ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

একক নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়নি যারা বলেন তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী

তারা কি ইয়াহিয়ার বক্তব্য শোনেননি

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১৭ আগস্ট ২০১৭

তারা কি ইয়াহিয়ার বক্তব্য শোনেননি

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ষোড়শ সংশোধনী রায় বাতিল করে প্রধান বিচারপতির দেয়া পর্যবেক্ষণের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, কেউ কেউ বলার চেষ্টা করেন যে, একজনের নেতৃত্বে নাকি দেশ স্বাধীন হয়নি। তারা কী ইয়াহিয়া খানের বক্তব্য শোনেননি? ইয়াহিয়া খান তার ভাষণে বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য একমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেই দায়ী করেছেন। এ কারণে একমাত্র বঙ্গবন্ধুকেই গ্রেফতার করা হয়, ফাঁসির রায় ঘোষণা করে তাকে হত্যা করার চেষ্টাও করা হয়। অন্য কাউকে তো ইয়াহিয়া দোষী বা গ্রেফতার করে ফাঁসির রায় দেননি। যারা বলেন একক নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়নি, তারা কি ইয়াহিয়ার বক্তব্য শোনেননি? অনেক কথাই শুনি, কিন্তু উত্তর দেয়ার সময় এখনও আসেনি। তবে সময় আসবে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার জন্য পুনর্বার জিয়াউর রহমানকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যায় খুনী মোশতাকের দোসর ছিলেন জিয়াউর রহমান। এ কারণেই খুনী মোশতাক জিয়াকে সেনাপ্রধান বানিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়াউর রহমান যদি জড়িতই না হতেন, তিনি যদি দোষীই না হতেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িতই না থাকতেন তবে এই হত্যাকা-ের তদন্তে যুক্তরাজ্যের এমপিদের নিয়ে গঠিত গণ-কমিশনকে বাংলাদেশে আসতে দিতেন, তদন্ত করতে দিতেন। জড়িত না থাকলে কেন তিনি ওই তদন্ত কমিশনকে বাংলাদেশে আসতে দিলেন না? শুধু জিয়াউর রহমানই নয়, তার স্ত্রী খালেদা জিয়াও বঙ্গবন্ধুর যে খুনীর বিচার চলছে, তাকে দূতাবাসে চাকরি ও পদোন্নতি দিয়ে পুরস্কৃত করেছেন। যারা খুনীদের পুরস্কৃত করে তারা খুনী ছাড়া আর কী? দেশের মানুষের ভাগ্যে নিয়ে আর কেউ যাতে ছিনিমিনি খেলতে না পারে সেজন্য দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ক্ষমতা দখলকারীরা দীর্ঘ ২১টি বছর আত্মস্বীকৃতি খুনীদের ক্ষমতার সঙ্গী বানিয়েছিল। এখন একটি হত্যা হলেই বিচারের জন্য সবাই সোচ্চার হয়ে উঠেন। কিন্তু ২১টি বছর আমার বিচার চাওয়ার অধিকারই কেড়ে নেয়া হয়েছিল। যারা আমার বাবা-মা, ভাই, আত্মীয়-স্বজনকে হত্যা করেছিল, সেসব হত্যাকারীদের যারা পুরস্কৃত করেছিল, ক্ষমতার অংশীদার করেছিল- তাদের প্রতি দেশবাসীর ঘৃণা কি থাকবে না? এরা কেন রাজনৈতিক নেতৃত্ব দেবে? তাদের ক্ষমতায় আনার জন্য কেন বার বার চক্রান্ত করা হবে? ২১টি বছর তো আমি বিচার চাইতে পারিনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বুধবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। আলোচনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিম-লীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, ইতিহাসবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সাংবাদিক-কলামিস্ট আবেদ খান, বিশিষ্ট নাট্যজন আতাউর রহমান ও শহীদ জাতীয় নেতা তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা সিমিন হোসেন রিমি এমপি। কবিতা আবৃত্তি করেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি এবং শোক সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন ড. হাছান মাহমুদ ও আমিনুল ইসলাম আমিন। অধিকাংশ বক্তাই ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে প্রদত্ত পর্যবেক্ষণের কড়া সমালোচনা করেন। সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে দেয়া পর্যবেক্ষণের প্রতি ইঙ্গিত করে আরও বলেন, অনেকেই জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। কোন দল নির্বাচনে না আসলে আমাদের কী করার আছে? নির্বাচনে আসা বা না আসা দলগুলোর রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। কোন দলের নেতা যদি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করে, তার খেসারত তার দলকেই দিতে হবে। দেশ ও জনগণ কেন দেবে? ধারাবাহিক গণতন্ত্র নিয়ে ষড়যন্ত্র কেন? দেশে গণতন্ত্র আছে বলেই তো বাংলাদেশ আজ সব দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে, এতো উন্নয়ন হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দেশের কিছু সুশীল সমাজের প্রতিনিধির কর্মকা-ের