ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাথমিক শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১৯ আগস্ট ২০১৭

প্রাথমিক শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ

আগামী শিক্ষাবর্ষে শিশু-কিশোরদের হাতে নিম্নমানের বই পৌঁছানোর জন্য দুর্নীতি ও অনিয়ম চলছে। যেভাবে ২০১৫ ও ২০১৬ শিক্ষাবর্ষে নিম্নমানের কাগজ, অস্পষ্ট ছাপা এবং দুর্বল বাঁধাইয়ের বই দিয়ে সরকারকে ব্যাপক সমালোচনায় ফেলা হয়, ঠিক সেভাবে আগামী বছরেও একই অবস্থা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে সেই চক্রটি। যার সঙ্গে জড়িত রয়েছে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) অর্থলোভী একটি চক্র। যারা বইয়ের মান যাচাইয়ের জন্য ইন্সপেকশন কোম্পানি নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছে। বিগত ২০১৫ ও ২০১৬ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তকের মান যাচাইয়ে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে ২০১৬ সালে তিন বছরের জন্য কালো তালিকাভুক্ত করা হয় একটি কোম্পানিকে। এই প্রতিষ্ঠানের না রয়েছে কোন কাগজ পরীক্ষার ল্যাব, না রয়েছে কোন যোগ্যতাসম্পন্ন লোকবল। পাঠ্যপুস্তক ইন্সপেকশনের প্রাথমিক টেন্ডারে এই বিষয়ে অভিযোগ করলে পুরো টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল করে নতুন করে টেন্ডার করা হয়, যাতে অভিযুক্ত এই প্রতিষ্ঠানকেই কাজ দেয়া যায়। এ ব্যাপারে অন্য প্রতিষ্ঠান প্রতিবাদ করলেও তাতে কোন প্রকার আমলে নেয়নি ডিপিই কর্তৃপক্ষ। আগামী বছরের পাঠ্যপুস্তকের মান যাচাইয়ের জন্য ওই প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিচ্ছে মাত্র ২৯ লাখ টাকায়, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ভ্যাট ও ট্যাক্স। পাঠ্যপুস্তকের মান যাচাইয়ের জন্য প্রায় ১০০ জন দক্ষ সার্ভেয়ার ও কেমিস্ট নিয়োগ দিতে হবে আগামী ৯ মাসের জন্য। যারা প্রতিদিন দুই শিফটে প্রিন্টিং প্রতিষ্ঠানে গিয়ে মান যাচাইয়ের কাজ করবে এবং জানুয়ারি মাসে সারাদেশের ৫০৮টি উপজেলা থেকে ১০ হাজারেরও বেশি স্যাম্পল বই সংগ্রহ করবে পরীক্ষা করার জন্য, যা এই পরিমাণ টাকায় এক কথায় অসম্ভব। অন্যদিকে চূড়ান্ত পর্যায়ে বইয়ের মান পরীক্ষা করতে হবে বিসিআইএস থেকে, যার জন্য খরচ হবে কোটি টাকার ওপরে। আর এই কাজের জন্য ওই প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে মাত্র ২৫ লাখ টাকা, যা একেবারে অবাস্তব ও অসম্ভব। এই প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব কোন ল্যাব (কাগজ ও আর্ট কার্ড টেস্টের জন্য) না থাকা সত্ত্বেও কোন প্রকার যাচাই ছাড়া এবং অস্বাভাবিক নিম্নমূল্যের দরদাতা হওয়া সত্ত্বেও তাকেই কাজ দিচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই)। কোমলমতি শিশুরা যেন সঠিক মানের বই পায় তা নিশ্চিত করতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি), প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) থেকে খোঁজখবর নিয়ে এ হীন প্রক্রিয়া বন্ধে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। ইমতিয়াজ কবির বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতি শান্তিনগর
×