ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভার্জিনিয়ায় সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্টের ভূমিকার প্রতিবাদ

ট্রাম্পের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে তিন নির্বাহীর পদত্যাগ

প্রকাশিত: ০৩:৩৫, ১৬ আগস্ট ২০১৭

ট্রাম্পের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে তিন নির্বাহীর পদত্যাগ

যুক্তরাষ্ট্রের শার্লোট্সভিল ঘটনার জন্য দায়ী শ্বেত শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের সরাসরি তাৎক্ষণিক নিন্দা না জানানোর প্রতিবাদে ট্রাম্পের গঠিত আমেরিকান ম্যানুফ্যাকচারিং কাউন্সিল থেকে তিনজন প্রধান নির্বাহী পদত্যাগ করেছেন। এতে ট্রাম্পের ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত এই উপদেষ্টা পরিষদ নতুন এক সঙ্কটের মুখোমুখি হলো। খবর গার্ডিয়ান ও নিউইয়র্ক টাইমস। পদত্যাগকারী প্রধান নির্বাহীদের মধ্যে রয়েছেন বৃহৎ ওষুধ শিল্প প্রতিষ্ঠান মার্ক ফার্মার প্রধান কেনেথ ফ্রেজিয়ার, খেলোয়াড়দের পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আন্ডার আর্মারের প্রধান নির্বাহী প্ল্যাঙ্ক এবং কারিগরি ও প্রযুক্তিবিষয়ক কোম্পানি ইন্টেলের প্রধান নির্বাহী ব্রায়ান কারজেনিচ। মার্ক ফার্মার প্রধান আফ্রো-আমেরিকান নাগরিক কেনেথ ফ্রেজিয়ার খুব একটা উচ্চবাচ্য না করে পদত্যাগ করলেও প্ল্যাঙ্ক বলেন, আন্ডার আর্মার ক্রীড়া কর্মকা-ে নিজেদের নিয়োজিত রাখে, রাজনীতি নিয়ে নয়। আমাদের কোম্পানি দেশের প্রতিটি নাগরিককে ক্রীড়া শক্তির মাধ্যমে একতা, বৈচিত্র্য ও সংহতির মধ্যে আনতে চায়। অপরপক্ষে ইনটেলপ্রধান ব্রায়ান বলেন, আমাদের দেশের বিভক্ত রাজনৈতিক পরিবেশের জন্য যে মারাত্মক সঙ্কটের উদ্ভব হয়েছে তার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আমি পদত্যাগ করছি। ট্রাম্প গঠিত আমেরিকান বাণিজ্য পরিষদ থেকে এই তিনজনের একযোগে পদত্যাগ ট্রাম্পকে কোণঠাসা করে ফেলেছে, কেননা এর আগেও তার জলবায়ু নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে এই প্যানেল থেকে আরও তিনজন গুরুত্বপূর্ণ নির্বাহী কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন। এছাড়া, তার দলের ভেতরে- বাইরে কংগ্রেসের অনেক ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান নেতা, শ্বেত শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের প্রতি ট্রাম্পের পক্ষপাতমূলক আচরণের তীব্র সমালোচনা করেন। এমনকি ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ও প্রেসিডেন্ট কন্যা ইভানকা ট্রাম্প ও তাদের বিরূপ মনোভাব ব্যক্ত করলে ট্রাম্প অনেকটা অনিচ্ছা সত্ত্বেও সোমবার গণমাধ্যমের সামনে উপস্থিত হয়ে দেশের অর্থনীতি শিল্প বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান নিয়ে নানা ধরনের কথাবার্তা বলার পর বলেন, বর্ণবাদ খুবই খারাপ। শ্বেত শ্রেষ্ঠত্ববাদী, নব নাৎসি অথবা কে কে কে সহ যারা এ কাজে জড়িত তারা আমেরিকানদের এ পর্যন্ত অর্জিত সব ভাল জিনিসকে মন্দ জিনিসে পরিণত করছে। দুইদিনের নীরবতার পর ঘরে-বাইরে ব্যাপক সমালোচনা সামাল দিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শ্বেত শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের সমালোচনা করে এ বিবৃতি দেন। কিন্তু ইতোমধ্যে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার নৈতিক অবস্থানের যথেষ্ট ক্ষতি হয়ে গেছে। ট্রাম্প তার প্রদত্ত ভাষণে আরও অনেক ভাল ভাল কথা বলেন। তিনি বলেন, এক সংবিধানের অধীনে বসবাসরত নাগরিক এবং এক ঈশ্বরের সৃষ্টি হিসেবে কালো-ধলো সবাইকে মিলেমিশে বসবাস করতে হবে, পরস্পরকে ভালবাসতে হবে, ঘৃণা ও সহিংসতা পরিহার করে একতাবদ্ধ থাকতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু তার এই ভাষণ যাদের উদ্দেশে দেয়া সেই বর্ণবাদীরা ট্রাম্পের এসব কথা একজন স্কুলশিক্ষকের উপদেশ বাণী বলে উড়িয়ে দিয়েছে। রিচার্ড স্পেনসারসহ চরম ডানপন্থী নেতৃবৃন্দ, যারা শালোটস্ভিল ঘটনার মূল ইন্ধনদাতা তারা ট্রাম্পের এসব কথার কোন গুরুত্ব দেননি। স্পেনসার গত সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, ট্রাম্পের বিবৃতি ‘কুম্বায়া (আধ্যাত্মিক) গানের মতো অর্থহীন।’ ট্রাম্প নিজেও তার প্রদত্ত বিবৃতি নিয়ে খুব একটা আন্তরিক নন নেহায়েত চাপের মুখে পড়ে তিনি এই বিবৃতি দিয়েছেন বলে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়। কেননা, সাংবাদিকদের সম্মুখে দেয়া বক্তব্যের পর পরই সোমবার রাতে তিনি টুইটারে মন্তব্য করেন, এই ভুয়া সংবাদমাধ্যমগুলোকে কখনও খুশি করা যায় না, আসলে এরা খুবই খারাপ লোক।
×