ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৯৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প গ্রহণ

রফতানি বহুমুখীকরণের উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ১৪ আগস্ট ২০১৭

রফতানি বহুমুখীকরণের উদ্যোগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পণ্য ও বাজার বহুমুখীকরণের মাধ্যমে রফতানি সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ‘এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস্’ শীর্ষক একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এর আওতায় চামড়া ও চামড়াজাত এবং পাদুকা, হাল্কা প্রকৌশল (ইলেক্ট্রনিক্স ও মেশিনারি) এবং প্লাস্টিক খাতের রফতানিপণ্যের গুণগতমান উন্নয়ন ও মার্কেট ব্র্যান্ডিংয়ের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) গত বুধবার ৯৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রফতানি) আব্দুর রউফ বলেন, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্য হচ্ছে রফতানি লিড গ্রোথের মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাস করা। এ লক্ষ্য অর্জনে রফতানি বহুমুখীকরণকে কৌশল হিসেবে নিয়েছে সরকার। তাই পণ্য ও মার্কেট বহুমুখীকরণকে গুরুত্ব দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, রফতানিপণ্যের প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে যেসব সমস্যা রয়েছে তা দূরীকরণ করাই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। একনেক সভায় উপস্থাপিত প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, রফতানি তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বিগত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মোট রফতানি আয়ের ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ এসেছে ছয়টি পণ্য থেকে। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাত থেকে এসেছে ৮২ শতাংশ। অন্যদিকে রফতানিপণ্যের ৫৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ ইউরোপীয় বাজারে এবং ২২ দশমিক ৭১ শতাংশ গেছে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। এতে বোঝা যায়, বাংলাদেশের রফতানি বাজার সীমিত পণ্য ও সীমিত বাজার এলাকায় সীমাবদ্ধ। আন্তর্জাতিক বাজারে যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা রফতানি বাজারকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই রফতানিপণ্যের প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে যেসব সমস্যা রয়েছে তা দূরীকরণে প্রকল্প গ্রহণ করার প্রয়োজন রয়েছে। আব্দুর রউফ জানান, ঢাকার সাভার, মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান, গাজীপুর সদর উপজেলা এবং চট্টগ্রামের মীরসরাই-এ চার এলাকায় প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। এখানে প্রযুক্তি সেন্টার ও কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন, রিসাইক্লিং সুবিধা ও ক্লাস্টার শিল্পের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জুলাই ২০১৭ থেকে জুন ২০২৩ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের সংক্ষিপ্ত বর্ণনায় উল্লেখ করা হয়, তিনটি ভাগে ভাগ করে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে, যেমন- সরকারী বিনিয়োগ সুবিধার আওতায় চামড়া ও চামড়াজাত এবং পাদুকা, হাল্কা প্রকৌশল ও প্লাস্টিক এ তিন খাতের জন্য রিসাইক্লিং সুবিধা ও বিশেষ সাধারণ প্রযুক্তি সেন্টার স্থাপন, কোল্ড স্টোরেজ এবং প্রযুক্তি সেন্টার ও শিল্প ক্লাস্টারের মধ্যে যাতায়াত অবকাঠামো সুবিধার উন্নয়ন করা হবে। এছাড়া বাজার প্রবেশাধিকার সহযোগিতা কর্মসূচীর আওতায় সেক্টরভিত্তিক কারিগরি প্রশিক্ষণ, ইএসকিউ রেফারেন্স গাইড বুক প্রণয়ন, কর্মশালা, শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও বিপিসির ক্যাপাসিটি বিল্ডিং, ইএসকিউ কমপ্লায়েন্স এ্যাসেসমেন্ট, রফতানি বাজার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, মার্কেট ইন্টেলিজেন্স এবং মার্কেট ব্র্যান্ডিংসংক্রান্ত কাজ করা হবে। উৎপাদনশীলতা সম্প্রসারণ কর্মসূচীর আওতায় এ তিন খাতের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও প্রযুক্তি উন্নয়নে চারটি প্রযুক্তি সেন্টার নির্মাণ করা হবে। সেন্টারগুলোতে টুলস, ডাইস, টেস্টিং, সার্টিফিকেশন ইত্যাদি সুবিধা থাকবে।
×