নিজস্ব সংবাদদাতা, বান্দরবান, ১৩ আগস্ট ॥ আলীকদমে অবাধে পাথর উত্তোলনের ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। উপজেলার বিভিন্ন ঝিরি, খাল ও পাহাড় থেকে অবৈধভাবে জেলার আলীকদম এবং কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার পাথর ব্যবসায়ীরা পাথর উত্তোলন করলেও প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ না থাকায় বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ পাথর উত্তোলন।
জানা গেছে, সম্প্রতি আলীকদম-থানচি সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৪৬ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করে নিলামে বিক্রি করে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নায়েরুজ্জামান। ৪৬ হাজার ঘনফুট পাথর নিলাম পান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন। বাঘের ঝিরি এলাকায় আরও ৩ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়। এসব নিলামের কাগজ দেখিয়ে দশগুণ বেশি পাথর পাচার করছে সিন্ডিকেটটি। জানা গেছে, জেলার আলীকদম-থানচি সড়ক নির্মাণ কাজে ব্যবহারের অজুহাতে কয়েক ব্যক্তি সড়কটির আশপাশের ঝিরি, পাহাড় ও ঝর্ণা খুঁড়ে হাজার হাজার ঘনফুট পাথর উত্তোলন করে স্তূপ গড়ে তোলে। সে সময় পাথর দস্যুতার সঙ্গে জড়িত ছিলেন উপজেলার হেলাল সওদাগর, চকরিয়ার কলিম উদ্দিন ও হুমায়ুনসহ কয়েক ব্যক্তি। অপরদিকে উপজেলার বাঘেরঝিরি এলাকায় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে জড়িত জাহিদ, কবির, মাহাবুব, সুজিত ও মহিউদ্দিন। লামা বন বিভাগের মাতামুহুরী রিজার্ভের তুলাতলী, বুজি ও ধুমচি খাল এলাকা থেকে নির্বিচারে পাথর তুলছে স্থানীয় ও বহিরাগত কতিপয় ব্যক্তি। আলীকদম উপজেলার পানবাজার এলাকার উদয় মনি তংচঙ্গ্যা বলেন, অবৈধভাবে পাথর আহরণে যারা জড়িত ছিলেন ঘুরে ফিরে তাদেরই নিলাম দেয়া হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পাথর জব্দ করলেও অবৈধ কারবারে জড়িতদের বিরুদ্ধে নেয়া হয়নি আইনী ব্যবস্থা। তাই দিন দিন অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন বেড়েই চলেছে। বিদ্যুত জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পাদ বিভাগ থেকে জারিকৃত খনি ও খনিজ সম্পদ বিধিমালা-২০১২ এর ৯৫ বিধি অনুসারে খাল, ঝিরি ও নদীতে ভাসমান পাথর ব্যতিত মাটি খুঁড়ে ও পাহাড় কর্তন করে পাথর উত্তোলন করা যাবে না শর্ত আরোপ করে পাথর আহরণের অনুমতি প্রদান করা হলেও তা মানছে না স্থানীয় পাথর ব্যবসায়ীরা।
কুরুকপাতা ইউপি চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রো বলেন, মাতামুহুরী রিজার্ভ এলাকা থেকে কতিপয় ব্যক্তি পাথর আহরণের ফলে পরিবেশে ভারসাম্য নষ্ট হবার পাশাপাশি মাটি খুঁড়ে পাথর আহরণের ফলে স্থানীয়রা পানি সংকটে ভুগবেন।
এ ব্যাপারে আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পাথর জব্দের পাশাপাশি জড়িতদের জরিমানা করছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: