ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

জাইকার কাছ থেকে অর্থ সহায়তা নেয়া হবে

মাতারবাড়িতে আরও এক হাজার ২শ’ মেও বিদ্যুত কেন্দ্র হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১৭ আগস্ট ২০১৭

মাতারবাড়িতে আরও এক হাজার ২শ’ মেও বিদ্যুত কেন্দ্র হচ্ছে

রশিদ মামুন ॥ কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি মাতারবাড়িতে আরও একটি এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-আপারেশন এজেন্সির (জাইকা) কাছ থেকে অর্থসহায়তা চাইছে। এর মধ্যে মাতারবাড়িতে জাইকার অর্থায়নে সমান ক্ষমতার বিদ্যুত কেন্দ্রের সঙ্গে একটি বন্দর নির্মাণের জন্য চুক্তি সই হয়েছে। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, গত ২ আগস্ট নতুন এই প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়ে উদ্যোগ নিতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগকে (ইআরডি) অনুরোধ জানিয়ে একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। বিদ্যুত বিভাগের দেয়া চিঠিতে দেখা যায় মাতারবাড়ি বিদ্যুত কেন্দ্রের ৩ এবং ৪ নম্বর ইউনিট হিসেবে কেন্দ্রটিকে উল্লেখ করা হচ্ছে। কেন্দ্রটির দুটি ইউনিটের পৃথকভাবে ক্ষমতা হবে ৬০০ মেগাওয়াট। অর্থাৎ এর মোট উৎপাদন ক্ষমতা হবে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট। কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম এ প্রসঙ্গে বলেন, মাতারবাড়িতে আরও একটি এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করতে চায় তারা। এখানের ভূমি উন্নয়ন এবং বিদ্যুত কেন্দ্রের আনুমানিক খরচ হবে ২ বিলিয়ন ডলার। তবে প্রকল্পর সম্ভাব্যতা জরিপ করার আগে খরচ নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি। বিদ্যুত বিভাগ বলছে এখানে যে কয়লা খালাসের বন্দর নির্মাণ করা হবে সেটি ১০ হাজার মেগাওয়াটের কয়লা হ্যান্ডেলিং করতে পারবে। বন্দরসহ একটি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের জন্য ৪ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার নির্মাণ চুক্তি গত মাসে সই হয়েছে। এখানে আরও একটি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করা হলে দ্রুত ব্যয় করা অর্থ উঠে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মহেশখালীতে প্রতিদিন ৫০০ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ করতে পারে এমন একটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের কার্যক্রম চলছে। এর বাইরে সামিট পাওয়ার এবং ভারতের রিল্যায়েন্স পাওয়ার দুটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। ভাসমান এই টার্মিনাল দুটিও একই এলাকায় স্থাপন করা হবে। ফলে দ্বীপটিতে গ্যাসের সরবরাহ পাওয়া যাবে। যা দিয়ে শিল্প গড়ে উঠতে পারে। এর বাইরে মহেশখালীতে আধুনিক পর্যটন শিল্পও গড়ে তোলার প্রক্রিয়া হাতে নেয়া হয়েছে। জাইকা আধুনিক এই শহর স্থাপনে বাংলাদেশকে সহায়তা দিচ্ছে। মহেশখালী মাতারবাড়ির ক্ষেত্রে একক উন্নয়ন পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছে সরকার। এখানে পিডিবি পৃথক কয়লা বন্দর নির্মাণ করতে চাইলেও তা আর হচ্ছে না। তাদের কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির কয়লা টার্মিনালটি ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন কয়লা চালিত বিদ্যুত কেন্দ্রর জন্য সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে কয়লা হ্যান্ডেলিং করা। এখানে কয়লা হ্যান্ডেলিংয়ের অবকাঠামো হচ্ছে কাজেই আরও বেশি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করা সম্ভব। এছাড়া ভবিষ্যতে সরকার মাতারবাড়িকে বড় বিদ্যুতহাবে রূপান্তর করতে চাইছে। প্রথম ধাপে মাতারবাড়িতে জাপানের কোম্পানি সুমিতমো কর্পোরেশনের নেতৃত্বাধীন কনর্সোটিয়াম। প্রথমে একটি বিদ্যুত কেন্দ্র, ৩০০ মিটার চওড়া একটি চ্যানেল, কয়লা রাখার জায়গা এবং বন্দর। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে বিদ্যুত জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ভবিষ্যতে মাতারবাড়ি বিদ্যুতহাব দিয়েই সার বিশ্বের মানুষ বাংলাদেশকে চিনবে। এখানে বিদ্যুত কেন্দ্রর পাশাপাশি আধুনিক নগর নির্মাণ করা হবে। এই নগর নির্মাণের কাজও সরকার শুরু করবে। এর আগে যেসব বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তার সবগুলো বিদ্যুত কেন্দ্রই যৌথ উদ্যোগে নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে একমাত্র কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি জাইকার অর্থায়নে এই দুটি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করছে। যার শতভাগ মালিকানা বাংলাদেশের। কোম্পানিটি সূত্র জানা গেছে মাতারবাড়িতে তারা কয়লা বিদ্যুত কেন্দ্রর পাশাপাশি এলএনজি চালিত বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করবে।
×