ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আইএসের বিরুদ্ধে লেবাননী সেনা ও হিজবুল্লাহর অভিযান

প্রকাশিত: ০৩:৪২, ২০ আগস্ট ২০১৭

আইএসের বিরুদ্ধে লেবাননী সেনা ও হিজবুল্লাহর অভিযান

উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সিরীয় সীমান্তে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) একটি ছিটমহলের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে লেবাননের সেনাবাহিনী। শনিবার ভোরে লেবানন সেনাবাহিনী অভিযানটি শুরু করার পরপরই একই সঙ্গে ছিটমহলটির বিরুদ্ধে সিরিয়ার দিক থেকে অভিযান শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে হিজবুল্লাহ। এএফপি। সিরিয়ার সঙ্গে দেশটির পার্বত্য জুরুদ আর্সাল সীমান্ত অঞ্চলের কথা উল্লেখ করে সেনা প্রধান জেনারেল জোসেফ আউন অপারেশন ‘ডন অব জুরুদ’ নামের এ অভিযানের ঘোষণা দেন। লেবানন নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্র সাংবাদিকদের জানান, রাস বালবেক শহরের কাছে আইএসের অবস্থানগুলো লক্ষ্য করে রকেট, কামান ও হেলিকপ্টার থেকে গোলা নিক্ষেপ করছে লেবাননী সেনাবাহিনী। ওই ছিটমহলটিতে কয়েকশত আইএস যোদ্ধা আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। লেবাননী-সিরীয় যুদ্ধক্ষেত্রের একমাত্র এই অংশটিই এখনও জঙ্গীগোষ্ঠীটির নিয়ন্ত্রণে রয়ে গেছে। হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, সিরিয়ার পশ্চিম কালামউন অঞ্চলে অবস্থানরত আইএসের জঙ্গীরা হিজবুল্লাহ ও সিরীয় সেনাবাহিনী অভিযানের লক্ষ্য; এলাকাটি লেবাননের রাস বালবেকের অপর পাশে। এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ বলেছে, জাতীয় সীমান্ত থেকে সন্ত্রাসীদের সরিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অভিযানটি শুরু করা হয়েছে এবং সিরীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে পাশাপাশি থেকে লড়াই করা হচ্ছে। একপাশে লেবাননের সেনাবাহিনী ও অপরপাশে হিজবুল্লাহ ও সিরীয় সেনাবাহিনীর মিলিতভাবে যৌথ অভিযান চালালে তা লেবাননের জন্য রাজনৈতিকভাবে ¯পর্শকাতর হয়ে উঠতে পারে; কেননা এতে লেবানন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে যে সামরিক সহায়তা পায় তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কারণ, ইরান-সমর্থিত লেবাননের হিজবুল্লাহ বেসামরিক বাহিনীকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করে কালো তালিকাভুক্ত করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি এক বক্তব্যে হিজবুল্লাহর নেতা সৈয়দ হাসান নাসরুল্লাহ বলেছেন, লেবানন সেনাবাহিনী সীমান্তের তাদের পাশ থেকে আইএসকে আক্রমণ করতে পারে, অপরদিকে একই সময় হিজবুল্লাহ ও সিরীয় সেনাবাহিনী সিরিয়ার পাশ থেকে জঙ্গীগোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করতে পারে। লেবানন নিরাপত্তা বাহিনীর ওই সূত্রটি আক্রমণ দুটি সমন্বিত নয় বলে দাবি করেছে। প্রত্যেক পক্ষই আলাদাভাবে কাজ করছে, সাংবাদিকদের জানান নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রটি। তবে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পক্ষ হয়ে লড়াই করা সামরিক জোটের এক কমান্ডার জানিয়েছেন, এ ধরনের অভিযানে স্বাভাবিকভাবেই এক ধরনের সমন্বয় হয়ে থাকে। গত মাসে হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা সিরিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে এক যৌথ অভিযান চালিয়ে সিরিয়ার উগ্রপন্থী বিদ্রোহীগোষ্ঠী নুসরা ফ্রন্টের জঙ্গীদের ও সিরীয় বিদ্রোহীদের নিকটবর্তী সীমান্ত এলাকার শক্তিকেন্দ্রগুলো ছেড়ে যেতে বাধ্য করে। জুলাইয়ে এই অভিযান চলার সময় লেবাননের সেনাবাহিনী অভিযানে অংশ না নিলেও একই পার্বত্য এলাকায় তারা আইএসের ছোট ছোট পকেট অবস্থানগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। ছয় দিনের যুদ্ধের পর হিজবুল্লাহ ও আল-কায়েদার সাথে সম্পর্কিত সিরিয়ার সাবেক যোদ্ধা যারা আল নুসরা ফ্রন্টের সঙ্গে জড়িত তাদের মধ্যে অস্ত্র বিরতি ঘোষণা করা হয়। সিরিয়ার সরকার বিরোধী জঙ্গীরা বছরের পর বছর ধরে জুরুদ আর্সালকে আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এছাড়া দেশটির ছয় বছরের যুদ্ধে অনেক অজ্ঞাত শরণার্থীও এ অঞ্চলকে আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করছে।
×