ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

গোয়েন্দা মহাপরিচালকদের সঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যানের সভা

কর ফাঁকি রোধে ৮ দফা নির্দেশনা

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ১৪ আগস্ট ২০১৭

কর ফাঁকি রোধে ৮ দফা নির্দেশনা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আয়কর, শুল্ক ও ভ্যাট ফাঁকি ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা মহাপরিচালকদের আট দফা নির্দেশনা দিয়েছেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান। রবিবার দুপুরে আয়কর, শুল্ক ও ভ্যাট ফাঁকির তদন্ত পরিচালনা এবং এ সংক্রান্ত কার্যক্রমকে আরও গতিশীল ও কার্যকর করার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি। সভায় গোয়েন্দা মহাপরিচালকরা তাদের নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের আওতাধীন রাজস্ব ফাঁকির তদন্ত কার্যক্রমের ওপর আলোকপাত করেন। এছাড়া মাঠপর্যায়ে গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা, চ্যালেঞ্জ ও অন্যান্য বিষয়ের ওপর বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হয়। পর্যালোচনা শেষে এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান রাজস্ব ফাঁকির বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দার মহাপরিচালকদের বিশেষ মনোযোগী হতে আট দফা নির্দেশনা প্রদান করেন। নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে অর্থ পাচার রোধে সরকারের সব পক্ষের সঙ্গে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ রক্ষা করে মাঠপর্যায়ে নজরদারি বাড়িয়ে অর্থপাচারকারীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এছাড়া দেশের স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরগুলোকে সূচারু ও তীক্ষè নজরদারির আওতায় আনা, দেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ প্রাণকেন্দ্র বন্দরগুলো যাতে কোনভাবেই চোরাকারবারিদের বিচরণক্ষেত্র না হতে পারে তা নিশ্চিত করা, ভ্যাট ফাঁকি রোধ করে পণ্যের প্রকৃত উৎপাদন ও তার থেকে নির্দিষ্ট হারে ভ্যাট আদায় নিশ্চিত করতে ভ্যাট গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করা। নির্দেশনার মধ্যে আরও রয়েছেÑ আয়কর, ভ্যাট ও শুল্কবাবদ সরকারের প্রাপ্য রাজস্ব আহরণের পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সরকারী কোষাগারে জমা নিশ্চিত করা; আয়কর, শুল্ক ও ভ্যাট ফাঁকিবাজদের বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অভিযোগ দ্রুত তদন্ত ও পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা; কর ফাঁকিবাজ অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার পাশাপাশি সৎ ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং রাজস্ব ফাঁকি রোধে মাঠপর্যায়ে যে কোন অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি), শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর এবং ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের সমন্বিতভাবে কাজ করা। প্রয়োজনে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা। এসব বিষয়ে সিনিয়র সচিব নজিবুর রহমান বলেন, রাজস্ব আহরণে অধিকতর গতিশীলতা আনয়ন এবং করদাতাবান্ধব পরিবেশ সৃজনের জন্য অনুসৃত ‘সুশাসন ও আধুনিক ব্যবস্থাপনা’ কাঠামোর আওতায় এনবিআর রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে ‘দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন’ নীতি অনুসরণ করছে। করদাতাদের প্রদত্ত রাজস্বই সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের প্রধান চালিকাশক্তি। একটি করবান্ধব, জনবান্ধব ও ব্যবসাবান্ধব তথা উন্নয়নবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখার ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও সম্মানিত করদাতারা একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে। তিনি বলেন, যথাযথ রাজস্ব পরিশোধ ও তা জনগণের পক্ষে সুষ্ঠুভাবে আদায় করা যথাক্রমে করদাতা প্রতিষ্ঠান ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অন্যতম দায়িত্ব। জনকল্যাণে রাজস্ব আহরণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সঠিক হারে রাজস্ব প্রদানকারী ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ প্রণোদনা এবং করখেলাপীদের বিরুদ্ধে কঠোর নীতি অনুসরণ করছে। সভায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলের (সিআইসি) মহাপরিচালক মোঃ বেলাল উদ্দিন, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এবং ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. আল-আমিন প্রামাণিক উপস্থিত ছিলেন।
×