ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বকেয়া বেতন দাবিতে গাজীপুরে পোশাক শ্রমিক অসন্তোষ

ভাংচুর, সড়ক অবরোধ

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১৪ আগস্ট ২০১৭

ভাংচুর, সড়ক অবরোধ

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ শ্রীপুরে বকেয়া বেতনভাতা পরিশোধের দাবিতে দুটি কারখানার শ্রমিকরা রবিবার কর্মবিরতি, বিক্ষোভ, অবস্থান ধর্মঘট ও সড়ক অবরোধ করেছে। এ সময় তারা কারখানায় হামলা চালিয়ে ভাংচুরও করেছে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের কয়েকদফা ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ও শটগানের গুলি ছুড়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় পুলিশ ও এক মাদ্রাসার কয়েক ছাত্রসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছে। শ্রমিক অসন্তোষের মুখে কর্তৃপক্ষ কাল মঙ্গলবার পর্যন্ত কারখানা ছুটি এবং বুধবার শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের ঘোষণা দিয়েছে। আন্দোলনরত শ্রমিক, এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ এলাকার ইউনিয়ন গার্মেন্টস্ ও ইউনিয়ন নিটওয়্যার নামের কারখানার শ্রমিকরা বেশ কিছুদিন ধরে তাদের দুই মাসের বকেয়া বেতনসহ পাওনা ভাতাদি পরিশোধের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ একাধিকবার তারিখ নির্ধারণ করে শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের ঘোষণা দিলেও তা পরিশোধ করেনি। এতে শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে রবিবার সকালে কাজে যোগ দিতে এসে শ্রমিকরা কারখানা এলাকায় জড়ো হয়। এ সময় তারা বকেয়া বেতনসহ তাদের পাওনাদি পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ, কর্মবিরতি ও কারখানার সামনে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করে। গাজীপুর শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর সেলিম রেজা জানান, এতে কর্তৃপক্ষের সাড়া না পেয়ে আন্দোলনরত শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। পরে তারা কারখানা থেকে বের হয়ে পার্শ্ববর্তী এমসি বাজার-শিশু পল্লী সড়কে অবস্থান নিয়ে ওই সড়ক অবরোধ করে কয়েকটি রিক্সা ভাংচুর করে।এ সময় কিছু উত্তেজিত শ্রমিক লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল নিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দিকে রওনা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আন্দোলনরত শ্রমিকদের বাধা দিলে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এতে শ্রমিক ও পুলিশের মাঝে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। শ্রমিকদের ছোড়া ইটের আঘাতে পুলিশের এক কনস্টেবল আহত হয়। একপর্যায়ে পুলিশ ফাঁকা ৫-৬ রাউন্ড শটগানের গুলি ও ৩-৪ রাউন্ড টিয়ারশেল ছুড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দুপুরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কারখানার সুইং অপারেটর লুৎফুন্নাহার ও আবু তাহের জানায়, গত ঈদুল ফিতরের সময়েও বেতন বোনাস পরিশোধের দাবিতে শ্রমিকরা আন্দোলন করে। আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ঈদের দুদিন আগে বেতন পরিশোধ করা হলেও শ্রমিকদের ঈদ বোনাস দেয়নি। শ্রমিকরা ঈদুল ফিতরের পর কাজে যোগ দেয়। কিন্তু প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হলেও শ্রমিকদের বেতনভাতাদি পরিশোধ করছে না কর্তৃপক্ষ। এমন অবস্থায় শ্রমিকরা বাড়িভাড়া ও দোকান বাকি পরিশোধ করতে পারছে না। এ ব্যাপারে কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) বজলুল রশিদ বলেন, শিপমেন্ট ও ব্যাংকিং জটিলতার কারণে কারখানাটি আর্থিক সঙ্কটে পড়েছে। আর এ কারণে শ্রমিক কর্মচারীদের বেতনভাতাদি নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ করা হয়নি। আগামী ১৬ আগস্ট শ্রমিক কর্মচারীদের পাওনাদি পরিশোধ করা হবে এবং ১৫ আগস্ট পর্যন্ত কারখানা ছুটি ঘোষণা করে নোটিস টানানো হয়েছে।
×