ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভান করার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ১৯ আগস্ট ২০১৭

ভান করার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ট্র্যাকে হুমড়ি খেয়ে পড়ে গেলেন। ক্যারিয়ারের শেষ ফাইনাল লড়াই বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপস আসরে। সেই লড়াইয়ে কপর্দকশূন্য থাকতে হয়েছে সর্বকালের সবচেয়ে গতিধর স্প্রিন্টার উসাইন বোল্টকে। লন্ডন অলিম্পিক স্টেডিয়ামে কানায় কানায় পূর্ণ দর্শকরা কোনভাবেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না বিষয়টি। কারণ রেসের মাঝপথে পড়ে যাওয়ার পর কাতরাতে থাকা বোল্ট আর উঠতে পারেননি, জ্যামাইকার রিলে দল রেস শেষ করতে পারেনি। অনেকেই এ কারণে সন্দেহ করছেন হয়তো বোল্ট ইনজুরি নিয়ে একটা ভনিতা করেছেন, যতটা না মারাত্মক সমস্যা তারচেয়ে বেশি দেখানোর ভান করেছেন। কিন্তু সেই দাবি উড়িয়ে দিয়ে জ্যামাইকান গতি ‘বিদ্যুত’ বোল্ট জানিয়েছেন তিনি কখনই দর্শক-ভক্তদের সঙ্গে প্রতারণা করতে পারবেন না। বোল্টের কথার সাক্ষী হিসেবে আছে মেডিক্যাল রিপোর্ট। হ্যামস্ট্রিংয়ে একটি পেশিতে চিড় ধরা পড়েছে তার এবং সবমিলিয়ে পুরোপুরি এটি কাটিয়ে ওঠার জন্য ৩ মাস সময় লাগবে বোল্টের। অনেক আগেই স্প্রিন্টের বিশ্বরেকর্ডধারী বোল্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন এবার লন্ডন বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপসে অংশ নেয়ার পরই ট্র্যাক এ্যান্ড ফিল্ড থেকে অবসর নেবেন। গত বছরও রিও অলিম্পিকে ট্রিপল জয়ের পরই ওই ঘোষণা দিয়েছিলেন ৩০ বছর বয়সী বোল্ট। এবার হারের শঙ্কাটা তার মনেও উঁকি দিচ্ছিল। সে কারণে ২০০ মিটারেও বিশ্বরেকর্ডধারী এ স্প্রিন্টার এবার এই ইভেন্টে অংশই নেননি। শুধু ১০০ মিটার এবং ৪ী১০০ মিটার রিলেতে অংশ নেয়ার কথা জানান। কিন্তু সবাইকে হতবাক করে দিয়ে তিনি ১০০ মিটারের ফাইনালে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পরাজিত হন, জেতেন ব্রোঞ্জ। তাই তার ক্যারিয়ারের শেষ রেসে দলগত রিলে ইভেন্টে অনেকেই জয় প্রত্যাশা করেছিলেন। কিন্তু এবার আরও বেশি হতাশায় ডুবতে হয়েছে সবাইকে। শুরুর পর মাঝপথেই ট্র্যাকে হুমড়ি খেয়ে পড়ে যান বোল্ট। আর ওঠেননি, ফলে জ্যামাইকা কোনকিছুই জিততে পারেনি রেস শেষ করার কারণে। সাময়িকভাবে তার উরুর পেশিতে টান লেগেছে এমনটাই জানানো হয়েছিল। কিন্তু অনেকেই কটাক্ষ করে অভিযোগ তোলেন বোল্ট হয়তো হারের শঙ্কায় ভুয়া ইনজুরির মনোভাব দেখিয়েছেন। এতে দারুণ ক্ষিপ্ত হয়ে বোল্ট বলেন, ‘আমি কখনও এমন কেউ ছিলাম না যে ভক্ত-সমর্থকদের সঙ্গে প্রতারণা করব। আমি বরাবরই বলেছি আমি ট্র্যাক এ্যান্ড ফিল্ডে শুধু জেতার জন্য আসিনি, ভক্তদের আনন্দ দেয়াটাই আমার কাছে অন্যতম বড় বিষয়। আর সে কারণেই আমার আকাক্সক্ষা ছিল বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপসে শেষবারের মতো শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে নিজের সেরাটা উজাড় করে দিয়ে সবাইকে আনন্দ দেয়ার। অসংখ্য ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা ভক্ত-সমর্থকদের। তারা আমাকে নিয়মিতভাবে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছেন। এখন আমি শান্তিতে আছি, এই পরাজয়ের গ্লানিটা আমি ভুলে যাব এবং জীবনের পরবর্তী অধ্যায়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য মনোযোগী হব।’ বোল্ট তার এক্সরে রিপোর্টের একটি ফটোকপি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘দুঃখজনকভাবে আমার উরুর প্রক্সিমাল মায়োটেনডিনিয়াসে চিড় ধরা পড়েছে। আর কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় থাকতে হবে তিনমাস। আমি মেডিক্যাল রিপোর্ট সাধারণত প্রকাশ করি না, কিন্তু দুঃখজনকভাবে এবার সেটা করতে হলো। কারণ অনেক মানুষ আমার ইনজুরিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন।’
×