ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

লন্ডন বিশ্ব এ্যাথলেটিক্সে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠত্ব

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ১৫ আগস্ট ২০১৭

লন্ডন বিশ্ব এ্যাথলেটিক্সে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠত্ব

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বরাবরের মতোই এবারও সমাপ্তির পর শ্রেষ্ঠত্ব দখলে থাকল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। বিশ্ব এ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপসে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য খর্ব হয়নি। এবার তাদের এ্যাথলেটদের সঙ্গে পেরে ওঠার মতো তেমন কোন প্রতিদ্বন্দ্বী দেশই ছিল না। প্রতিবছর জ্যামাইকা বড় ধরনের হুমকি হয়ে থাকে তাদের জন্য ট্র্যাক এ্যান্ড ফিল্ডে। কিন্তু এবার সেই জগতেও যুক্তরাষ্ট্রই দাপট দেখিয়েছে। তারা ১০ স্বর্ণ, ১১ রৌপ্য ও ৯ ব্রোঞ্জসহ ৩০ পদক নিয়ে শীর্ষে থেকে শেষ করেছে তারা। দুইয়ে থাকা কেনিয়া ৫ স্বর্ণ, ২ রৌপ্য ও ৪ ব্রোঞ্জসহ ১১ পদক নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে। রবিবার লন্ডন অলিম্পিক স্টেডিয়ামে শেষদিনের প্রতিযোগিতায় ক্যারিয়ারের ১৬তম স্বর্ণপদক জিতেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এ্যালিসন ফেলিক্স। তিনি মহিলাদের ৪০০ মিটার রিলেতে স্বর্ণ জয় করেন। আর ৮০০ মিটারে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ক্যাস্টার সেমেনিয়া। কিন্তু ৫০০০ মিটারে আলমাজ আয়ানার ডাবল জয়ের স্বপ্ন ভেঙ্গে দিয়ে স্বর্ণ জিতেছেন কেনিয়ার হেলেন ওবিরি। পুরুষদের হাই জাম্পে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কাতারের ফেবারিট মুতাজ ইসা বারশিম। এবার লন্ডন বিশ্ব আসর থেকেই বিদায় ঘটেছে দুই কিংবদন্তি তারকা জ্যামাইকার স্প্রিন্টার উসাইন বোল্ট আর ব্রিটিশ দৌড়বিদ মো ফারাহর। ক্যারিয়ারের সমাপ্তি টেনেছেন তারা দু’জনই। তাই শেষদিনের প্রতিযোগিতা ছিল অনেকটাই নিষ্প্রভ। বোল্ট তার উভয় ইভেন্টে হেরে যাওয়াতে জ্যামাইকা দলই যেন বিমর্ষ হয়ে পড়েছিল। তাই মহিলাদের স্প্রিন্টেও কোন স্বর্ণপদক আসেনি। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পথ আরও কণ্টকমুক্ত ছিল। শ্রেষ্ঠত্ব পাওয়ার জন্য তাদের খুব বেশি ঝামেলা পোহাতে হয়নি। শেষদিনেও অন্যতম ট্র্যাক এ্যান্ড ফিল্ড এ্যাথলেট ফেলিক্স যুক্তরাষ্ট্রকে স্বর্ণ উপহার দিয়েছেন মহিলাদের ৪০০ মিটার রিলেতে। তার সঙ্গে থাকা কুয়ানেরা হায়েস, শাকিমা উইম্বলি ও ফিলিস ফ্রান্সিস শেষ করেছেন ৩ মিনিট ১৯.