ১৩টি নাশকতামূলক ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তিকে হত্যার পেছনে মূল ব্যক্তি হিসেবে মুফতি হান্নানকে দায়ী করা হয়। শেখ হাসিনার নিজের জেলা গোপালগঞ্জেই মুফতি হান্নানের বাড়ি। পাকিস্তানের মাদ্রাসায় পড়তে গিয়ে তার জঙ্গীবাদে হাতেখড়ি। আফগানিস্তান সীমান্তে যুদ্ধেও অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ২০০৫ সালের ১ অক্টোবর ঢাকার বাড্ডা থেকে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে এই জঙ্গী নেতা কারাগারেই ছিলেন। ২০০৪ সালে ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীকে হত্যার চেষ্টায় গ্রেনেড হামলার ঘটনায় চলতি বছর ১২ এপ্রিল তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। বোমাগুলো উদ্ধারের সময় মুফতি হান্নানের মালিকানাধীন গোপালগঞ্জে হেমাঙ্গন আবাসিক এলাকার ভাড়া করা একতলা বাসা থেকে বোমা বানানোর সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। ওই বিস্ফোরক সরবরাহ করা হয়েছিল হান্নানের সোনার বাংলা সাবানের কারখানা থেকে। এসআই নূর হোসেন বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে যে মামলাটি করেন, তার আসামি ১৪ জন। এরা সবাই হত্যাচেষ্টা মামলারও আসামি। দুই মামলায় মোট ৭ আসামি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন।
×