ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গুয়াম হামলা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে উঃ কেরিয়া

মার্কিন জবাবের অপেক্ষা

প্রকাশিত: ০৩:৩৪, ১৬ আগস্ট ২০১৭

মার্কিন জবাবের অপেক্ষা

যুক্তরাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণাধীন প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ গুয়ামে আঘাত হানার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে উত্তর কোরিয়া। তবে পিয়ংইয়ং জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের আচরণের ওপরই তাদের পরবর্তী সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে। এর আগে সোমবার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস উত্তর কোরিয়াকে গুয়ামে হামলার বিষয়ে সতর্ক করে দেন। খবর বিবিসি, সিএনএন ও ওয়েবসাইটের। ম্যাটিস সোমবার পেন্টাগনে সংবাদ সম্মেলনে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনি যে কোন দেশের নাগরিকদের আঘাত হানবেন আর সেটির পরিণতি আপনি ভোগ করবেন না তা হতে পারে না।’ এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন বলেছেন, উত্তর কোরিয়ায় আঘাত হানতে যুক্তরাষ্ট্রকে আগে বিষয়টি তাদের সম্মতি নিতে হবে।’ টেলিভিশনে তিনি বলেছেন, কোরিয়া উপদ্বীপে যুদ্ধ শুরুর সিদ্ধান্ত কেবলমাত্র দক্ষিণ কোরিয়াই নিতে পারে। তার দেশের সম্মতি ছাড়া কেউ এই যুদ্ধ শুরু করতে পারে না। গত সপ্তাহে উত্তর কোরিয়া জানিয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের বোমারু বিমানগুলোর ঘাঁটি গুয়ামের উপকূলীয় সাগরে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তীব্র বাকযুদ্ধ চলার মধ্যে এ কথা জানিয়েছিল উত্তর কোরিয়া। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘কিম জং উন পরিকল্পনাটি দীর্ঘ সময় ধরে পরীক্ষা করে দেখেছেন এবং উর্ধতন সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে এটি নিয়ে আলোচনা করেছেন।’ গুয়ামকে আগুন দিয়ে ঘিরে ফেলার প্রস্তুতি নেয়ার পর আদেশের জন্য অপেক্ষা করছেন উত্তর কোরিয়ার কৌশলগত বাহিনীর কমান্ডার। কিম জং উন বলেন, ‘বহু কৌশলগত পারমাণবিক উপকরণ প্রথম আমাদের কাছে নিয়ে এসেছিল যুক্তরাষ্ট্র, তাই সঠিক সিদ্ধান্তটা প্রথমে তাদেরই নেয়া উচিত। যদি কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা কমানোর ইচ্ছা তাদের থাকে এবং বিপজ্জনক একটি সামরিক সংঘাত ঠেকাতে চায় তাহলে পদক্ষেপের মাধ্যমে তাদের তা দেখানো উচিত।’ একশনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে প্রস্তুত থাকার জন্য সেনাবাহিনীকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়। এর আগে ম্যাটিস সতর্ক করে বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে কোন হামলা হলে দ্রুত যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়বে। তিনি বলেন, ‘যে কোন সময় যে কোন এলাকা থেকে আসা যে কোন হামলা থেকে দেশকে রক্ষার দায়িত্ব পালন করবে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী।’ যুদ্ধ এড়ানোর আহ্বান দক্ষিণের ॥ উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচী নিয়ে উত্তেজনা বাড়তে থাকার মধ্যে দেশটির সঙ্গে যুদ্ধে না জড়ানোর জন্য মিত্রদেশ যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন। দক্ষিণ কোরিয়া সফররত শীর্ষ এক মার্কিন সামরিক কর্মকর্তাকে তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়া সঙ্কটের কূটনৈতিক সমাধানের পথ অবশ্যই আছে। মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল জোসেফ ডানফোর্ডও জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র কূটনীতিকেই প্রাধান্য দিচ্ছে। তবে তা ব্যর্থ হলে সেক্ষেত্রে সামরিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সেটিরও প্রস্তুতি চলছে। তবে মুন জায়ে-ইন উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা নিয়ে সোমবার জ্যেষ্ঠ সহযোগী ও উপদেষ্টাদের সঙ্গে এক নিয়মিত বৈঠকে বলেন, ‘জাতীয় স্বার্থই আমাদের (দক্ষিণ কোরিয়া) প্রথম অগ্রাধিকার। আর আমাদের জাতীয় স্বার্থ নিহিত আছে শান্তির মধ্যে। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের নীতির নির্দেশিত পথে শান্ত এবং দায়িত্বশীলভাবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সাড়া দেবে বলেই আমার বিশ্বাস।’ তিনি আরও বলেন, ‘কোরীয় উপদ্বীপে আর কোন যুদ্ধ হবে না। উত্থান-পতন যাই হোক, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু প্রকল্প নিয়ে সঙ্কট আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান হতে হবে।’ যদিও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরিয়াকে ক্রমাগত হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। তবে ট্র্রাম্পকে সমর্থন করলেও সুর নরম করেছেন দেশটির দায়িত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা। যাদের একজন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচ. আর. ম্যাকমাস্টার। রবিবার তিনি এবিসি নিউজকে বলেন, ‘আমার মনে হয় এক সপ্তাহ আগের তুলনায় (যুদ্ধ) পরিস্থিতি এখন কিছুটা ভাল। যদিও এক দশক আগের তুলনায় আমরা যুদ্ধের অনেক কাছে চলে গেছি।’
×