০২ সেকেন্ডে। এটি ক্যারিয়ারের ১৬তম বিশ্ব আসর পদক ফেলিক্সের। এর মধ্যে ১১টি স্বর্ণপদক। রিলে দলের সঙ্গেই জিতেছেন ৯টি পদক এবং ব্যক্তিগত ইভেন্টে ৭টি পদক। ফেলিক্স অলিম্পিকেও ৬ স্বর্ণসহ জিতেছেন ৯ পদক। এই ইভেন্টে এবার স্বাগতিক ব্রিটেন রৌপ্য জয় করেছে ৩ মিনিট ২৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে। আর পোল্যান্ড ৩ মিনিট ২৫.৪১ সেকেন্ড টাইমিংয়ে তৃতীয় হয়। মহিলাদের ৮০০ মিটারে সবার নজর ছিল সেমেনিয়ার দিকে। ২০০৯ সালে লৈঙ্গিক বিতর্কে বেশ কিছুদিন ট্র্যাকের বাইরে থাকতে হয়েছিল। সেই সেমেনিয়াই আবার জিতেছেন স্বর্ণপদক। রিও অলিম্পিকেও তিনি স্বর্ণপদক জয় করেন। এবার ১ মিনিট ৫৫.১৬ সেকেন্ড সময় নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হলেন। এটি বিশ্ব আসরে তার তৃতীয় স্বর্ণপদক। ২০০৯ ও ২০১১ সালেও স্বর্ণ জিতেছিলেন তিনি। বুরুন্ডির ফ্রান্সিন নিয়োনসাবা ১ মিনিট ৫৫.৯২ সেকেন্ড সময় নিয়ে রৌপ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের এ্যাজি উইলসন ১ মিনিট ৫৬.৬৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে ব্রোঞ্জ জয় করেন। মেয়েদের দূরপাল্লার দৌড়ে সবার চোখ ছিল শেষদিনে ৫০০০ মিটারের লড়াইয়ের দিকে। মৌসুমের প্রথম রেসে নেমেই ১০০০০ মিটারে স্বর্ণপদক জিতে যান ইথিওপিয়ার আলমাজ আয়ানা। তার ডাবল জয়ের একটি সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে হতাশ করেছেন কেনিয়ার ওবিরি। গত আসরের চ্যাম্পিয়ন আয়ানাকে পেছনে ফেলেছেন এ ২৭ বছর বয়সী দৌড়বিদ বিধ্বংসী গতি দেখিয়ে। অলিম্পিক রৌপ্যজয়ী ওবিরি সময় নেন ১৪ মিনিট ৩৪.৮৬ সেকেন্ড। আয়ানা রৌপ্য জেতেন ১৪ মিনিট ৪০.৩৫ সেকেন্ড টাইমিংয়ে। আর ব্রোঞ্জ গেছে হল্যান্ডের সিফান হাসানের দখলে। তিনি সময় নেন ১৪ মিনিট ৪২.৭৩ সেকেন্ড। চাকতি নিক্ষেপে দুইবারের অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন ক্রোয়েশিয়ার সান্দ্রা পারকোভিচ ৭০.৩১ মিটার দূরত্ব ছুড়ে স্বর্ণপদক জয় করেন। ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার ডানি স্টিভেন্স ৬৯.৬৪ মিটার ছুড়ে ওশেনিয়া অঞ্চলের রেকর্ড ভেঙ্গে ফেললেও রৌপ্য জিততে পেরেছেন। আর গত অলিম্পিকে রৌপ্য জেতা ফ্রান্সের মেলিনা রবার্ট-মিকন ৬৬.২১ মিটার পেরিয়ে ব্রোঞ্জ লাভ করেছেন। পুরুষদের হাই জাম্পে ফেবারিটের কাতারের বারশিম নিজের সেরা ২.৩৫ মিটার উঁচুতে লাফিয়ে স্বর্ণ আর রাশিয়ার দানিল লিসেঙ্কো রৌপ্য এবং সিরিয়ার মাজিদ এদ্দিন গজল ব্রোঞ্জ জিতেছেন। প্রতিযোগিতায় স্বাগতিক ব্রিটেন ৬ নম্বরে থেকে শেষ করেছে ২ স্বর্ণ, ৩ রৌপ্য ও ১ ব্রোঞ্জসহ মাত্র ৬টি পদক জিতে।
×