ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা

পুঁজিবাজারে লেনদেন কমেছে ৮ শতাংশ

প্রকাশিত: ০৩:৩৩, ১৩ আগস্ট ২০১৭

পুঁজিবাজারে লেনদেন কমেছে ৮ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সমাপ্ত সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সব ধরনের মূল্যসূচক বাড়লেও কমেছে লেনদেন। আলোচ্য সপ্তাহে লেনদেন কমার পরিমাণ ছিল ৮ দশমিক ৩১ শতাংশ। প্রকৌশল খাতের নতুন কোম্পানি বিবিএস কেবল তালিকাভুক্তির পর থেকেই নতুন কোম্পানিগুলোর দর ও লেনদেন বাড়তে থাকে। এর বিপরীতে গত সপ্তাহে জেড ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোর দর হারিয়েছ। শুধু তাই নয় সাপ্তাহিক দর হারানোর শীর্ষে একমাত্র ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স ছাড়া বাকি নয়টিই জেড ক্যাটাগরির। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, গত কিছুদিন ধরে অব্যাহতভাবে জেড ক্যাটাগরির বা দুর্বল কোম্পানির দর বাড়ছিল। কিন্তু বিবিএস কেবলের তালিকাভুক্তির পর সবার নজর কোম্পানিটির দিকে চলে যায়। ফলে ভাল মন্দ সব ধরনের কোম্পানিরই দর হারায়। তবে ব্যাংক খাতের দর বাড়ার কারণে সূচকের নেতিবাচক প্রবণতা পড়েনি। উল্টো সূচকটি বেড়েছে। অন্যদিকে বিডি ল্যাম্পের লভ্যাংশ ঘোষণার পর কোম্পানিটির দর বাড়ছে অস্বাভাবিকভাবে। ফলে স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর চমক ছিল গত সপ্তাহে। তবে পরিশেষে বৃহস্পতিবারে নতুন কোম্পানিটির দর হারায়। একইসঙ্গে দর বাড়তে থাকা স্বল্প মূলধনী কোম্পানিরও চাহিদা কমে যায়। এটি বাজারের স্বাভাবিক আচরণই মানছেন সবাই। তাদের মতে, আগামীতে লভ্যাংশ ঘোষণার সময় ঘনিয়ে আসায় জুন ক্লোজিং কোম্পানিকে ঘিরে চাহিদা যেমন বাড়বে, ঠিক তেমনই প্রত্যাশার সঙ্গে না মিললে দরও হারাবে অস্বাভাবিকভাবে। জানা গেছে, গত সপ্তাহে লেনদেন হয় ৪ হাজার ৮৭৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকার শেয়ার। যা এর আগের সপ্তাহে ছিল ৫ হাজার ৩২১ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার। সেই হিসাবে গত সপ্তাহে লেনদেন কমেছে ৪৪২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা বা ৮.৩১ শতাংশ। সমাপ্ত সপ্তাহে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ। ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ৩ দশমিক ২০ শতাংশ। ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ‘জেড’ ক্যাটাগরির লেনদেন হয়েছে ১ দশমিক ৩১ শতাংশ। ডিএসইর সার্বিক সূচক বা ডিএসইএক্স সূচক বেড়েছে দশমিক ৩৬ শতাংশ বা ২১.৩৬ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই৩০ সূচক বেড়েছে দশমিক ১২ শতাংশ বা ২.৬০ পয়েন্ট। অপরদিকে শরীয়াহ বা ডিএসইএস সূচক বেড়েছে দশমিক ২২ শতাংশ বা ২.৯১ পয়েন্টে। গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) বেড়েছে। আলোচ্য সপ্তাহে আগের সপ্তাহের চেয়ে পিই রেশিও বেড়েছে দশমিক ০৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৫০ শতাংশ। ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইতে পিই রেশিও অবস্থান করছে ১৬ দশমিক ২৩ পয়েন্টে। এর আগের সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ১৬ দশমিক ১৫ পয়েন্ট। বিশ্লেষকদের মতে, পিই রেশিও যতদিন ১৫ এর ঘরে থাকে ততদিন বিনিয়োগ নিরাপদ থাকে। সপ্তাহ শেষে খাতভিত্তিক ট্রেইলিং পিই রেশিও বিশ্লেষণে দেখা যায়, ব্যাংক খাতের পিই রেশিও অবস্থান করছে ৯.৮ পয়েন্টে, সিমেন্ট খাতের ২৮.৮ পয়েন্টে, সিরামিক খাতের ২৪. ৪ পয়েন্টে, প্রকৌশল খাতের ২৪.৬ পয়েন্টে, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২৮ পয়েন্টে, জ্বালানি ও বিদ্যুত খাতে ১৩.২ পয়েন্টে, সাধারণ বীমা খাতে ১৩.১ পয়েন্টে, তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে ২৭.৫ পয়েন্টে। এছাড়া পাট খাতের পিই রেশিও মাইনাস ২৪.৩ পয়েন্টে, বিবিধ খাতের ২৯.৯ পয়েন্টে, এনবিএফআই খাতে ২০.৫ পয়েন্ট, কাগজ খাতের মাইনাস ৪৪.১ পয়েন্টে, ওষুধ ও রসায়ন খাতের ১৯.২ পয়েন্টে, সেবা ও আবাসন খাতের ১৭.৭ পয়েন্টে, চামড়া খাতের ১৮.৪ পয়েন্টে, টেলিযোগাযোগ খাতে ১৬.৫ পয়েন্টে, বস্ত্র খাতের পয়েন্টে এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ২৮.৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩৩৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১২৯টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ১৮৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টির। আর লেনদেন হয়নি ১টি কোম্পানির শেয়ার। ডিএসইর লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : সিএ্যান্ড এ টেক্সটাইল, বিবিএস কেবল, আইএফআইসি ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ইফাদ অটো, লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন, ফু-ওয়াং ফুড ও ফরচুন সুজ। দরবৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো : বিবিএস কেবল, রূপালী ব্যাংক, মুন্নু স্টাফলার, উত্তরা ফাইন্যান্স, প্রাইম ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স, নর্দার্ন জুট, এমবে ফার্মা, ব্যাংক এশিয়া ও বিডি ল্যাম্প। দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো : আইএসএন, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স, খুলনা প্রিন্টিং এ্যান্ড প্যাকেজিং, শ্যামপুর সুগার, বিডি ওয়েল্ডিং, মেঘনা পেট, সাভার রিফ্যাক্টরিজ, ঝিল বাংলা সুগার ও দুলা মিয়া কটন।
×