ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বের সবচেয়ে দামী ফুল

প্রকাশিত: ০৭:৩০, ১৮ আগস্ট ২০১৭

বিশ্বের সবচেয়ে দামী ফুল

নাইট কুইন/কাডুপুল ফ্লাওয়ার এই ফুলটির সঙ্গে অনেকেই পরিচিত। এর বৈজ্ঞানিক নাম ঊঢ়রঢ়যুষষঁস ড়ীুঢ়বঃধষঁস। কারও কারও বাসায় হয়ত রাতের শোভা বর্ধন করেছে সুগন্ধি এই ফুল। কিন্তু আপনি কি জানেন, এই নাইট কুইনই পৃথিবীর সবচেয়ে দামী ফুল? তবে এর কোন নির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারন করা যায়নি, তাই একে বলা হয় অমূল্য ফুল। নাইট কুইনের অমূল্য হওয়ার মূল কারণ, এই ফুলটিকে অক্ষত অবস্থায় ছেঁড়া যায় না। তাছাড়া এই ফুলটি রাতে ফোটে এবং রাতেই ঝরে যায়। নাইট কুইন কখনও সকালে দেখা যায় না। সেজন্যই এ ফুলটিকে বলা হয় রাতের রানী। জুলিয়েট রোজ ভালবাসা শব্দটা যেন গোলাপের স্পর্শ ছাড়া পরিপূর্ণতা পায় না। বিশ্বজুড়েই লাল গোলাপ ভালবাসার প্রতীক হিসেবে সমাদৃত। তবে আপনার সম্ভবত জুলিয়েট রোজের সঙ্গে পরিচয় নেই। যদি থাকত, তবে এটাকেই আপনি ভালবাসার প্রতিশব্দ হিসেবে গ্রহণ করতেন। ২০০৬ সালে চেলসি ফ্লাওয়ার শো-তে সকলের নজর কাড়ে এই গোলাপ। ডেভিড অস্টিন নামের এক কৃষক ১৫ বছর পরিশ্রমের পর এই গোলাপ উদ্ভাবন করেন। জুলিয়েট রোজের অপর নাম থ্রি মিলিয়ন পাউন্ড রোজ। নাম থেকেই এর দাম ধারণা করে নেয়া যায়। হ্যাঁ, এই ফুলটির মূল্য ১৫.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার! শেনঝেন নংকে অর্কিড এই ফুলটি সৃষ্টির পেছনে কৃতিত্ব কিন্তু প্রকৃতির চেয়ে বেশি মানুষের। সম্পূর্ণভাবে মানুষের হাতেই জন্ম এই অর্কিডের। যাদের হাতে শেনঝেন নংকে অর্কিডের সৃষ্টি, সেই গ্রুপের নামেই এর নামকরণ হয়েছে। গবেষক দলের ৮ বছরের সাধনার ফল এই অর্কিড। এটির মূল্য ২ লাখ মার্কিন ডলার। ফুলটির চড়া দামের কারণ শুধু এর বিরলত্ব বা সৌন্দর্যের জন্য নয়। শেনঝেন নংকে অর্কিডের ফুল ফুটতে চার থেকে পাঁচ বছর লাগে। আর এজন্যই ফুলটির মূল্য বেড়ে গেছে এতটা। গোল্ড অব কিনাবালু অর্কিড বিরলত্ব এবং সৌন্দর্যের জন্যই পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান ফুলগুলোর তালিকায় স্থান পেয়েছে গোল্ড অব কিনাবালু অর্কিড। এটি শুধুমাত্র মালয়েশিয়ার কিনাবালু ন্যাশনাল পার্কে পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্য কোন স্থানে এই অর্কিড পাওয়া