ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইংল্যান্ড-উইন্ডিজ ডে নাইট টেস্ট শুরু আজ

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ১৭ আগস্ট ২০১৭

ইংল্যান্ড-উইন্ডিজ ডে নাইট টেস্ট শুরু আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ধারণা করা হয় ক্রিকেট খেলার জন্ম ইংল্যান্ডে। ইতিহাসের প্রথম টেস্ট ম্যাচটি কিন্তু সেখানে হয়নি, হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ায়। কাকতালীয়ভাবে প্রথম ডে-নাইট টেস্টেও সেই অসিদের নাম লেখা হয়েছিল ২০১৫ সালে এ্যাডিলেডে। সাদা পোশাকের দীর্ঘপরিসরে পঞ্চম ডে-নাইট ম্যাচে এসে প্রথমবারের মতো গোলাপী বল আর ফ্লাডলাইটের আলোয় খেলতে যাচ্ছে কুলীন ইংলিশরা। এজবাস্টনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আজ থেকে শুরু হওয়া তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টটাই হবে ডে-নাইট। আয়োজন স্মরণীয় করে রাখতে ফেবারিট জো রুটের দল সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩-১এ উড়িয়ে দিয়েছে। র‌্যাঙ্কিংয়ের তিনে তারা, অন্যদিকে আট নম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গত বছর দুবাইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ডে-নাইট টেস্টের স্বাদ পায় ক্যারিবীয়রা। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ভাল কিছুর প্রত্যয় জেসন হোল্ডারদের কণ্ঠে। সবমিলিয়ে দু’দলই ক্রিকেটের জন্মভূমিতে গোলাপী বলের রোমাঞ্চের অপেক্ষায়। ইতিহাসের প্রথম ডে-নাইট টেস্ট ম্যাচ হয়েছিল এ্যাডিলেডে। ২০১৫ সালের ওই ম্যাচে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার প্রতিপক্ষ ছিল তাসমান প্রতিবেশী নিউজিল্যান্ড। দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সেই ম্যাচে ৩ উইকেটের নাটকীয় জয় পেয়েছিল অসিরা। মূলত টেস্টে আরও বেশি করে দর্শক টানতে, খেলাটিকে আকর্ষণীয় করে তুলতে ফ্লাডলাইটের আলোয় গোলাপী বলের নতুন এই ধারণা। মাঠে গড়ানোর আগে বেশ কয়েক বছর এ নিয়ে ব্যাপক গবেষণা হয়। পরীক্ষমূলকভাবে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের ঘরোয়া দীর্ঘ পরিসরের বেশ কিছু ম্যাচও আয়োজন করা হয়। দ্বিতীয় ডে-নাইট টেস্টটা হয়েছিল মরুর দেশ আরব আমিরাতে। গত বছর দুবাইয়ে ৫৬ রানে জিতেছিল পাকিস্তান। বাকি দুটি ডে-নাইট টেস্টও হয় গত বছরই। এ্যাডিলেডে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ উইকেটে হারায় স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। আর ব্রিসবেনে বছরের শেষদিকে পাকিস্তানের বিপক্ষে স্টিভেন স্মিথদের জয় ৩৯ রানে। ঘরের মাটিতে প্রথমবারের মতো ডে-নাইট টেস্ট নিয়ে ইংলিশদের রোমাঞ্চের শেষ নেই। ‘পুরোপুরি অচেনা জায়গায় পা পড়ছে। একটা মাত্রই বল করেছি গোলাপী বলে, চেষ্টা করেছি যতটা সম্ভব সোজা বল করতে। আমি ঠিক জানি না কি হবে। আমাদের মাঠে গিয়ে শুধু মানিয়ে নিতে হবে, তারপর দেখা যাক কি হয়।’ বলেন পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড। নিজেরা ফেবারিট হলেও প্রতিপক্ষ নিয়ে সতর্ক ইংলিশরা, ‘আপনারা জানেন কিছুটা অনভিজ্ঞ দল সাফল্যের জন্য সবসময়ই ক্ষুধার্ত থাকে। ওরা নিজেদের প্রমাণের জন্য তারা অঙ্গীকারাবদ্ধ থাকবে এবং এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। এই সিরিজে প্রতিটি বলই হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং সে বিষয়ে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।’ ডে-নাইট টেস্টের ইংল্যান্ড দলে নতুন মুখ দু’জন। অভিষেকের অপেক্ষায় সারে ওপেনার মার্ক স্টোনম্যান। নেয়া হয়েছে হ্যাম্পশায়ারের ২০ বছর বয়সী তরুণ লেগস্পিনার ম্যাসন ক্রেনকে। পোটিয়াদের বিপক্ষে প্রথম দু’টি টেস্ট খেলা লিয়াম ডসনের জায়গা হয়েছে। সদ্য সমাপ্ত ওই সিরিজে ফর্মহীনতায় লড়াই করা কিটন জেনিংসের পরিবর্তে কাউকে দলে নেয়াটা নিশ্চিতই ছিল। ওপেনিংয়ে অভিজ্ঞ কুকের সঙ্গী হিসেবে স্টোনম্যানের পারফর্মেন্স কেমন হবে সেটিই এখন দেখার বিষয়। ইনজুরি কাটিয়ে ফিরেছেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি মিস করা অলরাউন্ডার ক্রিস ওকসও। তবে ইংল্যান্ডের মতো দলে ইমেজ নয়, ভাল করেই টিকে থাকতে হবে বলে মনে করেন এই তারকা পেসার। ব্যাটিংয়ে কুকছাড়া পাচ্ছেন অভিজ্ঞ জনি বেয়ারস্টোকে। পেসার জেমস এ্যান্ডারসন, স্টুয়ার্ট ব্রড, টবি বোল্যান্ড, ক্রিস ওকসের সঙ্গে স্পিনার মঈন আলিদের নিয়ে বোলিং আক্রমণ দুর্দান্ত। তুখোড় অলরাউন্ডার বেন স্টোকসের কথাও আলাদা করে বলতে হবে। সেই হিসেবে হোল্ডারের নেতৃত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলটা আনকোরা। বিশেষ করে ক্রেইগ ব্রেথওয়েট ছাড়া অভিজ্ঞ কোন ব্যাটসম্যানই নেই। তবে ফর্মের তুঙ্গে আছেন স্পিন বোলিং-অলরাউন্ডার রোস্টন চেজ। হোল্ডার, শ্যানন গ্যাব্রিয়েল, মিগুলে কামিন্স, আলজারি জোসেফদের নিয়ে পেস বোলিং আক্রমণ অবশ্য ভালই। তবু ক্যারিবীয়দের নিয়ে আশায় জোয়েল গার্নার। সাবেক পেস বোলিং গ্রেট বর্তমানে দলের ম্যানেজার। তিনি বলেন, ‘ঘরের মাটিতে ইংল্যান্ড ফেবারিট। তারা ভাল ক্রিকেট খেলছে। কিন্তু সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হিসেবের বাইরে ছুড়ে ফেলার সময় হয়নি। আমাদের দলে ভালমানের পেসার রয়েছে। ডে-নাইট ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে। সুতরাং এজবাস্টনে সমান সুযোগ থাকবে।’ বর্তমান কোচ স্টুয়ার্ট ল’র কণ্ঠেও কিছু করার প্রত্যয়।
×