ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কর্মসংস্থান ও শেয়ারবাজার নিয়ে আশাবাদী ভোক্তারা

প্রকাশিত: ০৩:৪৫, ১৭ আগস্ট ২০১৭

কর্মসংস্থান ও শেয়ারবাজার নিয়ে আশাবাদী ভোক্তারা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সার্বিকভাবে কনজিউমার কনফিডেন্স বা ভোক্তার আস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। এ অঞ্চলের ১৮টি দেশের মধ্যে ১১ দেশেই ভোক্তার আস্থা স্থিতিশীল পর্যায়ে । এতে বাংলাদেশকে নিয়ে ভোক্তার আশাবাদের বিষয়টিও উঠে এসেছে। চলতি বছরের প্রথমার্ধে এ অঞ্চলের দেশের মাস্টার কার্ড পরিচালিত জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। বুধবার ‘মাস্টার কার্ড ইনডেক্স অব কনজিউমার কনফিডেন্স’ জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। জরিপের ফলে বলা হয়, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভোক্তা আস্থাসূচকে অগ্রগতি অব্যাহত ছিল। তবে তা খুবই নগণ্য। যেমন, এ সময়ে সূচকটি বেড়েছে দশমিক ৪ দশমিক ২ পয়েন্ট। বাংলাদেশের স্কোর সূচক (+) ৬.৬ পয়েন্ট বেড়ে ৮৯ দশমিক ৪ পয়েন্টে উঠেছে। বিশেষ করে শেয়ারবাজার সংক্রান্ত উপাদানে বাংলাদেশের সূচক (+) ১৫.০ পয়েন্ট বেড়েছে। সূচকের এ উত্তরণ বাংলাদেশকে নিয়ে ভোক্তার আশাবাদেরই প্রকাশ। এর মানে হলো, ভোক্তার বিবেচনায় বাংলাদেশ এখন আশাবাদের দেশ। প্রসঙ্গত, মাস্টার কার্ডের এ ভোক্তা আস্থাসূচক ও প্রতিবেদন কোনভাবেই মাস্টার কার্ডের আর্থিক কার্যক্রমের প্রতিফলন বা ফলাফল নয়। এটি সার্বিকভাবে সংশ্লিষ্ট দেশের ভোক্তার আস্থার প্রতিফলন। চলতি বছরের জুন ও জুলাইয়ে মাস্টার কার্ড এ জরিপ চালায়। এতে ১৭টি দেশের ১৮ থেকে ৬৪ বছর বয়সী মোট ৮ হাজার ৭৪৬ লোকের মতামত নেয়া হয়। অংশগ্রহণকারীদের নিজ নিজ দেশের পাঁচটি অর্থনৈতিক বিষয়ে ছয় মাসের পূর্বাভাস জানাতে বা ভবিষ্যদ্বাণী করতে বলা হয়। বিষয়গুলো হচ্ছে অর্থনীতি, কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা, নিয়মিত বা দৈনন্দিন আয়ের সম্ভাবনা, শেয়ারবাজার ও জীবনযাত্রার মান। শূন্য থেকে ১০০ নম্বরের ভিত্তিতে এ সূচকের পয়েন্ট হিসাব করা হয়। এর মধ্যে শূন্য হলো একেবারে নিরাশার বা চরম হতাশাপূর্ণ আর ১০০ হলো সর্বোচ্চ আশাবাদে পরিপূর্ণ। ৫০ হলো নিরপেক্ষ অবস্থান। প্রকাশিত প্রতিবেদন মতে, কম্বোডিয়ার ভোক্তাদের মধ্যে দেশটির ভোক্তা আস্থা সূচক দাঁড়িয়েছে ৯৩ দশমিক ১ পয়েন্ট। এবারের জরিপে এটিই কোন দেশের সর্বোচ্চ স্কোর। কম্বোডিয়ার পরের চারটি স্থানে অর্থাৎ শীর্ষ পাঁচে রয়েছে ভিয়েতনাম (স্কোর ৯০ দশমিক ৮ পয়েন্ট), বাংলাদেশ (৮৯ দশমিক ৪ পয়েন্ট), ফিলিপিন্স (৮৮ দশমিক ৮ পয়েন্ট) ও চীন (৮৮ দশমিক ২ পয়েন্ট)। আগের জরিপে দক্ষিণ কোরিয়ায় ভোক্তা আস্থা সূচক সামান্য বাড়লেও এবারে সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি হয়েছে এই দেশের। দক্ষিণ কোরিয়ার ভোক্তা আস্থা সূচক ৭৮ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। দেশটি জরিপের আওতাধীন পাঁচটি উপাদান বা বিষয়ের সব কটিতেই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছে। যেমন অর্থনীতিতে (+) ৫৯.০ পয়েন্ট, কর্মসংস্থানের সম্ভাবনায় (+) ৪৭.২ পয়েন্ট, নিয়মিত বা দৈনন্দিন আয়ের সম্ভাবনায় (+) ২৪.০ পয়েন্ট), শেয়ারবাজারে (+) ৫৪.২ পয়েন্ট এবং জীবনযাত্রার মানে (+) ৪৯.৪ পয়েন্ট বেড়েছে। সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া হতাশা বা নিরাশার বলয় থেকে বেরিয়ে নিউট্রাল বা নিরপেক্ষ অবস্থানে উঠেছে। দুটি দেশেরই ভোক্তা আস্থাসূচক ১০ পয়েন্টের বেশি বেড়েছে। এর মধ্যে সিঙ্গাপুরের সূচক (+) ১৫.৪ পয়েন্ট বেড়ে ৪৫ দশমিক ৪ পয়েন্টে এবং মালয়েশিয়ার সূচক (+) ১১.১ পয়েন্ট বেড়ে ৪২ দশমিক ৩ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। উভয় দেশেই শেয়ারবাজার উপাদান ১৫ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। এবারের জরিপে চীন ভোক্তা আস্থাসূচকে আরও অগ্রগতি লাভ করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের সূচক (+) ৬.৬ পয়েন্ট বেড়ে ৮৯ দশমিক ৪ পয়েন্টে এবং চীনের সূচক (+) ৭.৪ পয়েন্ট বেড়ে ৮৮ দশমিক ২ পয়েন্টে উঠেছে। বিশেষ করে শেয়ারবাজার সংক্রান্ত উপাদানে চীনের সূচক (+) ১২.১ পয়েন্ট এবং বাংলাদেশের সূচক (+) ১৫.০ পয়েন্ট বেড়েছে। জরিপে ভোক্তা আস্থাসূচক সবচেয়ে বেশি পতন ঘটেছে ভারতের। মাস্টার কার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল এ প্রসঙ্গে বলেন, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কয়েকটি দেশ কিছু সমস্যার মধ্যে থাকলেও সার্বিকভাবে কনজুমার কনফিডেন্স বা ভোক্তা আস্থাসূচক বেড়েছে। তবে কম্বোডিয়া, বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, ও ফিলিপিন্সে উদীয়মান অর্থনীতির সহন ক্ষমতা স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে।
×