ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকৃত কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারছেন না তদন্তকারীরা

প্রকাশিত: ০৭:৫২, ১৪ আগস্ট ২০১৭

প্রকৃত কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারছেন না তদন্তকারীরা

আজাদ সুলায়মান ॥ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তিনতলায় অগ্নিদুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হতে পারছে না তদন্তকারীরা। ইতোমধ্যে তারা অগ্নি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে আগুন লাগার ঘটনা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেয়েছেন। প্রাথমিকভাবে দুটি সম্ভাব্য কারণ সামনে রেখে তদন্তকারীরা বার বার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ইলেকট্রিক শর্ট সার্কিট ও সিগারেটের আগুন থেকেই শুত্রুবার এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছেন তদন্ত কমিটি। রবিবার দুপুরে সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এহসানুল গণি চৌধুরী মঙ্গোলিয়ায় একটি সরকারী সফর শেষে বিমানবন্দরে অবতরণ করেই ছুটে যান ঘটনাস্থলে। ওই রুমে ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়েই সিভিল এভিয়েশনের উর্ধতন কর্মকর্তারা তাকে সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন। এ সময় তিনি দ্রুত তদন্ত কাজ শেষ করাসহ অন্যান্য সংস্কার কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। ওই সময় কর্মচারীদের পোড়া স্তূপের উটকো গন্ধের মধ্যেই ইলেকট্রিক ক্যাবল সংযোগের কাজ করতে দেখা যায়। আগুন লাগার বিষয়ে বিমানবন্দরে ওই ফ্লোরে কর্মরত একটি বিদেশী এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে জানান, আপাতত দুটি বিষয়কেই সন্দেহের শীর্ষে রাখা হয়েছে। একটি হচ্ছে ইলেকট্রিক ক্যাবলের মাধ্যমে শর্ট সার্কিট, অপরটি সিগারেটের আগুন। ইলেকট্রিক শর্ট সার্কিটের সম্ভাবনাই এ জন্য বেশি যে, শাহজালালের প্রতিটি তলার সিলিং পয়েন্টে রয়েছে হাজার হাজার ইঁদুরের উৎপাত। অফিসে বসেই ইঁদুরের উৎপাত চোখে পড়ে। ইঁদুর যদি পাশাপাশি দুটি ইলেকট্রিক ক্যাবলের কভার কেটে ফেলে, তাতে শর্ট সার্কিট অনিবার্য। দ্বিতীয়ত, ওই অফিস তখন বন্ধ থাকলে সেদিন বেলা এগারটা পর্যন্ত সেখানে লোকজন ছিল। তাদের কেউ কোন সিগারেট খেয়ে ভালভাবে না নিভিয়ে, যদি বাটন ফেলে রেখে যায় সে ক্ষেত্রে কাগজের মাধ্যমে ঘটে যেতে পারে আগুনের সূত্রপাত। ঘটনাস্থলের পাশের একটি অফিসের একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বিমানবন্দরের প্রতিটি তলার ওপরের সিলিংয়ে রয়েছে হাজার হাজার ইলেকট্রিক ক্যাবলের সংযোগ। এসবই দাহ্য পদার্থ হিসেবে বিবেচিত। আগুন যদি এয়ার ইন্ডিয়ার অফিসের সিলিং পর্যন্ত পৌঁছে যেতÑ তাহলে ওই ক্যাবলের মাধ্যমে তা কয়েক সেকেন্ডেই গোটা বিমানবন্দরে ছড়িয়ে পড়ত। পরিণামে গোটা বিমানবন্দরই ভস্মীভূত হয়ে যেত। তিনি জানান, আগুন নেভানোর পর ভেতরে গিয়ে যা চোখে পড়েছে তা শিউরে ওঠার মতো। আগুন সিলিংয়ের খুব কাছাকাছি এয়ার পৌঁছার মুুহূর্তেই সেটা আয়ত্তে আনা হয়। এদিকে তদন্ত কমিটির প্রধান (পরিচালক প্রশাসন) সাইফুল ইসলামের কাছে অগ্নিদুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করা শেষ হয়নি। এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গেও তথ্য আদানপ্রদান করা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর বেলা দেড়টার দিকে বিমানবন্দরের মূল ভবনের তৃতীয়তলায় এয়ার ইন্ডিয়ার কার্যালয়ে আগুন লাগে।
×