যায় না। শুধুমাত্র এপ্রিল এবং মে মাসে এই ফুলটি ফোটে। আর এটি ফুটতে লেগে যেতে পারে অনেক বছরও। একেকটি গোল্ড অব কিনাবালু অর্কিডের মূল্য ৬ হাজার ডলার। স্যাফরন ফুল মূলত ফুল হিসেবে নয়, মসলা হিসেবেই বেশি পরিচিত এবং সমাদৃত স্যাফরন ফুল। বেগুনী পাপড়ির মধ্যে হলুদ রেণুর মিশেলে অদ্ভুত সুন্দর একটি ফুল এটি। প্রায় ৮০ হাজার স্যাফরন ফুল থেকে তৈরি করা যায় মাত্র ৫০০ গ্রাম মসলা, কেননা মসলা তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয় শুধুমাত্র রেণুটুকু। এর প্রতি পাউন্ডের মূল্য ১২০০ থেকে ১৫০০ ডলার। সতেরো শতকের টিউলিপ বাল্ব টিউলিপ ফুল সহজলভ্য এবং সাধারণ একটি ফুল হলেও সতেরো শতকে হঠাৎ এর দাম বেড়ে যায়। সে সময়ে এটি ছিল বিরল ফুল। এর রংও ছিল অন্য সব ফুলের চেয়ে আলাদা। কারও বাগানে টিউলিপ ফুল থাকাটা ছিল আভিজাত্যের প্রতীক। তখন টিউলিপের মূল্য পৌঁছেছিল ১০ হাজার গিল্ডার বা ৫,৭০০ ডলার পর্যন্ত। গ্লোরিওসা এশিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে মূল্যবান ফুলগুলোর অন্যতম গ্লোরিওসা লিলি। লাল, কমলা, হলুদ এবং হলুদাভ সবুজের মিশেলে চমৎকার একটি ফুল গ্লোরিওসা লিলি। বর্তমানে একেকটি গ্লোরিওসা ফুল বিক্রি হয় ৬ থেকে ১০ ডলারে। হাইড্র্যাঞ্জিয়া অসম্ভব সুন্দর গোলাকৃতির গুচ্ছ আকারে ফোটে হাইড্র্যাঞ্জিয়া ফুল। এই ফুলটি যে কারোরই মন ভোলাবে। মূলত সাদা রঙের হাইড্র্যাঞ্জিয়া বেশি দেখা গেলেও এই ফুলটির নীল, হালকা গোলাপি এবং বেগুনি রঙও দেখা যায়। এই ফুলটি চাষ করতে পরিশ্রম করতে হয় অনেক বেশি। আর তাছাড়া এই ফুলটি শুকিয়ে ঝরে পড়ে খুব দ্রুত। বিভিন্ন উৎসবে ব্যবহৃত এই ফুলের প্রতি ডালের মূল্য ৬.৫ ডলার। লিলি অব দ্য ভ্যালি সুগন্ধি এই ফুল যেমন ঘ্রাণে মাতাল করতে পারে, তেমনি এটির বিষও খুব ভয়ঙ্কর। প্রাচীন খ্রিষ্টধর্মে ঘণ্টা আকৃতির এই ফুলটিকে ‘আওয়ার লেডিজ টিয়ারস’ বা ‘আমাদের নারীর কান্না’ বলা হতো। উত্তর গোলার্ধে বসন্তের ফুল লিলি অব দ্য ভ্যালি। ১৫-৩০ সেন্টিমিটার লম্বা একেকটি ডালে দুটি লম্বা পাতা থাকে। লিলি অব দ্য ভ্যালির প্রতি গুচ্ছের মূল্য ১৫ থেকে ৫০ ডলার। লিসিয়ান্থাস বছরে একবার ফোটে লিসিয়ান্থাস। বেগুনী, নীল, ল্যাভেন্ডারসহ বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে এই ফুলটি। ‘পেপার ফুল’ নামেও পরিচিত লিসিয়ান্থাস। এর প্রতি গুচ্ছের মূল্য ১০ থেকে ৩৫ ডলার।
×