সমালোচনা করে বলেন, দেশের অনেক ব্যক্তি আছেন যারা নিজেদের অনেক জ্ঞানী-গুণী ও বুদ্ধিজীবী ভাবেন তারা কেন সব সময় অপশক্তিদের উৎসাহিত করেন? এদেশের মানুষের কি একটু ভাল ও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার কোন অধিকার নেই? বাংলাদেশ আজ সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। ঠিক তখনই নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা যখন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, তখন একটি মহল ও গোষ্ঠী দেশকে আবারও পিছিয়ে দিতে ষড়যন্ত্র করছে। দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর যাতে কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে, উন্নত, সুন্দর ও সম্ভাবনায় দেশ গঠনের চলমান কার্যক্রমকে কেউ যাতে আর ব্যাহত করতে না পারে- এ ব্যাপারে দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে। আবেগজড়িত কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ একটি শোক সইতে পারে না। কিন্তু আমরা দু’বোন সব হারানোর কী দুঃসহ ব্যথা, বেদনা ও যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে আছি তা যারা স্বজন হারিয়েছেন তারাই বুঝতে পারবেন। আমার পিতা বঙ্গবন্ধু সারাটা জীবন শুধু দিয়েই গেছেন, কোন কিছু নিয়ে যাননি। দেশের মানুষের কাছে কোন দেনা রেখে যাননি, শুধু দিয়েই গেছেন। বঙ্গবন্ধু ও আমার মা দেশের মানুষের জন্য সারাজীবন শুধু ত্যাগই করে গেছেন। মৃত্যুর পর কাফনের কাপড়ও পর্যন্ত দেয়া হয়নি। রিলিফের কাপড় দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে দাফন করা হয়েছে। কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে তিনি বলেন, কী অপরাধ ছিল আমার মায়ের? কী অপরাধ ছিল শিশু রাসেলের? আসলে জাতির দুর্ভাগ্য, যারা দেশের কল্যাণে কাজ করেন, তাদেরই জীবনে চরম খেসারত দিতে হয়। ৭৫’এর পর থেকে ৯৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ মনে হতো যেন মুক্তিযুদ্ধ করাটাই যেন একটা অপরাধ। স্বাধীনতা আনাটাই যেন একটি অপরাধ। বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানের একটি প্রদেশ হিসেবে গড়ে তোলার একটা প্রচেষ্টা ওই সময়ে দেখেছি। ‘কারো একক নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি’- সর্বোচ্চ আদালতের এমন পর্যবেক্ষণের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শুধু নেতৃত্বই দেননি, দেশকে স্বাধীন করার জন্য আওয়ামী লীগ গঠন করেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু সংগ্রাম করেছেন। দলকে সুসংগঠিত করতে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিয়ে সারাদেশ চষে বেড়িয়েছেন। গোটা বাঙালী জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করেছেন, তার প্রতিটি নির্দেশ বাঙালী জাতি অক্ষরে অক্ষরে পালন করে ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করেছেন। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানও তার বক্তব্যে বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য একমাত্র জাতির পিতাকেই দায়ী করে গেছেন, অন্য কাউকে নয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দীর্ঘ ২১টি বছর ক্ষমতা দখলকারীরা আত্মস্বীকৃতি খুনীদের পুরস্কৃত করার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার বন্ধ করে আত্মস্বীকৃত খুনীদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিল। স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী ও গণহত্যাকারীদের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও উপদেষ্টা বানিয়ে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা করেছিল। পরবর্তীতে এরশাদ সরকারের সময়ও খুনীদের দিয়ে রাজনৈতিক দল গঠন করে রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী পর্যন্ত করানো হয়েছিল। দৈনিক ইত্তেফাকের অফিসে বসে ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন খুনীদের নিয়ে রাজনৈতিক দল গঠন করেছিলেন। আর খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধুর দুই খুনীকে ১৫ ফেব্রুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনে এমপি বানিয়ে বিরোধী দলের আসনে বসিয়েছিলেন। এরা সবাই ক্ষমতার সঙ্গী বানিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর খুনীদের। বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগ ও আদর্শে দীক্ষিত হয়ে দেশের মানুষের কল্যাণে ব্রতী হতে দলের প্রতিটি নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ৮ বছরে দেশ সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমার একটাই