ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

টোরিদের লক্ষ্য ক্ষমতাধর সিলেকশন কমিটি

প্রকাশিত: ০৩:১১, ১৭ আগস্ট ২০১৭

টোরিদের লক্ষ্য ক্ষমতাধর সিলেকশন কমিটি

ব্রিটেনে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি ক্ষমতাধর সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কমিটির দখল নেয়ার চেষ্টা করছে। প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে যেন ব্রেক্সিটের পর বিতর্কিত আইন প্রণয়ন করতে না পারেন সেটি তাদের লক্ষ্য। সাধারণ নির্বাচনে কমন্সসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হাতছাড়া হওয়ার পর টোরিরা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন। নতুন বিরোধী দলগুলো ব্রেক্সিট বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার বিষয়ে তাদের টেরেসা মে’র পরিকল্পনা নস্যাত করতে একজোট হচ্ছে। ইন্ডিপেন্ডেন্ট। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের শরতকালীন অধিবেশনটি বিতর্কমুখর হয়ে উঠতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। টোরিরা চান প্রধানমন্ত্রী যেন হার্ড ব্রেক্সিটের পথে না যান। বর্তমান সময়ে কেবলমাত্র রিপিল বিলের মাধ্যমেই প্রধানমন্ত্রী ইইউ আইনে এক হাজারটি সংশোধনী আনতে পারেন। এসব সংশোধনী পাসের জন্য এমপিদের ভোটের প্রয়োজন নেই। নির্বাহী আদেশে মে সরকার এখন অনেকগুলো অধ্যাদেশ জারি করতে যাচ্ছে। হেনরি আট অনুচ্ছেদের আওতায় সরকার এসব জারি করবে বলে জানা গেছে। এ অনুচ্ছেদের আওতায় পার্লামেন্টে পাস হওয়া বিলেও সরকারপ্রধান চাইলে পরিবর্তন আনতে পারেন। এ থেকে ক্ষমতাসীন দলেরই অনেকে ধারণা করছেন মে’র লক্ষ্য নিজের ক্ষমতা আরও সুসংহত করা। ব্রিটিশ ভোক্তা ও শ্রমিক শ্রেণীর স্বার্থ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। উৎপাদিত পণ্যের পরিবেশগত মান রক্ষা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যদিও মে ইতোমধ্যেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি শ্রমিক শ্রেণীর স্বার্থ সংরক্ষণ করবেন। কিন্তু এ বিষয়ে কী আইন প্রণয়ন করা হবে তিনি সে বিষয়ে কিছুই জানাননি। এছাড়া খাদ্যমান সংরক্ষণের বিষয়ও তিনি কোন পদক্ষেপ নেননি। আগামী মাসেই সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কমিটি গঠিত হওয়ার কথা। টোরিরা যদি এতে প্রাধান্য বিস্তারের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে তবে সেপ্টেম্ববর মাসটিতে রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত থাকবে বলে ধরে নেয়া যায়। মে এখন গ্রীষ্মকালীন অবকাশে রয়েছেন। তার অনুপস্থিতিকে তাই সুযোগ হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করছেন টোরি সদস্যরা। চ্যান্সেলর ফিলিপ হ্যামন্ড এবং বৈদেশিক বাণিজ্যমন্ত্রী লিয়াম ফক্স সম্প্রতি যৌথভাবে লেখা এক নিবন্ধে বলেছেন, “ঐক্য প্রকাশ করার জন্য ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘পেছনের দরজা’ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে না।” ২০১৯ সালের ব্রেক্সিট বা ইইউ থেকে ব্রিটেন বের হয়ে যাওয়ার পর তিন বছরের একটি অন্তর্বর্তী চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে। এ চুক্তির বিষয়বস্তু নিয়ে অবশ্য তাদের দুজনের মধ্যে মতপার্থক্য রয়ে গেছে। তবে মে যদি দলীয় নীতি বিসর্জন দিয়ে হার্ড ব্রেক্সিটের পথে অটল থাকেন তবে দল থেকে পদত্যাগের হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন আনা সোবরি নামের একজন এমপি। তিনি প্রথম এমপি, যিনি মে’-কে এ বিষয়ে হুমকি দিলেন। এখন নয় সদস্যবিশিষ্ট কমিটি অব সিলেকশন গঠন নিয়ে টোরি দলের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। গতবার তারা সেখানে পাঁচটি আসন পেয়েছিল। কিন্তু এবার সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় তারা বড়জোড় চারজন সদস্য দিতে পারে। টোরিরা এমন ভাব দেখানোর চেষ্টা করছেন যে, জুন মাসে নির্বাচন হয়নি এবং তারা এখনও পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে রয়ে গেছেন। কমিটি গঠিত না হওয়ায় তিন মাস আগে নির্বাচন হলেও সরকার কিছু করতে পারেনি। শরতকালীন অধিবেশনটি মে সরকারের জন্য তাই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কমিটিতে তারা জায়গা করে নিতে না পারলে ব্রেক্সিট নিয়ে অগ্রসর হওয়া তাদের পক্ষে দুরূহ হয়ে পড়বে।
×