লক্ষ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন নিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন, সেই স্বপ্ন পূরণ করা। প্রতি মুহূর্তে আমি একটাই চিন্তা করি, এদেশের মানুষের স্বাধীনতা ও মুখে হাসি ফোটাতে আমার বাবা, মা, ভাইসহ সবাই জীবন দিয়ে গেছেন। তাদের স্বপ্ন পূরণ করে যদি দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারি, উন্নত-সুন্দর জীবন দিতে পারি, তখন আমার মৃত্যুর পর বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা হলে বলতে পারব- পিতা, তোমার স্বপ্ন কিছুটা হলেও পূরণ করতে পেরেছি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলবই। আমির হোসেন আমু ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণের সমালোচনা করে বলেন, জাতীয় সংসদ নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেন। কিন্তু যখন একাত্তরের গণহত্যাকারী, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীদের এমপি বানিয়ে সংসদে বসানো হয়, তখন তো আদালতের কোন পর্যবেক্ষণ দেখিনি। তাই পর্যবেক্ষণের নামে যদি কেউ রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়, তবে তা জনগণ অবশ্যই গ্রহণ করবে না। তোফায়েল আহমেদও পর্যবেক্ষণের সমালোচনা করে বলেন, প্রধান বিচারপতির আদালতের রায়ের ৩২৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন যে, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে জিয়াউর রহমান সুপ্রীম জুডিসিয়াল কাউন্সিল এনেছিলেন। যদি অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী কিছু আনেন তবে প্রধান বিচারপতি তা বহাল রাখেন কীভাবে? রায়ের পর্যবেক্ষণে যখন সংসদকে অপরিপক্ব বলে কটাক্ষ করা হয় তখন আমরা ব্যথিত হয়েছি। কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীও পর্যবেক্ষণের কড়া সমালোচনা করে বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে যখন এয়ার ফোর্সের হাজারেরও বেশি অফিসার-সৈনিকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হলো, তখন তো কারোর মুখে কোন কথা শুনিনি। প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে বেশি কথা বলতে আমার রুচিতে বাধে। সুপ্রীমকোর্ট প্রাঙ্গণে একটি মূর্তি বসিয়ে মানচিত্র ঢেকে দিয়ে ঈদকে সামনে রেখে একটি রায়ট বাঁধানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। আর ড. কামাল হোসেনরা যতই কথা বলেন না কেন, নিজেদের পাপ ঢেকে রাখতে পারবে না। মোহাম্মদ নাসিম বিচারপতিদের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, আদালতের প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাই, যখন বঙ্গবন্ধু সপরিবারে হত্যা করা হলো, শিশু রাসেলকে হত্যা করা হলো, ইনডেমনিটি দিয়ে বিচারের পথ বন্ধ করে দেয়া হলো- তখন কোথায় ছিল আমাদের আদালত? কোথায় ছিলেন বিচারকরা? ২১টি বছর তো দেখিনি কোন পর্যবেক্ষণ দিতে। বরং সামরিক শাসনকে বৈধতা এবং ক্ষমতার অংশীদার হতেই দেখা গেছে অনেক বিচারপতিদের। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রচলিত আদালতে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়ে গেছে। এখন নিয়তি ও ইতিহাসের আদালতে জাতির পিতার হত্যাকা-ের বিচার শুরু হয়েছে। খুনীরা সেদিন ভেবেছিল বাংলার ইতিহাস বঙ্গবন্ধুকে ভুলিয়ে দেবে। তাকে বারবার ষড়যন্ত্রের ছোরা দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। কিন্তু ৪২ বছর সেই ষড়যন্ত্রকারীদের সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে বঙ্গবন্ধু তার সমাধি থেকে জেগে উঠেছেন। ইতিহাসবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হত্যার নেপথ্যের কুশীলবদের মুখোশ জাতির সামনে উন্মোচনে একটি পূর্ণাঙ্গ শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ে প্রত্যক্ষ খুনীদের বিচার হয়েছে, কিন্তু নেপথ্যে থেকে কারা এসব খুনী বানিয়েছে, হত্যাকা-ের ষড়যন্ত্র করেছে, খুনীদের উৎসাহিত ও মদদ দিয়েছে তাদের মুখোশ জাতির সামনে উন্মোচন করতেই হবে। বঙ্গবন্ধুর জীবনী যেমন অসমাপ্ত রয়ে গেছে, বিচারও অসমাপ্ত রয়ে গেছে। এ বিচার সমাপ্ত করতেই হবে। সাংবাদিক-কলামিস্ট আবেদন খান বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে নিয়ে ব্যক্তি আত্মপ্রচারে ব্যবহার না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু পবিত্র একটি নাম, তার পরিবারও পবিত্র নাম। এই পবিত্র নামগুলোকে কেউ যাতে পণ্য হিসেবে কিংবা আত্মপ্রচারে ব্যবহার করা যেন না হয়। রাজনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ষড়যন্ত্রকারীরা ছদ্মবেশে ঘুরাফেরা করছে। নানানভাবে তারা অস্তিত্ব জানান দেয়ার চেষ্টা করছে। ঐক্যবদ্ধভাবেই এদের রূখে দিতে হবে।
×